সংগৃহীত ছবি
নানা কারণে শ্রবণশক্তি হ্রাস পেতে পারে। তখন সার্বিক যোগাযোগক্ষমতায় ব্যত্যয় ঘটে। তাই কানের যত্ন নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যানুযায়ী, ২০৫০ সালের মধ্যে পৃথিবীর ২৫ শতাংশ মানুষ (২০৫ কোটি) অর্থাৎ প্রতি চারজনে একজন শ্রবণ সমস্যায় ভুগবে।
আর প্রায় ৭০ কোটি মানুষের শ্রবণযন্ত্র লাগবে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশের এক-তৃতীয়াংশ মানুষ শ্রবণ সমস্যায় ভুগছে।
কারণ
► জন্মগত ত্রুটির কারণে শ্রবণে ত্রুটি দেখা দিতে পারে।
► বংশ ও জিনগত কারণ
► প্রসবকালীন জটিলতা।
যেমন—কম ওজন, প্রিম্যাচিউরিটি, বার্থ এসফ্যাক্সিয়া, নিউনেটাল জন্ডিসের কারণেও বধিরতা হতে পারে।
► বধিরতার জন্য দায়ী মায়ের গর্ভকালীন কিছু সংক্রমণ। যেমন—সাইটোমেগালো ভাইরাস, রুবেলা, মাম্পস ইত্যাদি।
► উচ্চ শব্দ।
► কানে আঘাত ও দুর্ঘটনা
► দীর্ঘদিনের কানের প্রদাহ বা ইনফেকশন
► শিশু ও কিশোরদের দীর্ঘদিনের টনসিলে ইনফেশন ও এডেনয়েডের জন্য মধ্যকর্ণে পানি জমা হয়ে শ্রবণে ত্রুটি হতে পারে।
► দীর্ঘদিন কানে ময়লা জমা হয়ে শ্রবণশক্তি হ্রাস পেতে পারে।
► বয়সজনিত কারণেও শ্রবণক্ষমতা হ্রাস পেতে পারে।
► ধূমপান, রক্তে চর্বি জমা, পুষ্টিহীনতা ও হঠাৎ খারাপ ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ।
প্রতিরোধ
► বংশ ও জিনগত বধিরতা দূর করতে সচেতনতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।
জেনেটিক রোগ সম্পর্কে ধারণা থাকা জরুরি। বিশেষ করে কনসেনগুয়াল ম্যারিজ তথা রক্ত সম্পর্কিত বিবাহ পরিহার করা।
► জন্মগত ত্রুটি দূর করতে নিরাপদ গর্ভধারণ ও প্রসব নিশ্চিত করা।
► জন্ম-পরবর্তী নবজাতকের সঠিক যত্ন ও চিকিৎসা নিশ্চিত করা।
► জন্মের পরপরই কানের শ্রবণশক্তি পরীক্ষা করা এবং সেটি স্বাভাবিক স্ক্রিনিং প্রক্রিয়ায় নিয়ে আসা।
চিকিৎসা
ক্লিনিক্যাল অ্যাসেসমেন্ট ও অডিওলজিক্যাল পরীক্ষার মাধ্যমে রোগ নির্ণয় করে ককলিয়ার ইমপ্লান্ট (অন্তঃকর্ণ প্রতিস্থাপন) নামক একটি অপারেশনের মাধ্যমে শিশুর শোনা ও কথা বলার ক্ষমতা ফিরিয়ে আনা সম্ভব। এটি একটি ব্যয়বহুল অপারেশন। তবে বাংলাদেশ সরকারের সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে ফ্রি ইমপ্লান্ট বরাদ্দ দেওয়ার মাধ্যমে এটি সহজলভ্য হয়েছে। বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (পিজি হাসপাতাল), সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ), জাতীয় নাক-কান-গলা ইনস্টিটিউট (মহাখালী) এবং ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে এই অপারেশন করা হয়।
পরামর্শ দিয়েছেন
ডা. মো. ফখরুল আলম
সহকারী অধ্যাপক
নাক-কান-গলা ও হেড-নেক সার্জারি বিভাগ
জয়নুল হক সিকদার উইমেন্স মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল, ঢাকা।