সেই ইয়ারজান এখন সবার ‘জান’

‘মেয়েরা আবার ফুটবল খেলে নাকি! বোকামি করো না। কেউ বিয়ে করবে না তোমার মেয়েকে।’ ইয়ারজানের ফুটবলপ্রেম দেখে পাড়া-প্রতিবেশীরা তার বাবা আবদুর রাজ্জাককে নিষেধ করতেন মেয়েকে ফুটবল খেলতে দিতে।

রাজ্জাকের মনে পড়ে, ৬-৭ বছর বয়স তখন ইয়ারজানের। বাবার কাছে আবদার করল, ‘আমাকে বল কিনে দেবা।’ ওইটুকু বয়সে কাগজের বল বানিয়ে খেলত ইয়ারজান। রাজ্জাক তাকে ৬৫ টাকা দিয়ে বল কিনে দেন। মেয়ের মনে গেঁথে দেন ফুটবলার হওয়ার সুপ্ত বাসনা।

গতকাল নেপালের কাঠমান্ডুতে মেয়েদের সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ ফুটবল ফাইনালে টাইব্রেকারে ভারতের তিনটি শট রুখে দিয়ে বাংলাদেশকে শিরোপা জেতাতে বড় ভ‚মিকা রেখেছে নবম শ্রেণিতে পড়–য়া ইয়ারজান। তার বাবা বলছিলেন, ‘আমি খুবই আনন্দিত। আমি এখন চাই, আমার মেয়ে সিনিয়র জাতীয় দলে খেলুক। আমি যা পাইছি, তা কোটি টাকা দিয়েও পাওয়া সম্ভব নয়।’

অথচ, ইয়ারজান যখন অনুশীলনের জন্য মায়ের দেওয়া টাকায় ১২ কিলোমিটার দূরে শহরে যেত, পাড়া-প্রতিবেশীরা তার বাবাকে বলত, ‘মেয়েরা আবার ফুটবল খেলে নাকি! বোকামি ছাড়া এ আর কী! তোমার মেয়েকে কেউ বিয়ে করবে না।’

পঞ্চগড়ের হাড়িভাঙ্গার প্রত্যন্ত গ্রাম খোপড়াবান্দির ইয়ারজান এখন মেয়েদের অনূর্ধ্ব-১৬ দলের ‘জান’। কথায় বলে, যে রাঁধে সে চুলও বাঁধে। ইয়ারজান শুধু ফুটবল খেলে না, শিরোপাও জেতে।

LEAVE A REPLY