মণিপুরের বাড়ি থেকে সেনা কর্মকর্তাকে অপহরণ

ভারতের মণিপুরে বাড়ি থেকে একজন সেনা কর্মকর্তাকে শুক্রবার অপহরণ করা হয়েছে। নিরাপত্তা সংস্থার একটি সূত্রের বরাত দিয়ে এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। গত বছরের মে মাসে সীমান্তবর্তী রাজ্যটিতে জাতিগত সহিংসতা শুরু হওয়ার পর এ ধরনের চতুর্থ ঘটনা এটি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, থৌবাল জেলার বাসিন্দা জুনিয়র কমিশনড অফিসার (জেসিও) কনসাম খেদা সিংকে এদিন সকাল ৯টায় একটি গাড়িতে করে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিরা বাড়ি থেকে অপহরণ করেছে।

অপহৃত কর্মকর্তাকে খুঁজতে নিরাপত্তা বাহিনীর দলগুলো এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে উল্লেখ করে নিরাপত্তা সংস্থার সূত্রটি বলেছে, ‘তথ্য পাওয়ার পর জেসিওকে উদ্ধারের জন্য সব নিরাপত্তা সংস্থার সমন্বিত অনুসন্ধান অভিযান শুরু করা হয়েছে। আমরা জাতীয় সড়ক ১০২-এ চলমান সব যানবাহন তল্লাশি করছি। কেন তাঁকে অপহরণ করা হয়েছে তা আমরা জানি না। আমরা তা খতিয়ে দেখছি।

২০২৩ সালের মে মাস থেকে ছুটিতে বা দায়িত্বরত থাকা সেনা বা তাঁদের আত্মীয়দের ‘শত্রুবাদী উপায়ে’ লক্ষ্যবস্তু করার চতুর্থ ঘটনা এটি। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে সার্তো থাংথাং কম নামের আসাম রেজিমেন্টের এক সাবেক সেনা সদস্যকে অজ্ঞাতপরিচয় সশস্ত্র গোষ্ঠী অপহরণ করে হত্যা করেছিল। তিনি মণিপুরের লেইমাখংয়ে ডিফেন্স সার্ভিস কর্পসের (ডিএসসি) সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ভারতীয় সেনাবাহিনীর স্পিয়ার কর্পস এক্সে এক পোস্টে বলেছিল, ‘ঘটনার সময় পশ্চিম ইম্ফলে তিনি তাঁর বাড়িতে ছুটিতে ছিলেন।

দুই মাস পর পার্বত্য জেলা চুরাচাঁদপুর থেকে লেইমাখং যাওয়ার সময় চারজনকে অপহরণের পর হত্যা করে একটি অজ্ঞাত সশস্ত্র দল। নিহতরা জম্মু ও কাশ্মীরে কর্মরত একজন ভারতীয় সেনার পরিবারের সদস্য। তবে আহত বাবা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছিলেন। পরে চিকিৎসার জন্য সেনাবাহিনী তাঁকে বিমানে করে ডিমাপুরে নিয়ে যায়। অবশেষে তাঁকে আসামের গুয়াহাটির বেস হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

সূত্রের বরাত দিয়ে এনডিটিভি জানিয়েছে, বাবা গুয়াহাটির বেস হাসপাতালে চিকিৎসার পর এখন লেইমাখং মিলিটারি হাসপাতালে (এলএমএস) সুস্থ হচ্ছেন। সেনা সদস্যের মায়ের মৃতদেহ পাওয়া গেছে।

এ ছাড়া মণিপুর পুলিশের একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) ২৭ ফেব্রুয়ারি ইম্ফল শহরে তাঁর বাড়িতে হামলার শিকার হন। সে ঘটনায় হামলাকারীরা আরামবাই টেঙ্গোল (এটি) হিসেবে চিহ্নিত। হামলার পর মণিপুর পুলিশ কমান্ডোরা ইম্ফল ও অন্যান্য এলাকায় প্রতীকী প্রতিবাদ করেছিল।

পুলিশ একটি সূক্ষ্ম সতর্কবার্তায় ইঙ্গিত দিয়েছে, এ ধরনের ঘটনার কারণে সশস্ত্র বাহিনীর (বিশেষ) ক্ষমতা আইন পুনর্বহাল করার শর্ত নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করা হবে। নিরাপত্তা সংস্থার সূত্রটি বলেছে, ‘শান্তি ও স্বাভাবিকতা পুনরুদ্ধারের জন্য দিনরাত পরিশ্রমকারী নিরাপত্তা বাহিনীকে তাদের দায়িত্ব পালনের জন্য লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে। নিরাপত্তা বাহিনী ও তাদের পরিবারের ওপর জঘন্য উপায়ে আক্রমণের তীব্র নিন্দা জানানো প্রয়োজন এবং অপরাধীদের আইন অনুযায়ী ধরা ও শাস্তি দেওয়া উচিত।’

LEAVE A REPLY