বিপিএল একটা নির্দিষ্ট সূচিতে হলে ভালো

ঘটনাবহুল এক ক্যারিয়ার ওয়েইন পারনেলের। অনূর্ধ্ব-১৯ পর্যায় থেকে তাঁকে ভাবা হচ্ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার পরবর্তী তারকা। কিন্তু প্রায় ১৬ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে সে উচ্চতা ছুঁতে পারেননি পারনেল। এবার বিপিএলে খুলনা টাইগার্সের হয়ে খেলতে আসা ৩৪ বছর বয়সী প্রোটিয়া অলরাউন্ডার নানা বিষয়ে কথা বলেছেন কালের কণ্ঠ’র প্রতিবেদক বোরহান জাবেদের সঙ্গে।

প্রশ্ন : প্রথম চার ম্যাচে টানা জয়ের পরও খুলনা প্লে-অফে খেলতে না পারার পেছনে কী ঘাটতি দেখেন?
ওয়েইন পারনেল : দলের পরিবেশ ভালো ছিল। পারফরম্যান্সের অনেক ওঠা-নামা হয়েছে। যেটার জন্য আমরা প্লে-অফ খেলতে পারছি না বলে মনে হয়। এমন একটা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ টুর্নামেন্টে টানা পাঁচ ম্যাচ হারার পর ঘুরে দাঁড়ানো কঠিন।

প্রশ্ন : বিশ্বব্যাপী ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট খেলেছেন। বিপিএলকে কিভাবে দেখেন?
পারনেল : অনেক কঠিন একটা টুর্নামেন্ট। এবার অবশ্য উইকেট অনেক ভালো। শেষবার যখন আমি এখানে এসেছিলাম (২০১৯ সালে সিলেট সিক্সার্সের হয়ে খেলেছিলেন), অনেক লো স্কোরিং ম্যাচ হতো।

তাতে বোলারদের কাজ অনেক সহজ হয়ে যেত। এবার উইকেট বোলারদের পরীক্ষা নিয়েছে। বিশেষ করে টুর্নামেন্টের যে অংশ থেকে আমি খেলছি। এমন উইকেট বোলারদের পরিকল্পনা পুঙ্খানুপুঙ্খ না হলে টিকে থাকা কঠিন। ব্যাটিংয়ের দিক থেকে বললে এমন উইকেটে খেললে নিজেকে পরীক্ষার অনেক সুযোগ থাকে।

প্রশ্ন : কেমন পরীক্ষা?
পারনেল : এ ধরনের টুর্নামেন্টগুলো কেন হয়? হ্যাঁ, বোর্ডের আর্থিক ব্যাপার জড়িত। কিন্তু স্থানীয় ক্রিকেটারদের উন্নতির ব্যাপারও তো অস্বীকার করার সুযোগ নেই। ভালো উইকেটে একজন ব্যাটার যখন খেলবে, সে অনেক ধরনের শট খেলার চেষ্টা করবে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে যেটার সুযোগ হয়তো কম। বোলারদের ক্ষেত্রেও একই কথা। ভালো উইকেটে যখন বোলিং করবে, তখন তাকে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে। বোলার তখন নিজ থেকেই বোলিংয়ে বৈচিত্র্য যোগ করবে। সেটা মাঠে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখবে। এই চেষ্টাটা একজন বোলারকে আরো বড় মঞ্চে সাহস দেবে।

প্রশ্ন : উইকেটের কারণেই কি বিপিএল অন্য টুর্নামেন্টগুলোর চেয়ে পিছিয়ে?
পারনেল : এখানে বিসিবির বড় ভূমিকা দরকার। কোনো টুর্নামেন্টের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হবে না, এমন সূচি খুঁজে পাওয়া এখন কঠিন। তবে বিপিএলের সূচিরও অনেক নাড়াচাড়া হয়েছে। অন্য টুর্নামেন্টের সূচি এত বেশি পরিবর্তন হয়নি। প্রথমত, এই টুর্নামেন্টের জন্য একটা স্থায়ী সূচি বের করা দরকার। তাতে ক্রিকেটারদের পরিকল্পনা করতে সহজ হবে, লম্বা সময়ের জন্য পাওয়া যাবে। দ্বিতীয়ত, টুর্নামেন্টের সম্প্রচার বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে দেওয়া। আমার মনে হয়, এটা শুধু বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে দেখানো হয়। উপমহাদেশের বাইরের মানুষদের টুর্নামেন্টের সঙ্গে যুক্ত হওয়া তাই কঠিন। এখানে ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজের অনেক দেশের ক্রিকেটাররাই খেলছে। যদি টুর্নামেন্টের সম্প্রচার ছড়িয়ে দেওয়া যায় তাহলে দেখবেন বিভিন্ন দেশের মানুষ যুক্ত হচ্ছে, তাতে আদতে লাভ বিপিএলেরই।

প্রশ্ন : টি-টোয়েন্টিই কি এখনকার আসল ক্রিকেট?
পারনেল : টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট অবশ্যই অনেক বেশি লাভজনক। এখানে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার অনেক সুযোগ থাকে। তবে অনেক ক্রিকেটার আছে, যারা টেস্ট ক্রিকেট খেলতে চায়। বেশির ভাগ দল বছরে ১০টা টেস্ট খেলতে পারে। যেখানে আর ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড ২০টা টেস্ট খেলার সুযোগ পাচ্ছে। তো এখানে ক্রিকেটাররা ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ খেলে বেড়ালে তাদের দোষ দেওয়ার সুযোগ কম।

প্রশ্ন : আইপিএলে আপনি নারীঘটিত কাণ্ডে খবরের শিরোনাম হয়েছিলেন…
পারনেল : এটা পুরোপুরি ভুল একটা তথ্য। ঘটনা যতটা ছিল, তার চেয়ে বেশি রটানো হয়েছে। একজন মানুষকে কারো থেকে শোনা কথা অথবা সংবাদমাধ্যমে আসা খবর নিয়ে যাচাই করা উচিত নয়। সে রাতে আমি আরামে ঘুমাচ্ছিলাম।

LEAVE A REPLY