বাড়তে শুরু করেছে পণ্যের দাম

রোজা আসতে এখনো দেড় মাস বাকি। এর আগেই রাজশাহীর বাজারে বাড়তে শুরু করেছে নিত্যপণ্যের দাম। সরকারের হুঁশিয়ারির পরও কোনো পণ্যের দাম কমছে না। এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে বেড়েছে ডাল, ডিম ও সবজির দাম। চাল নিয়ে খাদ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারি ও দফায় দফায় মতমিবিময়ের পরও বাজারে কোনো প্রভাব পড়েনি। শনিবার মোটা চাল ৫৫ থেকে ৬০ টাকা এবং চিকন চাল ৭০ থেকে ৭২ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। দুসপ্তাহ আগেও মোটা চাল ৪৮ থেকে ৫০ টাকা এবং চিকন চাল ৬৫ থেকে ৬৮ টাকা বিক্রি হয়েছে।

নগরীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সবচেয়ে বেশি বেড়েছে মসুর ডালের দাম। ১০-১৫ দিনের ব্যবধানে কেজিপ্রতি ৩০-৪০ টাকা বেড়েছে। দেশি ডাল বিক্রি হচ্ছে সর্বনিু মূল্য কেজিপ্রতি ১৫০ টাকায়। এক মাস আগেও ছোলার ডাল প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ৭৫-৮০ টাকায়। এখন ১১০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অ্যাংকর ডাল বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ৭৫ টাকায়। এ ডাল দিয়ে মূলত বেসন তৈরি হয়। রোজার সময় বেগুনি তৈরিতে বেসন দরকারি পণ্য হয়ে ওঠে।

ক্রেতারা বলছেন, বাজারে খেজুর, ছোলা, ডাল, ভোজ্যতেল ও চিনির দাম আরেক দফা বাড়তে শুরু করেছে। যদিও এটা স্বাভাবিক বৃদ্ধি বলে দাবি করছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা। রোজা আসতে আসতে দাম আরও বাড়বে বলে জানান তারা।

দেখা গেছে, বোতলজাত ভোজ্যতেলের দাম গত সপ্তাহে প্রতি লিটারে তিন থেকে চার টাকা বাড়ানো হয়েছে। বাড়তি দামে প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকা এবং পাম তেল ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে যা গত সপ্তাহের তুলনায় কেজিতে পাঁচ টাকা বেশি।

সাহেব বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী আবদুস সালাম বলেন, কয়েকদিন থেকে ছোলা, মসুর, মুগ ডালের দাম পাইকারিতে বেড়েছে। একই সঙ্গে বাড়ছে ভোজ্যতেলের দাম। ব্যবসায়ী আব্দুল সালাম বলেন, আমাদের কিছু করার নেই। কোম্পানিগুলো প্রতিনিয়ত ভোজ্যতেলের দাম বাড়াচ্ছে।

রাজশাহীর বাজারে শনিবার প্রতি কেজি খোলা চিনি ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। ক্রেতারা বলছেন, চিনির দাম এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ। খেজুরের কেজিতে দাম বেড়েছে ১০ টাকা বা তার কিছু বেশি। আদা ও রসুন প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকা থেকে ২৩০ টাকায় যা গত সপ্তাহের চেয়ে ১০-১৫ টাকা বেশি। এ ছাড়া মুরগির লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ৪৬ টাকা হালি ও সাদা ডিম ৪৪ টাকা। হাঁসের ডিম ৭৫ টাকা হালি।

এদিকে বিপুল পরিমাণ নতুন আলু আমদানি হলেও দাম কমেনি। প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৬০ টাকা কেজি। শনিবার নতুন পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৮০ থেকে ৮৫ টাকা কেজিতে। ভরা মৌসুমেও একটি ফুলকপির দাম ৬০ টাকা ও বাঁধাকপি ৫৫ টাকা। বেগুন বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকায়। শসার কেজি ৬০ টাকা ও গাজর ১০০ টাকা। শিম বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকায়। মাঝারি আকারের লাউ ৬০ টাকা। করলা ১২০ থেকে ১৩০ টাকা ও টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি দরে। তবে রাজশাহীর বাজারে মাছের দাম আগের মতোই আছে। প্রতি কেজি পাঙাশ ৩০০ টাকা, সিলভারকার্প ২৫০ টাকা, বড় রুই ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু বেড়েছে মুরগির দাম। ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ১৯০ টাকা থেকে ২০০ টাকা কেজি দরে। সোনালি প্রতি কেজি ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৩১০ টাকা করে। এছাড়া দেশি মুরগি ৪৮০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা, সাদা লেয়ার ২৫০ টাকা, পাতিহাঁস ৪২০ টাকা, রাজহাঁস ৬০০ টাকা, লাল লেয়ার ৩০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। গরুর মাংস ৭৫০ টাকা এবং খাসির মাংস ১২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

LEAVE A REPLY