গাজীপুরে আগুন : ‘আব্বা আমার জন্য দোয়া কইরো

গাজীপুরে আগুনের ঘটনায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসা নিচ্ছেন দগ্ধ ছেলে মো. নাদেন (২২)। তিনি এখন পোস্ট অপারেটিভ ওয়ার্ডে রয়েছেন। ওয়ার্ডের বাইরে বসে আছেন তার বাবা আব্দুর রহিম। তিনি বলেন, ‘আমি ইফতার মুখে দিছি।

ঠিক ওই সময় আমার এক ভাগিনা ফোন করে জানায়, নাদেন আগুনে পুড়ে গেছে। তাকে বার্ন ইনস্টিটিউটে নেওয়া হচ্ছে।’ 

নাদেনের বাবা আরো বলেন, ‘আমি তখন কেরানীগঞ্জ ছিলাম। ছেলে স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে কালিয়াকৈর টপস্টার এলাকায় থাকত।

আমি সংবাদ শুনে হাসপাতালে ছুটে আসি। পরে খোঁজ করে তাকে পাই। দেখা করতে গিয়ে ছেলের সঙ্গে কথা হয়। সে আমাকে  বলেছিল, ‘আব্বা আমার জন্য দোয়া কইরো।

’ এ কথা বলে তিনি চোখের পানি আর ধরে রাখতে পারেননি, কেঁদে ফেলেন। এবং বলতে থাকেন, ‘কী বলবো ভাই, আমার ছেলের প্রায় পুরো শরীরটা পুড়ে গেছে।’

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তার ৮৫ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে, সাথে শ্বাসনালি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। 

মো. নাদেনের বাড়ি জামালপুর জেলার দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার মাকনেরচর গ্রামে। তিন ভাইয়ের মধ্যে সে সবার বড়।

সে এসএসসি পাস করার পর চার বছর আগে বিয়ে করে। তার তামিম নামে দুই বছরের সন্তান রয়েছে। সে টপস্টার এলাকায় তার পরিবার নিয়ে থাকত। স্থানীয় একটি পোশাক কারখানায় কাজ করত সে। 

আমি কেরানীগঞ্জ থেকে দিনমজুরের কাজ করি। নাদেনের মা আনোয়ারা দুই সন্তানকে নিয়ে গ্রামে থাকে। সেখানে দুই ছেলে রনিক (১৭)  এসএসসি দিয়েছে ও জোবায়ের মারুফ (১২) অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। 

উল্লেখ্য, গত বুধবার (১৩ মার্চ) ইফতারের আগ মুহূর্তে টপ স্টার গার্মেন্টস ফ্যাক্টরির কাছে একটি টিনশেড কলোনিতে আগুন লাগে। এতে নারী-শিশুসহ ৩৬ জন দগ্ধ হয়। পরবর্তী সময়ে দগ্ধ ও আহত ৩২ জনকে রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। ইতিমধ্যে এ ঘটনায়  দুজন রোগী মারা গেছেন। বর্তমানে ২৯ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। 
 

LEAVE A REPLY