খুমেকের ওসিসির সামনে থেকে তরুণীকে অপহরণের অভিযোগ!

খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারের (ওসিসি) সামনে থেকে এক তরুণীকে রোববার প্রকাশ্যে অপহরণের অভিযোগ উঠেছে। সাংবাদিক, মানবাধিকারকর্মীসহ সাধারণ মানুষ বাধা দিলেও দুর্বৃত্তরা তাদের লাঞ্ছিত করে একটি মাইক্রোবাসে করে তরুণীকে উঠিয়ে নিয়ে যায়।

এ সময় উৎসুক জনতা ডুমুরিয়া উপজেলার রুদাঘরা ইউপি চেয়ারম্যান তৌহিদ গাজীকে অবরুদ্ধ করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন।

এর আগে শনিবার রাতে ডুমুরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য গাজী এজাজ আহমেদ ওই তরুণীকে ধর্ষণ করেছেন- এমন অভিযোগে ওসিসিতে ভর্তি হয়। রোববার বিকালে ওসিসি থেকে ছাড়পত্র নিয়ে অপেক্ষারত মা ও ভাইয়ের সামনে থেকে ২০-২৫ জন যুবক তাকে একটি সাদা রংয়ের মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে দ্রুত চলে যায়। এ সময় মাইক্রোবাসকে পাহারা দিয়ে নিয়ে যায় আরও একটি প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেলে থাকা যুবকরা। অবরুদ্ধ করা তৌহিদ গাজী ডুমুরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী এজাজ আহমদের চাচাতো ভাই বলে জানা গেছে। তবে তৌহিদ গাজী অপহরণ এবং লাঞ্ছিত করার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকাল ৫টার দিকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে পরীক্ষা শেষে ছাড়পত্র নিয়ে ভুক্তভোগী তরুণী ওসিসির সামনে অপেক্ষারত তার মা ও ভাইয়ের কাছে যাচ্ছিলেন। এ সময় ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করার অভিযোগ ওঠা ডুমুরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী এজাজ আহমদের চাচাতো ভাই রুদাঘরা ইউপি চেয়ারম্যান গাজী তৌহিদুজ্জামানের নেতৃত্বে ২০-২৫ জন যুবক প্রকাশ্যে তরুণীকে একটি মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে দ্রুত স্থান ত্যাগ করে। এ সময় যুবকদের হাতে কয়েকজন সাংবাদিক লাঞ্ছিত হন। তারা সবাই মাস্ক পরিহিত অবস্থায় ছিল। এক পর্যায়ে হাসপাতালের অভ্যন্তরে থাকা লোকজন রুদাঘরা ইউপি চেয়ারম্যান গাজী তৌহিদুজ্জামানকে আটক করেন। পরে তাকে দায়িত্বরত পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয়।

ওসিসির কো-অর্ডিনেটর ডা. সুমন রায় জানান, ভুক্তভোগী কিশোরীর শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর বিকাল ৫টার দিকে তার (ভুক্তভোগী কিশোরী) সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মা ও ভাইয়ের হেফাজতে দেওয়া হয়েছে। এর আগে ডুমুরিয়া থানার ওসি-তদন্ত মেয়েটির জবানবন্দি নিয়েছেন।

তিনি জানান, মেয়েটি জবানবন্দিতে বলেছে, সে থানায় মামলা করতে ইচ্ছুক নয়। সে থানার পরিবর্তে আদালতে মামলা করতে চায়। তার ধারণা থানায় মামলা করলে বিচার পাবে না বলে তার সন্দেহ রয়েছে। তাকে বলা হয়েছে, তার ভয়ের কোনো কারণ নেই। তার ডকুমেন্ট ওসিসিতে রয়েছে। এরপর সে তার ভাই ও মায়ের সঙ্গে চলে গেছে। তবে বাইরে যাওয়ার পর কী হয়েছে সেটা আমি বলতে পারব না।

ঘটনাস্থলে যাওয়া সোনাডাঙ্গা মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আমিনুল ইসলাম বলেন, যাদের বিরুদ্ধে আমরা অভিযোগ পেয়েছি তার একজন রুদাঘরা ইউপি চেয়ারম্যান গাজী তৌহিদুজ্জামানকে থানায় নিয়ে যাচ্ছি। এরপর তদন্তসাপেক্ষে বরতে পারব আসলে এখানে কী হয়েছে।

ভুক্তভোগী তরুণী বলেন, মধুগ্রাম কলেজে পড়ার সময় উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী এজাজ আহমেদের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তারপর বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তিনি শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন; কিন্তু পরে বিয়ের কথা বললে টালবাহানা শুরু করেন।

এ বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান এজাজ আহমেদের মোবাইল ফোনে বারবার ফোন দিলে তার ব্যবহৃত ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

LEAVE A REPLY