ফাইল ছবি
একটু পরেই নেটে বোলিং করতে যাবেন তিনি। তার আগে বাঁ হাত দিয়ে নিজের ডান কাঁধটি ধরে হেড কোচ চন্দিকা হাতুরাসিংহেকে অস্বস্তি নিয়ে কিছু একটা বলছিলেন তাসকিন আহমেদ। গত ওয়ানডে বিশ্বকাপে পুনেতে ভারতের মুখোমুখি হওয়ার কয়েক দিন আগে অনুশীলনের এই ছবিই বলে দিচ্ছিল যে বোলিং কাঁধের পুরনো সমস্যা নিয়েই চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। সেই থেকে চোট নিয়েই খেলতে থাকা এই ফাস্ট বোলারের আর টেস্ট খেলতে না চাওয়ার খবরে অবশ্য মিশ্র প্রতিক্রিয়াই হচ্ছে।
কারণ মুস্তাফিজুর রহমান তো নিজের সেরা সময়েও টেস্ট খেলা এড়িয়ে চলার উদাহরণ হয়ে আছেন। এখন তাসকিন রঙিন পোশাক আর সাদা বলের ক্রিকেটের প্রলোভনে পড়ে গেলেন কি না, আছে এমন আলোচনাও। অল্প পরিশ্রমে বাড়তি রোজগারের পথে তাসকিনের পর আর কে পা বাড়াতে পারেন, সে কৌতূহল ছড়াচ্ছে।
সেই সময়টি না এসে যাওয়া পর্যন্ত ভাবনাটা ইতিবাচকই রাখতে চান হাবিবুল বাশার।
এই নির্বাচক বলছিলেন, ‘আশা করি, শরিফুল বা অন্যরা এ রকম করবে না।’ তাই বলে এমনও নয় যে তাসকিনকে মুস্তাফিজের পথের অনুসারীই ভাবছেন তিনি। বাংলাদেশ দলের সাবেক অধিনায়ক বরং তাসকিনকে তাঁর সমস্যার গভীর থেকে বুঝতে আগ্রহী, ‘তাসকিনের তো কাঁধে সমস্যা। গুরুতর সমস্যাই।
আমি যত দূর জানি, এই সমস্যা ঠিক করতে হলে ওকে অস্ত্রোপচার করাতে হবে। এটি করালে অন্তত ছয় মাস তো লাগবেই, এমনকি এক বছরও লাগতে পারে। বছরখানেকের জন্য যদি খেলার বাইরে চলে যায়, তাহলে সে আর ফিরতে পারবে না। যে জন্য ও মনে করে থাকতে পারে যে টেস্ট ম্যাচ খেলা ওর জন্য খুব কঠিন।’
নির্বাচক হিসেবে নিয়মিত তাসকিনকে পর্যবেক্ষণে রাখতে হয় হাবিবুলকে।
ওয়ানডে বিশ্বকাপের একাংশে দলের সঙ্গে একই হোটেলে থেকেছেন বলে নিজের সঙ্গে লড়াই করতে থাকা পেসারকে দেখেছেন আরো কাছ থেকে। এ জন্য বুঝতে পারছেন, ‘ওর হাতে কিন্তু অনেক ব্যথা। পেইন কিলার নিয়ে নিয়ে খেলতে হচ্ছে। (অস্ত্রোপচার না করালে) ভালোই হবে না। এই অবস্থায় হয়তো মনে করছে ১০ ওভার বা ৪ ওভার করে বোলিং (ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টিতে) চালিয়ে নিতে পারবে। এর বেশি পারবে না। সে জন্যই হয়তো সে সিদ্ধান্তটি (টেস্ট খেলতে না চাওয়ার বা এই সংস্করণ থেকে বিরতি নেওয়ার) নিয়ে থাকতে পারে।’
না হলে তাসকিনকে এত দিন ধরে যতটুকু দেখেছেন, তাতে কখনো তাঁর মধ্যে টেস্ট খেলার অনাগ্রহ খুঁজে পাননি হাবিবুল। তা ছাড়া এই ফাস্ট বোলারের বয়সও অস্ত্রোপচার করিয়ে ফেরার পক্ষে অনুকূল নয় বলে মনে করেন তিনি, “তবে ও কিন্তু খেলতে চায়। সে কিন্তু টেস্ট খেলা উপভোগই করত। কখনো ‘না’ করেনি। এখন বুঝে ফেলেছে যে ওভাবে আর পারবে না। বিপিএলেও কিন্তু ছন্দে নেই। সংগ্রাম করতে হচ্ছে। ওরটা আমি বুঝতে পারি। ওকে আমি দোষ দেব না। তা ছাড়া ওর বয়সও হয়ে গেছে। ৩২ বছর এখন।” এই বয়সে অস্ত্রোপচারের ধকল নিতে চাওয়ার পেছনেও মুস্তাফিজ থেকে থাকতে পারেন। বোলিং কাঁধে অস্ত্রোপচার করানোর পর এই বাঁহাতি পেসারও তো কখনো আগের সেরায় ফিরতে পারেননি!