আমি অনেক মেধাবী নই, তবে পরিশ্রমী

আমি অবাক হয়ে গেছি পরী, তায়েব ভাই ও ইমনের অভিনয় দেখে। সত্যি বলতে, আমার চোখেও জল ছিল। শুধু মনে হয়েছে, এতটা তো আমি নিজেই আশা করিনি! অনেকেই বলেছেন, ছবিটি তাঁদের ভালো লেগেছে

‘কাগজের বউ’-এর গল্প কী নিয়ে?

স্বামী-স্ত্রী ও বাবা-মেয়ের গল্প। এখানে আছে ভালোবাসা, মান-অভিমান ও সম্পর্কের টানাপড়েন।

দর্শকদের ছবিটি ভালো লাগবে। পরীমনির জীবনে আমার দেখা সেরা অভিনয় করেছে এখানে। ডি এ তায়েব ভাইকেও আগে কেউ এমন চরিত্রে অভিনয় করতে দেখেনি। ইমনও তার জায়গায় দুর্দান্ত।

রোমান্টিক নাটক ও ছবি নির্মাণ করা সব সময়ই কঠিন। আর আমি সেই কঠিন কাজটি করতেই আনন্দ পাই। এবারও তাই করেছি।

ছবির প্রযোজক ও অভিনেতা ডি এ তায়েবের সঙ্গে আপনার মনোমালিন্যের কথা শোনা গিয়েছিল, সেটা কি এখন মিটেছে?

আমরা সবাই একটা পরিবার।

পরিবারে মা-বাবা, ভাই-বোনদের যেমন মান-অভিমান হয়, তেমনি আমাদেরও হয়েছিল। আসলে গত বছর ঈদে হঠাৎ করে তায়েব ভাই যখন ‘কাগজের বউ’ মুক্তির কথা জানালেন, তখন কষ্ট পেয়েছিলাম। কারণ আমার পরিচালনায় তখন ‘প্রহেলিকা’ মুক্তি পাবে। আমি চাইনি এক ঈদে আমার দুটি ছবি মুক্তি পাক। পরে তিনি সিদ্ধান্ত থেকে সরে এলে আমাদের সম্পর্ক শীতল হয়।

এখন ‘কাগজের বউ’ মুক্তি পাচ্ছে। আমি তো প্রচার-প্রচারণায় নিয়মিত অংশ নিচ্ছি। অভিমান পুষে রাখার মানুষ আমি নই। একটাই তো জীবন, সবার সঙ্গে মিলেমিশে জীবনটা পার করতে চাই।

ছবিটির প্রিমিয়ার হলো কয়েক দিন আগে। সেদিনের দর্শকের অভিব্যক্তি দেখে কী মনে হচ্ছে, দর্শক পছন্দ করবে এই ছবি?

প্রিমিয়ারে হলভর্তি মানুষ ছিলেন। ছবি চলাকালে একজনও ‘সাইড টক’ করেননি। একদম শেষে অনেকের চোখে জল দেখেছি। আমি অবাক হয়ে গেছি পরী, তায়েব ভাই ও ইমনের অভিনয় দেখে। সত্যি বলতে, আমার চোখেও জল ছিল। শুধু মনে হয়েছে, এতটা তো আমি নিজেই আশা করিনি! অনেকেই বলেছেন, ছবিটি তাঁদের ভালো লেগেছে। গল্প, দৃশ্যায়ন, সম্পাদনা, গান, ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক, কালার—সব মিলিয়ে যে কারোরই ভালো লাগবে এই ছবি।

একই দিন তো ‘শেষ বাজি’ ও পশ্চিমঙ্গের ‘হুব্বা’ মুক্তি পাচ্ছে। এতে কি আপনার ছবিটি ব্যাবসায়িক ঝুঁকিতে পড়বে বলে মনে করছেন?

সব সময় জেনে এসেছি, উৎসব ছাড়া একই দিনে দুটি দেশি ছবির বেশি মুক্তি পেতে পারবে না। ‘কাগজের বউ’ ও ‘শেষ বাজি’ অনেক আগেই ১৯ জানুয়ারি মুক্তির জন্য অনুমতি নিয়েছিল প্রযোজক সমিতি থেকে। সেখানে বিদেশি ছবি ‘হুব্বা’ কী করে মুক্তি পেতে পারে? আমি এখনো বিশ্বাস করি, চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্ট নেতারা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখবেন। 

শাবনূরকে নিয়ে ‘মাতাল হাওয়া’ করার ঘোষণা দিয়েছেন। কত দূর এগিয়েছেন? কবে নাগাদ ছবিটির শুটিং শুরু হবে?

আমাদের পাণ্ডুলিপি এবং অন্যান্য প্রি-প্রডাকশন গোছানোই আছে। চাইলে আগামী সপ্তাহ থেকে শুটিং করতে পারি। তবে সেটা না করে সময় নিচ্ছি। শাবনূর আমাদের দেশের সম্পদ। এত দিন পর তিনি পর্দায় ফিরবেন। অবশ্যই দর্শক তাঁর জন্য মুখিয়ে আনে। তবে আমি চাই, তিনি আরেকটু ফিট হয়ে ক্যামেরার সামনে আসুন, নিজেকে আরেকটু গুছিয়ে নিন। আমি অনেক মেধাবী নই, তবে পরিশ্রমী নির্মাতা। শুধু শুধু শাবনূরকে নিয়ে কাজ করে ভাইরাল হতে চাই না। বরং তাঁকে সুন্দর ও দৃষ্টিনন্দনভাবে দর্শকের সামনে হাজির করতে চাই।

‘সোলমেট’ নামে আরো একটা ছবি করার ঘোষণা দিয়েছিলেন…

এই ছবিটারও পাণ্ডুলিপির কাজ শেষ হয়েছে। লিখেছেন পান্থ শাহরিয়ার। রোমান্টিক একটা গল্প। ‘মাতাল হাওয়া’র পরপরই ছবিটার শুটিং শুরু করতে চাই।

 নাটকের ব্যস্ততা কি একেবারেই কমিয়ে এনেছেন?

না, না! কী বলেন? আজ [বৃহস্পতিবার] বছরের প্রথম নাটকের শুটিং করব। ‘চৈত্রের রোদ’ শিরোনামের নাটকটি লিখেছেন শফিকুর রহমান শান্তনু। অভিনয় করবেন আবুল হায়াৎ, শাশ্বত দত্ত ও আইশা খান। আমাকে মানুষ চিনেছে নাটক দিয়েই। এই মাধ্যম থেকে দূরে সরে যাওয়া আমার পক্ষে কখনোই সম্ভব নয়। হয়তো আগের মতো নিয়মিত করা হচ্ছে না, ছবি নিয়েই ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে। তবে একটু সময় বের করতে পারলেই নাটক করতে চাই।

নতুন ওয়েব ছবি বা ওয়েব সিরিজ করছেন না?

এর মধ্যে ওয়েব ছবি ‘চন্দ্রস্নানে এসো’র গল্প চূড়ান্ত করেছি। লিখেছেন রায়হান খান। সাত পর্বের একটা ওয়েব সিরিজও করব, নাম ‘ইশ…!’ শুটিংয়ের জন্য প্রস্তুত হচ্ছি। এটি লিখেছেন ফারিয়া হোসেন। এ বছরই ওয়েবের কাজ দুটি দর্শক দেখতে পারবে।

LEAVE A REPLY