যাঁরা গর্ভধারণ করতে চাচ্ছেন, তাঁদের থাইরয়েড হরমোনের মাত্রা একটি নির্দিষ্ট পরিমাণে থাকতে হবে। হাইপারথাইরয়েডিজম (থাইরয়েড হরমোনের আধিক্য) এবং হাইপোথাইরয়েডিজম (থাইরয়েড হরমোনের ঘাটতি) উভয়ই গর্ভধারণে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে। থাইরয়েড হরমোনের ঘাটতি মায়ের ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বাণু ফুটতে (ওভুলেশন) বাধা দেয়। এ জন্য যাঁদের থাইরয়েড হরমোনের ঘাটতি আছে, তাঁদের কনসিভ করতে সমস্যা হতে পারে।
তাই কনসিভ করতে দেরি হলে অবশ্যই থাইরয়েড হরমোন পরীক্ষা করা উচিত।
হাইপোথাইরয়েডিজমের লক্ষণ
* ক্লান্তি * তন্দ্রাভাব * অবসাদ
* শীত সহ্য করতে না পারা
* ওজন বৃদ্ধি পাওয়া * কোষ্ঠকাঠিন্য
* অনিয়মিত মাসিক
* মাসিকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ
* কনসিভ করতে সমস্যা বা ইনফর্টিলিটি
* হাইপারথাইরয়েডিজমের লক্ষণ
* দ্রুত ওজন কমে যাওয়া
* বুক ধড়ফড় করা
* অতিরিক্ত ঘাম হওয়া
* গরম সহ্য করতে না পারা
* গা গরম থাকা
কনসিভ করতে থাইরয়েড হরমোনের লেভেল কত থাকতে হবে?
যাঁরা বাচ্চা নিতে চাচ্ছেন তাঁদের সেরাম টিএসএইচ লেভেল ০.১-২.৫ এর মধ্যে থাকতে হবে। এ ছাড়া গর্ভকালীন অবস্থায় বাচ্চা ও মায়ের সুস্থতার জন্য সেরাম টিএসএইচ লেভেল একটি নির্দিষ্ট মাত্রায় রাখতে হবে।
* গর্ভাবস্থায় প্রথম তিন মাস ০.১-২.৫
* গর্ভাবস্থায় দ্বিতীয় তিন মাস ০.২-৩.০
* গর্ভাবস্থায় তৃতীয় তিন মাস ০.৩-৩.৫ এর মধ্যে রাখতে হবে।
তাই যাঁরা আগে থেকেই থাইরয়েডের ওষুধ খাচ্ছেন গর্ভাবস্থায় এর ডোজ পুনর্নির্ধারণের প্রয়োজন হতে পারে। গর্ভাবস্থায় এক মাস পর পর হরমোন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
গর্ভাবস্থায় হাইপোথাইরয়েডিজম থাকলে মায়ের কী ক্ষতি হতে পারে?
* গর্ভপাত * গর্ভাবস্থায় উচ্চ রক্তচাপ
* গর্ভাবস্থায় খিঁচুনি
* প্রসব-পরবর্তী রক্তক্ষরণ
* সময়ের আগেই ডেলিভারি
* মায়ের হার্ট ফেইলিওর * ইনফেকশন
* রক্তশূন্যতা
মায়ের থাইরয়েডের সমস্যা থাকলে শিশুর কী কী ক্ষতি হতে পারে?
* মেধা বিকাশ কম হওয়া
* গ্রোথ বা বৃদ্ধি কম হওয়া
* জন্মগত ত্রুটি
* মৃত শিশু প্রসব হওয়া
* শিশুর থাইরয়েডের সমস্যা
* বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী শিশু
পরামর্শ দিয়েছেন
ডা. মো. মাজহারুল হক তানিম
কনসালট্যান্ট, ডা. সিরাজুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, মালিবাগ ঢাকা