দেশে ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে দুর্নীতি। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের (টিআই) দুর্নীতির সূচকে বিশ্বে আরও ২ ধাপ পিছিয়েছে বাংলাদেশ। ১৮০ দেশের মধ্যে ২০২৩ সালে অধঃক্রম অনুযায়ী (খারাপ থেকে ভালো) বাংলাদেশের অবস্থান ১০তম। যা আগের বছর ছিল ১২তম। এছাড়াও দুর্নীতির পরিস্থিতি উন্নয়নসংক্রান্ত স্কোরেও পিছিয়েছে বাংলাদেশ। ১০০ নম্বরের মধ্যে এবার বাংলাদেশ ২৪ নম্বর পেয়েছে। গত বছর যা ছিল ২৫। সূচকের ঊর্ধ্বক্রম অনুযায়ী (ভালো থেকে খারাপ) ২ ধাপ পিছিয়েছে বাংলাদেশ। ১৪৭ থেকে এবার ১৪৯-এ নেমেছে। দুর্নীতি মূল্যায়নের তিনটি সূচক বলছে, বাংলাদেশে দুর্নীতি বেড়েছে।
জার্মানভিত্তিক দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা টিআইর ‘দুর্নীতির ধারণা সূচক (করাপশন পারসেপশন ইনডেক্স বা সিপিআই)-২০২৩ সালের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এসব তথ্য। সারা বিশ্বে মঙ্গলবার একযোগে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। এদিন বাংলাদেশে টিআইর সহযোগী প্রতিষ্ঠান টিআইবি নিজস্ব কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেখানে বক্তব্য রাখেন টিআইবির চেয়ারপারসন অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল ও নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন সংস্থাটির নির্বাহী ব্যবস্থাপনা উপদেষ্টা ড. সুমাইয়া খায়ের প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বাংলাদেশের এ অবস্থান এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চতুর্থ এবং দক্ষিণ এশিয়ায় দ্বিতীয়। এছাড়া বিশ্বে সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ সোমালিয়া এবং সবচেয়ে কম ডেনমার্ক। এ সময়ে সুলতানা কামাল বলেন, শাসকের কথা শুনলে মনে হয়, দেশ একটি যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে আছি। শাসকরা বলেন, ‘জনগণ আমাদের ব্যাপকভাবে ম্যান্ডেট দিয়েছে। কিন্তু জনগণকেই সবচেয়ে বেশি শত্রু মনে করে।’
তবে দুর্নীতি প্রতিরোধে বেশকিছু সুপারিশ করেছে টিআই। এগুলো হলো-দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণে রাজনৈতিক সদিচ্ছা, দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) আরও স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেওয়া এবং অবাধ গণমাধ্যম ও সক্রিয় নাগরিক সমাজ বিকাশে উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করা।
সুলতানা কামাল বলেন, বর্তমান শাসকরা দীর্ঘদিন থেকে ক্ষমতায় আছে। কিন্তু উনাদের কথা শুনলে মনে হয়, দেশটি একটি যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।
উনাদের কথায় মনে হয়, সবাই উনাদের সঙ্গে শত্রুতা ও ষড়যন্ত্র করছে। এই মানসিকতা নিয়ে উনারা কাজ করেন। একটা সমস্যার কথা তুলে ধরলে সেটাকে স্বীকৃতি দিয়ে সমাধানে কাজ করার মতো মানসিকতা তাদের নেই। দুঃখজনক হলেও সত্য, যারা গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত বলে নিজেদের দাবি করছেন, বলছেন বিরাট জনসমর্থন (ম্যান্ডেট) নিয়ে ক্ষমতায় গেছেন। জনগণ তাদের একেবারে সাংঘাতিকভাবে ক্ষমতায় বসিয়ে দিয়েছেন। কিন্তুু জনগণকেই তারা সবচেয়ে বেশি শত্রু মনে করে। আমাদের ধারণা, তারা ক্ষমতার উৎস জনগণের মধ্যে দেখেন না।
সংবাদ সম্মেলনে ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, দেশে দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে তাদের সুরক্ষা দেওয়া হয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তারা পুরস্কৃত হন। কোনো প্রতিবেদন প্রকাশ করলে নাগরিক সমাজ ও গণমাধ্যমকর্মীদের নাজেহাল হতে হয়। ফলে দুর্নীতিবাজরা এতে উৎসাহিত হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে আরও কয়েকটি কারণে দুর্নীতি কমানো যাচ্ছে না। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-রাজনীতিবিদদের প্রতিশ্রুতির ঘাটতি, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর জবাবহিদিতার অভাব ও রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য অবস্থান সংকুচিত করে দেওয়া এবং গণমাধ্যম ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের কথা বলার সুযোগ সীমিত করে দেওয়া। তিনি বলেন, আর্থিক খাতে একের পর এক কেলেঙ্কারি ও জালিয়াতির ঘটনা ঘটলেও তাদের বিচারের আওতায় আনার দৃষ্টান্ত নেই। ড. জামান আরও বলেন, টিআইর সূচকে বাংলাদেশের স্কোর কমেছে। বৈশ্বিক গড় ৪৩ এর চেয়ে অনেক কম। এটি অত্যন্ত বিব্রতকর ও হতাশাব্যঞ্জক। এই অবস্থানের মানে হলো, ‘দুর্নীতি এখানে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা।’
ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশের স্কোর ২০২২ সাল পর্যন্ত ২৫ থেকে ২৮-এর মধ্যে ছিল। কিন্তু ২০২৩ সালে আরও এক পয়েন্ট কমে ১২ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন ২৪ স্কোরে নেমে এসেছে। ইকোনমিক ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের গবেষণা অনুযায়ী বিশ্বে ২৪টি দেশ পূর্ণ গণতান্ত্রিক। ৪৮টি ত্রুটিপূর্ণ গণতান্ত্রিক, ৩৬টি হাইব্রিড গণতান্ত্রিক ও ৫৯টি কর্তৃত্ববাদী।
বাংলাদেশকে তারা হাইব্রিড গণতান্ত্রিক দেশ হিসাবে উল্লেখ করেছে। কিন্তু আরেকটি বিষয় অত্যন্ত হতাশাজনক। কারণ এবারের রিপোর্টে পূর্ণ গণতান্ত্রিক দেশের সম্মিলিত স্কোর ৭৩, ত্রুটিপূর্ণ গণতান্ত্রিক দেশের ৪৮, হাইব্রিড দেশের ৩৬ এবং কর্তৃত্ববাদী দেশের স্কোর ২৯। আর বাংলাদেশের স্কোর ২৪। এর মানে হলো কর্তৃত্ববাদী দেশের চেয়েও বাংলাদেশের কম। তিনি বলেন, ফ্রিডম হাউজ অনুযায়ী যেসব দেশে নির্বাচনি গণতন্ত্র আছে এমন ৯৩টি রাষ্ট্রের গড় স্কোর ৫৩ এবং নির্বাচনি গণতন্ত্রহীন রাষ্ট্রের গড় স্কোর ৩১। তার মতে, বাংলাদেশে দুর্নীতি ও অবিচার পরস্পর সম্পর্কযুক্ত। দুর্নীতি অন্যায়কে উৎসাহিত করে এবং অন্যায় দুর্নীতির দুষ্টচক্র তৈরি করে। যেসব দেশে গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা রয়েছে, নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার সুরক্ষিত, সেসব দেশের কার্যকর দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণের সম্ভাবনা বেশি।
ড. জামান বলেন, গত কয়েক বছরে সরকারি ক্রয় ও বিতরণ ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন কার্যক্রমে দুর্নীতির অসংখ্য তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। এ সময়ে বিদেশে অর্থ পাচারের আশঙ্কাজনক চিত্র উঠে এলেও প্রতিরোধে দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ নেই। ঋণখেলাপি, জালিয়াতি ও অর্থ পাচারে জর্জরিত ব্যাংকিং খাতের ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতি মোকাবিলায় কার্যকর পদক্ষেপ দেখা যায়নি। উলটো এসব ঘটনায় দায়ীদের জন্য বিচারহীনতার পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।
তিনি বলেন, ক্ষেত্রবিশেষে দুর্নীতির ঘটনা অস্বীকার কিংবা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। এছাড়াও অবস্থান ও পরিচয় নির্বিশেষে আইনের কঠোর প্রয়োগ হয় না। ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর শূন্য সহশীলতার (জিরো টলারেন্স) ঘোষণা সর্বোচ্চ পর্যায়ের রাজনৈতিক সদিচ্ছার প্রকাশ। কিন্তু এর প্রয়োগে ঘাটতি আছে। বাস্তবে এটি ঘোষণাতেই আটকে আছে। বিশেষ করে এই ঘোষণা বাস্তবায়নের দায়িত্বদের দুর্নীতির সঙ্গে যোগসাজশ রয়েছে। ফলে তারা সহায়তা করেছে। এছাড়াও দুর্নীতির সুবিধাভোগীরা অত্যন্ত প্রভাবশালী। তিনি বলেন, রাজনৈতিক শুদ্ধাচারের মাধ্যমে সুশাসন নিশ্চিত করা গেলে আমাদের অবস্থান আরও ভালো হতো।
ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, জাতিসংঘের দুর্নীতিবিরোধী কনভেনশনে স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ। সে কারণে দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ করে নাগরিকদের জন্য স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিমূলক আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে বাধ্য সরকার। কিন্তু দেশে দুর্নীতি বাড়ছে। অর্থনৈতিক দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান যে পর্যায়ে, তার তুলনায় দেশ থেকে প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ টাকা পাচার হচ্ছে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার রিপোর্টে এসব তথ্য উঠে এসেছে। আর অর্থ পাচারকারীদের সিংহভাগই প্রভাবশালী।
তিনি বলেন, দুর্নীতি প্রতিরোধে প্রতিবন্ধকতার মধ্যে আরও রয়েছে-শীর্ষ দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দৃষ্টান্ত দেখা যাচ্ছে না। আর্থিক খাত, জনবল নিয়োগ এবং বিভিন্ন চুক্তি বাস্তবায়নে রাজনৈতিক প্রবল নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। এছাড়াও দুদকের স্বাধীনতায় ঘাটতি রয়েছে। টিআইবির রিপোর্ট নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে সরকারি দলের প্রতিক্রিয়ার ব্যাপারে, এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, সরকার যখন বিরোধী দলের বিরুদ্ধে কথা বলে, তখনও আমাদের তথ্য ব্যবহার করে। আগের সরকারের আমলে টিআইবির রিপোর্টে কী বলা হয়েছে, সেটি উল্লেখ করে।
টিআইর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুর্নীতির পরিস্থিতি উন্নয়ন সংক্রান্ত স্কোরে ১০০ নম্বরের মধ্যে বাংলাদেশের স্কোর ২৪। এই স্কোর যত বেশি থাকবে, দুর্নীতি তত কম। এক্ষেত্রে গত বছর ছিল ২৫। আগের বছর ছিল ২৬। অর্থাৎ ধারাবাহিকভাবে স্কোর কমছে। কিন্তু বিশ্বের সব দেশের গড় স্কোর ৪৩। এক্ষেত্রে বিশ্বের গড় স্কোরের চেয়ে ১৯ ধাপ পিছিয়ে বাংলাদেশ। অর্থাৎ দুর্নীতির ব্যাপকতা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় দক্ষিণ এশিয়ার ৮টি দেশের মধ্যে আফগানিস্তানের পরেই রয়েছে বাংলাদেশের অবস্থান। এছাড়া এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের ৩১টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ চতুর্থ। এর আগে রয়েছে সিরিয়া, মিয়ানমার এবং উত্তর কোরিয়া।
বাংলাদেশের মতো একই স্কোর পেয়েছে সেন্ট্রাল আফ্রিকা রিপাবলিক, ইরান, লেবানন এবং জিম্বাবুয়ে। সংবাদ সম্মেলনে ড. জামান আরও বলেন বিশ্বের বেশকিছু দেশে নাগরিক স্বাধীনতা সংকুচিত হওয়ায় দুর্নীতি বাড়ছে। বাংলাদেশেও এ প্রবণতা দেখা যায়। টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, আইন প্রয়োগে ঘাটতি রয়েছে। বিশেষ করে ব্যাংকিং ও অর্থনৈতিক খাতসহ বিভিন্ন খাতে ক্রমবর্ধমান অনৈতিক প্রভাব বিস্তার, অনিয়ম ও দুর্নীতি ও বিশৃঙ্খলায় দায়ীদের বিচারের আওতায় আনা যায়নি।
প্রতিবেদন অনুসারে কম দুর্নীতিগ্রস্ত তালিকার শীর্ষে অবস্থান করছে ডেনমার্ক। ১০০ নম্বরের মধ্যে দেশটির স্কোর ৯০। এরপর ফিনল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, নরওয়ে, সিঙ্গাপুর, সুইডেন ও সুইজারল্যান্ড। এরপর রয়েছে-নেদারল্যান্ডস, জার্মানি, লুক্সেমবার্গ, আয়ারল্যান্ড, কানাডা এবং ইস্তোনিয়া। সর্বনিম্নে অবস্থান করছে সোমালিয়া। ১০০ নম্বরের মধ্যে তাদের স্কোর ১১। এরপরেই রয়েছে দক্ষিণ সুদান, সিরিয়া, ভেনিজুয়েলা, ইয়েমেন, ইক্যুইটেরিয়ল গিনিয়া, হাইতি এবং উত্তর কোরিয়া। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছে ভুটান। নিচের দিক থেকে দেশটির অবস্থান ৫৩। এরপর মালদ্বীপের অবস্থান ২৫। ভারত ২৫, নেপাল ২১, শ্রীলংকা ২০, পাকিস্তান ১৫, বাংলাদেশ ১০ এবং আফগানিস্তান ৬ নম্বরে অবস্থান করছে।
ইফতেখারুজ্জামান আরও বলেন, দুর্নীতি নিয়ে বিভিন্ন প্রতিবেদন প্রকাশ করলে হয়রানি ও নাজেহাল হতে হয়। এটি গণমাধ্যম কর্মী ও নাগরিক সমাজ সবার জন্য একইভাবে প্রযোজ্য। নাগরিক সমাজ ও গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য কাজের ক্ষেত্রে ক্রমাগত সংকুচিত হচ্ছে। এটি দুর্নীতি প্রতিরোধের ক্ষেত্রে অত্যন্ত বড় প্রতিবন্ধকতা। মানুষের কণ্ঠস্বর প্রকাশ করা অত্যন্ত জরুরি।
ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহার, দুর্নীতি ও অপরাধের সঙ্গে রাজনৈতিক যোগসূত্রতা রয়েছে। গণমাধ্যম ও নাগরিক সমাজের অবস্থান এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সংকুচিত। আর্থিক ও ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ, জালিয়াতি এবং সরকারি কাজে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ ইত্যাদি কারণে অবস্থার উন্নতি হয়নি।
তাই এসব পরিস্থিতির পরিবর্তন করে কোনো ধরনের ভয়ভীতি কিংবা অনুকম্পার ঊর্ধ্বে উঠে প্রধানমন্ত্রীর ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহশীলতা’র ঘোষণা যথাযথ বাস্তবায়ন করা গেলে সূচকে বাংলাদেশের স্কোর আরও ভালো হতে পারত। ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, দুর্নীতি প্রতিরোধে সব সংস্থাকে কাজ করতে হয়।
বাংলাদেশে অন্যান্য সংস্থাগুলোর দুর্নীতি প্রতিরোধে কাজ করে না। ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিজেরা সুবিধা নেয়।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বিশ্বের ১৩টি শীর্ষ প্রতিষ্ঠানের জরিপের তথ্যের ওপর ভিত্তি করে এ রিপোর্ট তৈরি করে টিআই। এক্ষেত্রে যেসব দেশ এখানে স্থান পাবে, তাদের কমপক্ষে ৩টি আন্তর্জাতিক জরিপ থাকতে হয়। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে তথ্যসূত্র হিসাবে ৮টি জরিপ ব্যবহৃত হয়েছে।
এগুলো হলো-বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি পলিসি অ্যান্ড ইনস্টিটিউশনাল অ্যাসেসমেন্ট, ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরাম এক্সিকিউটিভ ওপিনিয়ন সার্ভে, গ্লোবাল ইনসাইট কান্ট্রি রিস্ক রেটিংস, বার্টেলসম্যান ফাউন্ডেশন ট্রান্সফরমেশন ইনডেক্স, ওয়ার্ল্ড জাস্টিস প্রজেক্ট রুল অব ল, পলিটিক্যাল রিস্ক সার্ভিসেস ইন্টারন্যাশনাল কান্ট্রি রিস্ক গাইড, ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট কান্ট্রি রিস্ক রেটিংস এবং ভ্যারাইটিস অব ডেমোক্রেসি প্রজেক্ট ডাটাসেট রিপোর্ট। সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয় যে, সিপিআই নির্ণয়ে টিআইবির কোনো ভূমিকা নেই। এমনকি টিআইবির গবেষণা থেকে প্রাপ্ত কোনো তথ্যও এখানে বিবেচনায় নেওয়া হয় না। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতোই টিআইবি ধারণা সূচক দেশীয় পর্যায়ে প্রকাশ করে।