ভুল ওষুধে চিকিৎসার ফলে অনেক সময় বিপদ ঘটে। ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণে সৃষ্টি হওয়া তেমনি একটি রোগ হলো স্টিভেন জনসন সিনড্রোম। বিরল এই রোগ সম্পর্কে জানাচ্ছেন অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরী, সাবেক অধ্যক্ষ, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ
ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণে রোগীর ত্বক পুড়ে যেতে পারে। একে বলা হয় ‘স্টিভেন জনসন সিনড্রোম’ রোগ।
ডাক্তারি ভাষায় এর নাম ‘টাইপ ফোর হাইপার সেনসিটিভিটি রিঅ্যাকশন।
উদাহরণ হিসেবে এক কিশোরীর গল্প বলা যায়। অ্যালার্জির জন্য ফার্মেসি থেকে সে ওষুধ কিনে খেয়েছিল। এর পরই শরীরে র্যাশ উঠতে শুরু করে।
গোটা শরীর পুড়ে ঝলসে যায়। এর সঙ্গে শুরু হয় প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট। শরীরে স্টেরয়েড প্রয়োগ করে এবং আইসিইউতে নিয়ে যাওয়ার পর তাকে প্রাণে বাঁচানো সম্ভব হয়।
প্রথমে হাম বলে ধরে নেওয়া হয়েছিল।
পরে মেডিক্যাল কলেজের ত্বক বিশেষজ্ঞরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও রোগীর হিস্ট্রি নেওয়ার পর একে স্টিভেন জনসন সিনড্রোম বলে শনাক্ত করেন। বিরল রোগটি ১০ লাখে একজনের হয়।
লক্ষণ
* গায়ে র্যাশ
* ফুসকুড়ি
* শ্বাসকষ্ট
* শরীরে কালো ছোপ
* জ্বর-সর্দি-কাশি
* বমি
* প্রচণ্ড মাথা ব্যথা
জটিলতা যত
চিকিৎসা নিতে দেরি করলে এতে আক্রান্ত রোগীকে বাঁচানো সম্ভব হয় না। খুব বেশি দেরি করলে ‘টক্সিক এপিডারমেল নেক্রলাইসিস’ বা টেন এ পরিণত হয় এই অসুখ। এ অবস্থায় রোগীর চামড়ার ওপরের অংশ পুড়ে কালো হয়ে যায় এবং শরীরের সব শ্লেস্ম ঝিল্লি নষ্ট হয়ে যায়।
ত্বক, মুখগহ্বরে ও শ্বাসনালিতে হতে পারে ক্ষত। আক্রান্ত হতে পারে লিভার ও কিডনি। পানিশূন্যতাও দেখা দিতে পারে।
পেনিসিলিন, এজিথ্রোমাইসিনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াও ভাইরাসের কারণে এই রোগ হতে পারে।
ব্যবস্থাপত্র বাদে ওষুধ গ্রহণ নয়
এই রোগের প্রধান কারণ হলো ভুল ওষুধ গ্রহণ করা। রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্রের মাধ্যমেই শুধু ওষুধ খাওয়া উচিত। সাধারণ অ্যাসপিরিন ওষুধ না বুঝে খেলে তা প্রাণঘাতী হতে পারে। কোনো ওষুধ গ্রহণের পর সামান্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া যেমন র্যাশ বা শ্বাসকষ্ট হলে তাৎক্ষণিকভাবে সে ওষুধ গ্রহণ করা বন্ধ করতে হবে। চিকিৎসা নিতে ইমার্জেন্সিতে যেতে হবে।