মনোনয়নের আরো কাছে ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের মনোনয়ন পাওয়ার লড়াইয়ে প্রায় নিশ্চিতভাবেই জিততে চলেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। গত শনিবার আরো তিন অঙ্গরাজ্য মিশিগান, মিসৌরি ও আইডাহোর দলীয় ককাসে (প্রাথমিক প্রার্থী বাছাই) সহজ জয় পেয়েছেন তিনি। অন্যদিকে জনপ্রিয়তার বর্তমান ডেমোক্রেট দলীয় প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের চেয়েও এগিয়ে আছেন ট্রাম্প।

মিশিগান, মিসৌরি ও আইডাহোতে মনোনয়ন পাওয়ার লড়াইয়ে একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালিকে বড় ব্যবধানে হারিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

এর মধ্য দিয়ে রিপাবলিকান দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পাওয়ার ক্ষেত্রে অনেকখানি এগিয়ে গেলেন ট্রাম্প। এর আগে আইওয়া, নিউ হ্যাম্পশায়ার, নেভাডা, ভার্জিন আইল্যান্ডস ও সাউথ ক্যারোলাইনায় জয় পেয়েছেন ৭৭ বছর বয়সী ট্রাম্প। মনোনয়ন পাওয়ার পাল্লায় টিকে থাকা একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী সাউথ ক্যারোলাইনার সাবেক গভর্নর নিকি হ্যালি এখনো কোনো অঙ্গরাজ্যে জয়ের দেখা পাননি। খোশমেজাজে থাকা ট্রাম্প বলেছেন, তিনি ‘রকেটে চড়ে মনোনয়ন পাওয়ার দিকে এগিয়ে চলেছেন’।

আগামীকাল মঙ্গলবার ১৫টি অঙ্গরাজ্যে একযোগে রিপাবলিকান দলের প্রাইমারি (আরেক ধরনের বাছাই ভোট) অনুষ্ঠিত হবে। একসঙ্গে অনেক অঙ্গরাজ্যের ভোট বলে এদিনটি পরিচিত ‘সুপার টিউজডে’ নামে। ধারণা করা হচ্ছে, ওই দিনই মনোনয়ন শতভাগ নিশ্চিত করে ফেলতে পারেন ট্রাম্প। আগামী জুলাইয়ে দলের জাতীয় সম্মেলনে ট্রাম্পের মনোনয়ন চূড়ান্ত হলে ডেমোক্র্যাট দলের সম্ভাব্য প্রার্থী জো বাইডেনের সঙ্গে লড়াই হবে ট্রাম্পের।

ভোটের ফলাফল অনুযায়ী, মিসৌরি অঙ্গরাজ্যের প্রতিটি কাউন্টিতে নিকি হ্যালিকে হারিয়েছেন ট্রাম্প। মিশিগানে প্রায় দুই হাজার দলীয় কর্মী ককাসে ভোট দিয়েছেন। ট্রাম্প এই অঙ্গরাজ্যের ৩৯ জন ডেলিগেটের প্রত্যেকের সমর্থন পেয়েছেন। গত সপ্তাহে মিশিগানের প্রাইমারিতে জয়ের পর ১৬ জন ডেলিগেটের সমর্থন আদায় করেছিলেন তিনি। এ ছাড়া পশ্চিমাঞ্চলীয় অঙ্গরাজ্য আইডাহোতেও সহজ জয় পেয়েছেন এই মার্কিন ধনকুবের।

উল্লেখ্য, দলের জাতীয় সম্মেলনে নিজ অঙ্গরাজ্য বা ডিস্ট্রিক্টের প্রতিনিধিত্ব করেন ডেলিগেটরা। একই সঙ্গে কে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হবেন, তা নির্ধারণ করেন। গতকাল পর্যন্ত ২৪৭ জন রিপাবলিকান ডেলিগেটের সমর্থন আদায় করেছেন ট্রাম্প। নিকি হ্যালি নিশ্চিত করেছেন মাত্র ২৪টি।

গত শনিবার ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যের রাজধানী রিচমন্ডে ট্রাম্পের বক্তব্য শুনতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকে সমর্থকরা। আগামীকাল মঙ্গলবার বড় জয়ের প্রত্যাশা ব্যক্ত করে ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা যে জয় পেয়েছি, তা অবিশ্বাস্য।’ এদিন তাঁর বক্তব্যের কেন্দ্রে ছিল যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমানের আলোচিত বিষয় অভিবাসন। গত শনিবার ট্রাম্পের বেশ কয়েকজন সমর্থক জানান, অভিবাসন তাঁদের  অন্যতম প্রধান উদ্বেগ।

দক্ষিণ সীমান্তের অবৈধ অভিবাসী সংকটের জন্য প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে দায়ী করেন ট্রাম্প। তাঁর দাবি, বর্তমান প্রেসিডেন্ট ইচ্ছাকৃতভাবে অভিবাসীদের মেক্সিকো থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমাতে উৎসাহিত করছেন। তবে এই দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি তিনি। ট্রাম্পের বক্তব্যের জবাবে বাইডেনের প্রচারাভিযানের মুখপাত্র আমার মুসা বলেন, ‘কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ন্যায্য ও কঠিন সীমান্ত সুরক্ষা বিল পাস হতে দেননি ট্রাম্প। এই সত্যি কথাটা থেকে জনগণকে আবারও বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন তিনি। কারণ ট্রাম্প মনে করেন, এই ইস্যুটি তাঁর নির্বাচনী প্রচারণায় সাহায্য করবে।’

এদিকে গত শনিবার নিউ ইয়র্ক টাইমস ও সিয়েনার জরিপের ফলাফলে দেখা গেছে, ৪৮ শতাংশ নাগরিক ট্রাম্পকে সমর্থন দেবেন। অন্যদিকে বাইডেনের পক্ষে রয়েছে ৪৩ শতাংশ জনসমর্থন। রিচমন্ডের সমাবেশে এই জরিপের দিকে ইঙ্গিত করেন ট্রাম্প। আগামী মঙ্গলবার বার্তা পাঠাতে সমর্থকদের আহবান জানান তিনি। 

সূত্র : বিবিসি, এএফপি

LEAVE A REPLY