ফাল্গুনী রহমান জলি
২০১৬ সালে ‘অঙ্গার’ ছবি দিয়ে ঢালিউডে অভিষেক ঘটে ফাল্গুনী রহমান জলির। ২০১৯ সালে হঠাৎ করেই আড়ালে চলে যান তিনি। পাঁচ বছর পর আবার ফিরেছেন চেনা জগতে। তাঁর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সুদীপ কুমার দীপ।
পুনরায় কাজে ফিরে কেমন লাগছে?
পাঁচ বছর বিরতি ছিল। একেবারে নেটওয়ার্কের বাইরে ছিলাম। এই সময়টা স্বামী-সন্তান নিয়েই থেকেছি। আমার মেয়ের বয়স চার বছর হতে যাচ্ছে।
স্কুলেও ভর্তি হয়েছে। নিজের জন্য এখন সময় বের করতে পেরেছি বলেই কাজে ফিরেছি। তা ছাড়া আমার স্বামীও অনুমতি দিয়েছে। এত দিন পর চেনা জগতে ফিরে দারুণ লাগছে।
পাঁচটা বছর লাইট-ক্যামেরা-অ্যাকশনকে খুব মিস করেছি।
লম্বা বিরতি শেষে কাজ পেতে সমস্যা হচ্ছে?
একেবারেই সমস্যা হচ্ছে না তা বলব না। আমার মোবাইল ফোন নম্বর পরিবর্তন হয়েছে। ফলে পুরনো নির্মাতারা পাচ্ছেন না। আমিও অনেকের নম্বর হারিয়ে ফেলেছি।
আমি চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সদস্য। প্রথম যে ছবিটায় চুক্তিবদ্ধ হয়েছি—‘পদ্মাবতী’, সেটির নির্মাতা মনজুরুল ইসলাম মেঘ শিল্পী সমিতি থেকেই আমার নম্বর নিয়েছিলেন। এখনো অনেকে সমিতি থেকে নম্বর নিয়ে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পরিচালক সমিতি থেকে নম্বর নিয়ে আমিও অনেক নির্মাতার সঙ্গে যোগাযোগ করছি।
নতুন কী করলেন?
গত সপ্তাহে বড় বাজেটের দারুণ একটি বিজ্ঞাপনচিত্রের শুটিং করেছি। অনন্য মামুনের পরিচালনায় বিজ্ঞাপনচিত্রটিতে আমার সঙ্গে আছেন জায়েদ খান। শুটিং হয়েছে কক্সবাজারে। দুটি নতুন ছবি চূড়ান্ত হয়েছে কিছুদিন আগে। সে দুটির শুটিং শুরু হবে এপ্রিল ও মে মাসে। সেখানে আমার বিপরীতে দুজন বড় তারকাকে দেখা যাবে।
অনলাইন প্ল্যাটফরমে কাজ করবেন না?
বিরতিতে থাকার কারণে অনলাইন প্ল্যাটফরমের নির্মাতাদের সঙ্গে যোগাযোগ নেই। তবে আমি আগেও সব মাধ্যমে কাজ করেছি। এখনো করতে চাই। ওয়েব সিরিজ, ওয়েব ছবি এই সময়ে দর্শক দারুণভাবে গ্রহণ করেছেন। অনেক ক্ষেত্রে ওয়েব ছবি পূর্ণদৈর্ঘ্য ছবিকেও হার মানিয়ে দিচ্ছে। আশা করছি, এই বছরই অনলাইন প্ল্যাটফরমে আমার অভিষেক ঘটবে।
পাঁচ বছর পর কী কী পরিবর্তন দেখছেন মিডিয়ায়?
সব ক্ষেত্রেই পরিবর্তন দেখছি। এখন মেধাবী অভিনেতা-অভিনেত্রী ছাড়া টিকে থাকা সম্ভব নয়। নতুন যে বিজ্ঞাপনচিত্রটিতে কাজ করলাম তার বেশির ভাগ টেকনিশিয়ানই ভারতের। নির্মাতা যোগ্য মানুষের অভাবেই তো ভারত থেকে তাঁদের এনেছেন। এখন শুধু অভিনেতা-অভিনেত্রীই নন, যেকোনো ক্ষেত্রে কাজ করতে হলে মেধা লাগবেই। মেকআপ আর্টিস্ট, চিত্রগ্রাহক, কোরিওগ্রাফার থেকে শুরু করে একজন ম্যানেজারকেও হতে হবে আধুনিক। নইলে টিকে থাকা সম্ভব নয়।
আপনার হারানো স্থান উদ্ধার করতে পারবেন বলে মনে করেন?
আমার অভিষেক হয়েছিল রাজকীয়ভাবে। দুই বাংলায় মুক্তি পেয়েছিল ‘অঙ্গার’। এরপর ‘নিয়তি’ ও ‘মেয়েটি এখন কোথায় যাবে’ ছবি দুটিও আলোচিত হয়েছিল। মাত্র এক বছরেই ছয়টি ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলাম। নিশ্চয় আমার মধ্যে নির্মাতারা ভালো কিছু খুঁজে পেয়েছিলেন। এখনো আমার আত্মবিশ্বাস আছে। এই যে কাজে ফেরার ঘোষণা দেওয়ার পরই তিনটি ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হলাম, এটাকে তো ফেরার মতো ফেরা বলে। আশা করছি, এই বছরেই আমার হারানো স্থান ফিরে পাব।