জরুরি অবস্থা আরো ৬ মাস বাড়াল মিয়ানমার জান্তা

মিয়ানমারের জান্তা প্রধান মিন অং হ্লায়িং। ছবি: সংগৃহীত

মিয়ানমারের জান্তা বুধবার (৩১ জানুয়ারি) জরুরি অবস্থার মেয়াদ আরো ছয় মাস বাড়িয়েছে। আবারও নির্বাচন বিলম্বিত করে সামরিক বাহিনী দেশজুড়ে বিরোধীদের বিরুদ্ধে লড়াই করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম এমআরটিভির খবরে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের জাতীয় প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা কাউন্সিল মিং অং হ্লেইংয়ের অনুরোধে দেশের জরুরি অবস্থার সময় বাড়ানো হয়েছে।

মিয়ানমারে সর্বশেষ সামরিক অভ্যুত্থান তৃতীয় বছরে পড়ল আজ।

২০২১ সালের এই দিনে মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে দেশটিতে সংঘাত সাম্প্রতিক সময়ে অনেক বেড়ে গেছে। জাতিসংঘের হিসাবমতে, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে লড়াই-সংঘাতে প্রায় ২০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। সম্প্রতি সেখানে জাতিগত বিদ্রোহীরা গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন শহর দখল করছে।

সামরিক বাহিনী পরিচালতি সংবাদমাধ্যম মায়াবতীর টেলিগ্রাম চ্যানেলে বলা হয়েছে, “জান্তা প্রধান মিন অং হ্লায়িং জরুরি অবস্থা আরও ৬ মাসের জন্য বাড়ানো জরুরি মনে করছেন, যাতে দেশে স্থিতিশীলতা এবং শান্তির স্বাভাবিক বাতাবরণ ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় কর্মসূচি হাতে নেওয়া যায়।

বিবৃতিতে যোগ করা হয়েছে ‘সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার জন্য জরুরি অবস্থার মেয়াদ বাড়ানোর প্রয়োজন ছিল।’ মিয়ানমার জান্তা এর আগে একাধিকবার জরুরি অবস্থার মেয়াদ বাড়িয়ে নতুন নির্বাচন বিলম্বিত করেছে। মিয়ানমারে সামরিক খসড়া ২০০৮ সালের সংবিধান অনুয়াযী, কর্তৃপক্ষকে জরুরি অবস্থা তুলে নেওয়ার ছয় মাসের মধ্যে নতুন নির্বাচন করতে হবে।

অক্টোবরের শেষের দিকে উত্তর শান রাজ্যে জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর ব্যাপক আক্রমণ জান্তাকে বিপর্যস্ত করে তুলেছে।

আরাকান আর্মি (এএ), মায়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মি (এমএনডিএএ) এবং তায়াং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (টিএনএলএ) চীনের সঙ্গে দেশের বৃহত্তম বাণিজ্যক রুট দখল করে এবং অনেক সামরিক ঘাঁটিও দখল করে নেয়। হাজার হাজারে সেনা আত্মসমর্পণ করে ভারত ও চীনে পালিয়ে যায়, যার ফলে জান্তা নেতৃত্বের সমালোচনা শুরু হয়েছে।

চীনের মধ্যস্থতায় একটি শান্তি চুক্তি উত্তরে যুদ্ধ থামিয়ে দিয়েছে, কিন্তু অন্যত্র সংঘর্ষ অব্যাহত রয়েছে। একটি স্থানীয় পর্যবেক্ষণ গোষ্ঠীর মতে, সেনাবাহিনীর অভিযানে ৪ হাজার ৪০০জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে এবং ২৫ হাজারের বেশি গ্রেপ্তার হয়েছে। এদিকে জান্তা বাহিনী বলছে, সশস্ত্র গোষ্ঠীর হাতে ৬ হাজারের বেশি বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছে।

জাতিসংঘের মতে, সহিংসতায় এখন পর্যন্ত দুই মিলিয়নেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

সূত্র: রয়টার্স

LEAVE A REPLY