দাম বেড়েছে মাছ-মাংসের

রাজধানীর বাজারে সরবরাহ বাড়ায় বেশির ভাগ সবজির দাম কমেছে। সপ্তাহের ব্যবধানে ডিমের দাম ডজনে ১০ টাকা কমেছে। সরবরাহ কমার অজুহাতে কিছুটা বেড়েছে মাছের দাম। মুরগির বাড়তি দামে তেমন পরিবর্তন না হলেও গরু ও খাসির মাংসের দাম কেজিতে ৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর মহাখালী কাঁচাবাজার, বাড্ডা ও জোয়ারসাহারা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, খুচরায় ফার্মের ডিমের দাম প্রতি ডজেন ১০ টাকা কমে ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এক মাসেরও বেশি সময় ধরে খুচরা বাজারে ফার্মের ডিম প্রতি ডজন ১৪০ টাকা করে বিক্রি হয়েছে।

ডিম, সবজির দাম কমেছে মাছ-মাংসের বাড়তিমহাখালী কাঁচাবাজারের পাইকারি ও খুচরা ডিম বিক্রেতা মো. রাজিব মিয়া রাজু গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এক সপ্তাহে দুই দফায় পাইকারিতে প্রতি ডজন ডিমের দাম ১০ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত কমেছে। এবার রমজানে ডিমের বাজার স্বাভাবিক থাকবে আশা করছি।

পাইকারিতে প্রতি ডজন ডিম ১২৫ টাকা রাখা হচ্ছে এবং খুচরায় প্রতি ডজন ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।’

রাজধানীর বাজারে গত দুই সপ্তাহ আগে মাছের দাম কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত কমেছিল। এখন সরবরাহ কিছুটা কমার অজুহাতে নতুন করে কেজিতে ২০ টাকা পর্যন্ত বাড়িয়ে মাছ বিক্রি হচ্ছে। 

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সস্তা মাছ বলে পরিচিত পাঙ্গাশ ও তেলাপিয়াও ২০০ টাকা কেজির নিচে বিক্রি হচ্ছে না।

ছোট পাঙ্গাশ প্রতি কেজি ২০০ থেকে ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বড় পাঙ্গাশ ২৩০ থেকে ২৪০ টাকা। ছোট তেলাপিয়া প্রতি কেজি  ২০০ থেকে ২২০ টাকা, বড় তেলাপিয়া ২৫০ থেকে ২৬০ টাকা। ছোট রুই (নলা) প্রতি কেজি ২৬০ থেকে ২৮০ টাকা, মাঝারি রুই ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা এবং বড় রুই ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা।

তা ছাড়া চার থেকে পাঁচ কেজি ওজনের কাতল মাছের কেজি ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা।

ছোট ও মাঝারি মাছের মধ্যে পাবদা প্রতি কেজি ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, চাষের কই মাছ ২৫০ থেকে ২৬০ টাকা, চাষের শিং আকারভেদে প্রতি কেজি ৪০০ থেকে ৫৫০ টাকা, টেংরা ৫৫০ থেকে ৬৫০ টাকা।

জানতে চাইলে রাজধানীর জোয়ারসাহারা বাজারের মাছ ব্যবসায়ী মো. সিরাজুল ইসলাম গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘রমজানে বাড়তি দামে বিক্রির আশায় অনেক মাছ চাষি এখন মাছ তুলছেন না। এতে সরবরাহ কিছুটা কমে কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়েছে।’

সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে মুরগির দাম নতুন করে না বাড়লেও আগের বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে। ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ২০০ টাকা ও সোনালি মুরগি মানভেদে ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে গরুর মাংসের দাম কেজিতে ৫০ টাকা বেড়ে ৭৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে শবেবরাতের দিন রাজধানীর বাজারে হঠাৎ দাম বেড়ে গরুর মাংসের প্রতি কেজি ৮০০ টাকা পর্যন্ত উঠেছিল।

কারওয়ান বাজারের কিচেন মার্কেটের মেসার্স মা আয়েশা ব্রয়লার হাউসের ব্যবসায়ী আমজাদ হোসেন গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বাজারে মুরগির দামে কোনো পরিবর্তন নেই। আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে। চাহিদার তুলনায় সরবরাহেও ঘাটতি নেই।’

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সপ্তাহের ব্যবধানে চিনির দাম কেজিতে পাঁচ টাকা বেড়ে খোলা চিনি কেজি ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পেঁয়াজের কেজি ১১৫ থেকে ১২০ টাকা। দেশি নতুন রসুন ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা ও আমদানি করা রসুন ২০০ থেকে ২২০ টাকা কেজি। চিকন মসুর ডাল প্রতি কেজি ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকা এবং মোটা মসুর ডাল ১১০ টাকা। খোলা আটা প্রতি কেজি ৪৫ টাকা। 

সবজির দাম ১০-৩০ টাকা কমেছে

রাজধানীর বাজারগুলোতে সবজির দাম ১০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। শিম প্রতি কেজি মানভেদে ৪০ থেকে ৬০ টাকা, টমেটো ৪০ থেকে ৫০ টাকা, বেগুন মানভেদে ৫০ থেকে ৭০ টাকা। ফুলকপি ও বাঁধাকপি প্রতিটি ৩০ থেকে ৪০ টাকা, লাউ প্রতিটি ৬০ থেকে ৭০ টাকা। কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি ৭০-৮০ টাকা, আলু ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, দেশি গাজর মানভেদে ৩০ থেকে ৫০ টাকা, মুলা ৩০ থেকে ৩৫ টাকা।

বাজারে এখনো কিছু সবজি বাড়তি দামে বিক্রি হতে দেখা গেছে। এর মধ্যে পেঁপে প্রতি কেজি ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, করলা ১২০ থেকে ১৩০ টাকা, ঢেঁড়স ৯০ থেকে ১০০ টাকা, শসা ৬০ থেকে ৭০ টাকা। লেবু ৪০ থেকে ৬০ টাকা হালি। 

বেড়েছে গরু ও খাসির মাংসের দাম

হিলি (দিনাজপুর) প্রতিনিধি জানান, দিনাজপুরের হিলিতে সব ধরনের সবজির দাম কেজিতে চার থেকে পাঁচ টাকা কমেছে। বেড়েছে ছোলা, গরু ও খাসির মাংসের দাম।

সবজি বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে সবজির সরবরাহ বাড়ায় দাম কমেছে। গতকাল সকালে হিলি বাজার ঘুরে দেখা যায়, গরুর মাংস ৭০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। কয়েক সপ্তাহ আগে ছিল ৬৫০ টাকা কেজি। খাসির মাংস এক হাজার টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে ছিল ৯০০ টাকা কেজি। এক সপ্তাহ ধরে সোনালি মুরগি ২৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ব্রয়লার মুরগি ১৮০ টাকা, যা আগে ছিল ২০০ টাকা কেজি।

ভারত থেকে আমদানি করা ছোলা ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। যা আগে ছিল ৯৫ টাকা কেজি। মসুর ডাল ১০৬ টাকা, মটর ডাল ৭৮ টাকা ও খেসারি ডাল ৯৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। দেশি আদা-রসুন ও শুকনা মরিচের দাম কমেছে। এক সপ্তাহ আগে দেশি রসুন ১৪০ টাকা ও চীনা রসুন ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হযেছে।  দেশি রসুন এখন ১৮০ টাকা ও চীনা রসুন ১৯০ টাকা।

LEAVE A REPLY