নিজ দলের সমর্থক আইনজীবীকে মারধর ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগের মামলায় বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির আইন বিষয়ক সম্পাদক ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব ব্যারিস্টার কায়সার কামালসহ ১০ আইনজীবীকে আগাম জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আজ বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ তাঁদের ছয় সপ্তাহের জামিন দেন। এ সময়ের মধ্যে তাঁদের নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হেয়েছে।
জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী।
রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুর্টি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী ও ডেপুর্টি অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুদ্দিন খালেদ।
আইন কর্মকর্তা সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আদালত জামিন আবেদনকারীদের আইনজীবীকে উদ্দেশ্য করে কিছু কথা বলেছেন। কালো কোট গায়ে দিয়ে যদি কালো কোটের অবমাননা করেন, তাহলে সেটা দুঃখজনক। আদালতপাড়ায় এক আইনজীবী আরেক আইনজীবীর গায়ে হাত দেবে, এটা হতে পারে না।
এ ঘটনা এই পেশাকে কলঙ্কিত করেছে।’
মারধর ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ এনে বিএনপি সমর্থক আইনজীবী কাজী মুহাম্মদ জয়নাল আবেদীন গত ৫ ফেব্রুয়ারি শাহবাগ থানায় মামলা করেন। এ আইনজীবী বিএনপিপন্থী প্যানেল থেকে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির জ্যেষ্ঠ সহসম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ১ জানুয়ারি থেকে ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত সারা বাংলাদেশে কোর্ট বর্জনের ডাক দেন বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা।
এর মধ্যে ৩ জানুয়ারি একটি মামলার খবর নিতে সুপ্রিম কোর্ট গেলে ব্যারিস্টার কায়সার কামাল তাঁকে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম থেকে বহিষ্কার করেন। যদিও সংগঠনটির কোনো পদে না থাকার পরও বহিষ্কারের কারণ জানতে চাইলে তাঁকে ধমক দেন কায়সার কামাল। পাশে থাকা অনুসারীদের নির্দেশ দেন তাঁকে ধরার জন্য। সেখান থেকে কোনো রকমে বের হয়ে এলেও বিকেলে কয়েকজন আইনজীবী তাঁকে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির মূল ভবনের ৪০৯ নম্বর রুমে নিয়ে যান। সেখানে যাওয়ার পর ব্যারিস্টার কায়সার কামালের নির্দেশে শাহের খান পাঠানসহ কয়েকজন আইনজীবী তাঁকে কিলঘুষি মারেন।
এর কারণ জানতে চাইলে আইনজীবী এরশাদ ওরফে রাশেদ তাঁর বাঁ চোখের নিচে লোহার চেয়ার দিয়ে আঘাত করেন। মারতে মারতে তাঁকে মেঝেতে ফেলে দেন।
এ সময় তাঁকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয় এবং প্যান্টের পকেটে থাকা ১০ হাজার ৫৭৫ টাকাও নিয়ে নেন। মারধরের এক পর্যায়ে অন্যা আইনজীবীরা এসে উদ্ধার করে তাঁকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যান।
কায়সার কামাল ছাড়া মামলার অন্য আসামিরা হলেন শাহের খান পাঠান, এরশাদ ওরফে রাশেদ, উজ্জল, আব্দুল্লাহ আল মাহবুব, উচ্ছল, গাজী তৌহিদুল ইসলাম, শহীদুল ইসলাম সপু, মাকসুদ উল্লাহ, শহীদুজ্জামান।