যুথি-কাজলসহ ২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা

সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ভোট গণনা কেন্দ্র করে মারামারির ঘটনায় রাজধানীর শাহবাগ থানায় মামলা করা হয়েছে। মামলায় স্বতন্ত্র থেকে সম্পাদক প্রার্থী অ্যাডভোকেট নাহিদ সুলতানা যুথি, বিএনপির প্যানেলের সম্পাদক প্রার্থী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলসহ ২০ জনকে আসামি করা হয়েছে। যুথি যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশের স্ত্রী।

শুক্রবার রাতে সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুর রহমান চৌধুরী সাইফ তাকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে বাদী হয়ে এ মামলা করেন। মামলার পর রাতেই বিএনপির ব্যারিস্টার ওসমান চৌধুরীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

মামলায় অন্য আসামিরা হলেন— অ্যাডভোকেট মো. জাকির হোসেন ওরফে মাসুদ (৫৫), অ্যাডভোকেট শাকিলা রৌশন, অ্যাডভোকেট কাজী বশির আহম্মেদ, ব্যারিস্টার উসমান, অ্যাডভোকেট আরিফ, অ্যাডভোকেট সুমন, অ্যাডভোকেট তুষার, রবিউল, ব্যারিস্টার চৌধুরী মৌসুমী ফাতেমা (কবিতা), সাইদুর রহমান জুয়েল (৪০), অলিউর, যুবলীগ নেতা জয়দেব নন্দী, মাইন উদ্দিন রানা, মশিউর রহমান সুমন, কামাল হোসেন, আসলাম রাইয়ান, অ্যাডভোকেট তরিকুল ও অ্যাডভোকেট সোহাগ। এ ছাড়া মামলায় ৩০-৪০ জন অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।

মামলার এজহারে বলা হয়েছে— আসামিরা ১নং আসামির নির্দেশে এবং প্রত্যক্ষ নেতৃত্বে বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্ট বার সমিতির নিচতলার শহিদ শফিউর রহমান মিলনায়তন রুমের দরজা ৩নং আসামি ১, ২, ও ৪নং আসামির পরামর্শক্রমে সুকৌশলে ও ষড়যন্ত্রমূলকভাবে অডিটরিয়ামের দরজা খুলে দিলে অস্ত্র হাতে জোরপূর্বক বেআইনি অনাধিকার প্রবেশ করে অকথ্য ভাষায় আমাকেসহ নির্বাচন সাব-কমিটির অন্যান্য সদস্যকে গালাগাল করে। আসামিদ্বয়ের হাতে থাকা লোহার রড দিয়ে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথার মাঝ বরাবর আঘাত করলে আমি বাধা দিতে গেলে আমার বাম পাশের কানের ওপরে মাথার অংশে স্বজোরে আঘাত করলে আমি মারাত্মকভাবে জখমপ্রাপ্ত হই। 

এ ছাড়া আরও বলা হয়েছে, আসামিরা কাঠের লাঠি, কাঠ ও প্লাস্টিকের চেয়ার দিয়ে অতর্কিতভাবে এলোপাতাড়ি মারপিট করে ও পা দিয়ে আঘাত করে আমার শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করে এবং আমার পরিহিত কাপড় ছিঁড়ে ফেলে। ওই আসামিরা আমার সঙ্গীয় ব্যারিস্টার জাকারিয়া হাবিবকে মারপিট করে আহত করে। একপর্যায়ে ৫নং আসামির হাতে থাকা কাঠের লাঠি দিয়ে ব্যারিস্টার জাকারিয়া হাবিবকে আঘাত করে তার ডান হাতের আঙুল ভেঙে ফেলে ও তার পরিহিত কাপড় ছিঁড়ে ফেলে এবং তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নিয়ে যায়। ১নং আসামি অ্যাডভোকেট রিনা বেগমকে চড়থাপ্পড় ও হুমকি দেয় এবং ১১নং আসামি গলায় চেপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করার চেষ্টা করে। অন্য অজ্ঞাতনামা আসামিরা অডিটরিয়ামের ভেতরে এলোপাতাড়ি ভাঙচুর ও অরাজকতা সৃষ্টি করে। যার ফলে নির্বাচনি দায়িত্বরত সদস্যদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে নির্বাচনি অন্যান্য কার্যক্রম সম্পূর্ণরূপে ভন্ডুল হয়ে যায়। একপর্যায়ে সব আসমিসহ ১নং আসামি নিজে অস্ত্রের মুখে নির্বাচন সাব-কমিটির প্রধান বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট আবুল খায়েরকে ভোট গণনা ছাড়াই সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত ঘোষণা করার জন্য বাধ্য করে। নির্বাচন সাব-কমিটির সব সদস্য জীবন বাঁচানোর উদ্দেশ্যে ভোট গণনার কাজ না করেই চলে যেতে বাধ্য হন। আমার পরিহিত প্যান্টের ডান পকেটে থাকা ১৫ হাজার টাকা ১২নং আসামি নিয়ে যায়। সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সিসি টিভি ফুটেজে ঘটনার বিষয়ে সব ধারণ করা আছে ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ওই ভিডিও ফুটেজ রয়েছে। অনুষ্ঠিত নির্বাচনের ভোট গণনা এবং ফলাফল ঘোষণার কাজ আসামিরা সম্পন্ন হতে না দিয়ে ১নং আসামিকে সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক হিসাবে নির্বাচিত ঘোষণা করার অবৈধ দাবিতে তার নেতৃত্বে উপরোক্ত ঘটনা ঘটায়।

সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির ২০২৪-২৫ সালের নির্বাচনে দুদিনে ৭ হাজার ৮৮৩ আইনজীবীর মধ্যে ৫ হাজার ৩১৯ আইনজীবী তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। 

এই দুই প্যানেলের বাইরে সভাপতি পদে ইউনুছ আলী আকন্দ এবং সাবেক অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এমকে রহমান নির্বাচন করছেন। 

এ ছাড়া সম্পাদক পদে সাদা ও নীল প্যানেলের বাইরে অ্যাডভোকেট নাহিদ সুলতানা যুথি ও ফরহাদ উদ্দিন আহমেদ ভূঁইয়া প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। কোষাধ্যক্ষ পদে অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করছেন।

LEAVE A REPLY