ছবি : সংগৃহীত
ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় মার্কিন চাপ প্রত্যাখ্যান করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং সেটা প্রকাশ্যেই করেছেন তিনি। গাজায় প্রায় ২৫ হাজার মানুষের প্রাণ গেছে বলে জানিয়েছে হামাস-শাসিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। অবরুদ্ধ উপত্যকাটিতে ৮৫ ভাগ বাসিন্দা বাস্তুচ্যুত। আক্রমণে লাগাম টানার পাশাপাশি যুদ্ধের টেকসই সমাপ্তির জন্য অর্থপূর্ণ আলোচনায় যুক্ত হতে তীব্র চাপের মধ্যে রয়েছে ইসরায়েল।
তেল আবিবে বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) এক সংবাদ সম্মেলনে নেতানিয়াহু যুক্তরাষ্ট্রকে বলেছেন, ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিরোধী তিনি এবং গাজায় ‘সম্পূর্ণ বিজয় না হওয়া পর্যন্ত’ হামলা চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, হামাসকে ধ্বংস ও অবশিষ্ট ইসরায়েলি জিম্মিদের ফিরিয়ে আনতে আরো কয়েক মাস লাগতে পারে।
বৃহস্পতিবারের সংবাদ সম্মেলনে নেতানিয়াহু আরো বলেন, জর্দান নদীর পশ্চিমের সমস্ত ভূমির ওপর ইসরায়েলের নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ থাকতে হবে, যা ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের ভূখণ্ডকে অন্তর্ভুক্ত করবে। তিনি বলেন, ‘এটি প্রয়োজনীয় একটি শর্ত এবং এটি (ফিলিস্তিনি) সার্বভৌমত্বের ধারণার সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
আমি আমেরিকান বন্ধুদের এ সত্যটি বলেছি এবং ইসরায়েলের নিরাপত্তার ক্ষতি করতে পারে এমন বাস্তবতা আমাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টাও বন্ধ করে দিয়েছি।’
যুক্তরাষ্ট্রসহ ইসরায়েলের মিত্রদের পাশাপাশি শত্রুরাও দুই রাষ্ট্র সমাধানের আহ্বান জানিয়ে আসছে, যার অর্থ হলো ইসরায়েলি রাষ্ট্রের পাশাপাশি ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রও থাকবে। যদিও ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্র গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘের প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছে। তবে তারা ইসরায়েলকে গাজায় আক্রমণের তীব্রতা কমানোর আহ্বান জানিয়েছে এবং বলেছে, যুদ্ধ শেষ হওয়ার পরের দিনই স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হওয়া উচিত।
নেতানিয়াহুর মন্তব্যের পর যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন কিরবি বলেছেন, যুদ্ধের পর গাজায় আবারও দখলদারি চলবে না। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
বর্তমান সংকট যুদ্ধরত পক্ষগুলো কূটনীতিতে ফিরে যেতে বাধ্য করতে পারে, সহিংসতার অবিরাম চক্রের একমাত্র কার্যকর বিকল্প হিসেবে। কিন্তু নেতানিয়াহুর মন্তব্য থেকে বোঝা যাচ্ছে, তাঁর উদ্দেশ্য একেবারে বিপরীত। নানা মহলে এমন আশা রয়েছে, বর্তমান সংকট যুদ্ধরত দুই পক্ষকে একমাত্র কার্যকর বিকল্প হিসেবে কূটনীতিক আলোচনায় ফিরে যেতে বাধ্য করতে পারে।
তবে নেতানিয়াহুর মন্তব্যে উঠে এলেও তার উদ্দেশ্য একেবারেই বিপরীত। নেতানিয়াহু তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের বেশির ভাগ সময় ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিরোধিতা করে কাটিয়ে দিয়েছেন।
সূত্র : বিবিসি