ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার (ডিআইটিএফ) ২৮তম আসর বসছে রাজধানীর পূর্বাচলে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী এক্সিবিশন সেন্টারে (বিবিসিএফইসি)। দেশে পণ্য প্রদর্শনীর সবচেয়ে বড় এ আয়োজন শুরু হবে ২১ জানুয়ারি। উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মেলায় বঙ্গবন্ধুর জীবন ও আদর্শ, স্বাধীনতাসংগ্রাম, উন্নত শিল্প সমৃদ্ধ সোনার বাংলা নির্মাণে জাতির পিতার ভাবনা ঘিরে বঙ্গবন্ধু প্যাভিলিয়ন নির্মাণ করা হচ্ছে।
সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রম তুলে ধরে দেশের মেগাপ্রকল্পের ওপর প্রাধান্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু টানেল, রূপপুর পরমাণু কেন্দ্রের আদলে মেলার প্রধান ফটক তৈরি করা হয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যান এ এইচ এম আহসান বলেন, বাণিজ্য মেলা উদ্বোধনের দিনক্ষণ নির্ধারণ করা হয়েছে। ডিআইটিএফের ২৮তম আসর শুরু হবে ২১ জানুয়ারি। এবারের মেলায় দেশ-বিদেশের মোট ৩৩০টি স্টল, প্যাভিলিয়ন ও মিনিপ্যাভিলিয়ন থাকবে।
এর মধ্যে ১৮টি বিদেশি স্টল থাকবে। মেলায় ভারত, পাকিস্তান, ইরান, তুরস্ক, থাইল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশ থেকে ব্যবসায়ীরা অংশগ্রহণ করবেন। এ ছাড়া ৯ ক্যাটাগরিতে ৭২টি প্যাভিলিয়ন, ২৬০টি স্টল আর ৩০টি রেস্তোরাঁ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। গত বছর মেলায় এ-ক্যাটাগরির প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়নের ফ্লোরের ন্যূনতম ভাড়া ছিল ২০ লাখ টাকা।
এ বছর ন্যূনতম ভাড়া ধরা হয়েছে ২২ লাখ টাকা। সি-ক্যাটাগরির প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়নের ফ্লোরের ন্যূনতম ভাড়া ছিল ২০ লাখ টাকা, এ বছর ধরা হয়েছে ২১ লাখ টাকা। একইভাবে সাধারণ স্টলের ন্যূনতম ভাড়া তিন লাখ থেকে বাড়িয়ে তিন লাখ ৫০ হাজার টাকা করা হয়েছে। সংরক্ষিত স্টল চার লাখ ৫০ হাজার টাকা করা হয়েছে। আর ৪৭ শতাংশ বাড়িয়ে সংরক্ষিত মিনিপ্যাভিলিয়নের ন্যূনতম ভাড়া ১১ লাখ টাকা করা হয়েছে।
প্রায় একই হারে স্টল-প্যাভিলিয়নের জামানত বাড়ানো হয়েছে। যেখানে একেকটি প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়ন পেতে ২২ লাখ টাকা পর্যন্ত গুনতে হয়েছে উদ্যোক্তাদের। স্টল বরাদ্দ নিতে গুনতে হয়েছে চার লাখ টাকা থেকে সাড়ে চার লাখ টাকা। আর রেস্তোরাঁ বরাদ্দ নিতে গুনতে হয়েছে তিন লাখ ৩০ হাজার টাকা থেকে ১৭ লাখ টাকা পর্যন্ত, যা গতবারের চেয়ে এক লাখ টাকা বেশি। বুথপ্রতি এক লাখ ৩০ হাজার টাকা করে জমা দিয়ে মেলা প্রাঙ্গণে সাতটি বুথ বসানোর অনুমতি নিয়েছে কয়েকটি ব্যাংক। বিনোদনের জন্য মেলায় থাকবে একটি শিশু পার্ক, যেটির বরাদ্দ মিলেছে ১৭ লাখ টাকায়।
মেলায় গেট ইজারাদার আবদুল্লাহ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী রূপগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ছালাউদ্দিন ভূঁইয়া জানান, এ বছর মেলায় প্রবেশ টিকিট ইজারা ফি চার কোটি টাকা করা হয়েছে। প্রবেশ টিকিটের মূল্য বড়দের জন্য ৫০ টাকা আর শিশুদের জন্য ২৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা গত বছর ছিল বড়দের জন্য ৪০ টাকা আর শিশুদের জন্য ২০ টাকা।
বিআরটিসির ম্যানেজার অপারেশন কামরুজ্জামান জানান, মেলায় দর্শনার্থীদের আসা-যাওয়া নিশ্চিত করতে বিআরটিসি ৬৪টি শাটল বাস চালু করা হবে। এর মধ্যে কুড়িল বিশ্বরোড থেকে মেলা প্রাঙ্গণ পর্যন্ত ৪০টি বাস চালু থাকবে। ফার্মগেট থেকে মেলা প্রাঙ্গণ পর্যন্ত ২৪টি বিআরটিসি শাটল বাস চালু থাকবে। কুড়িল বিশ্বরোড থেকে মেলা প্রাঙ্গণ পর্যন্ত জনপ্রতি ভাড়া ৩৫ টাকা। ফার্মগেট থেকে মেলা প্রাঙ্গণ পর্যন্ত জনপ্রতি ভাড়া ৭০ টাকা। শুক্র-শনিবার সরকারি ছুটির দিনে ১৬১টি বিআরটিসি দ্বিতল বাস চালু থাকবে।
সরকারি ছুটিতে মেলায় দর্শনার্থী ও ক্রেতা বেশি হওয়ার বিষয়টি মাথায় রেখে এ দুই দিন ১৬১টি বিআরটিসি দ্বিতল বাস চালু রাখা হবে। রাজধানী ঢাকার দর্শনার্থীদের চলাচলের রাস্তা কুড়িল বিশ্বরোড ৩০০ ফিট শেখ হাসিনা সরণি সড়কটি যথেষ্ট ভালো অবস্থায় রয়েছে। সহজে ঢাকার দর্শনার্থী ক্রেতারা মেলায় আসতে পারবে। মিয়া ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের এমডি ইসাহাক মিয়া বলেন, গতবারের তুলনায় এ বছর মেলায় সব কিছু বাড়ানো হয়েছে।