প্রতীকী ছবি
লিভার মানবদেহের শক্তিশালী একটি অঙ্গ। লিভারে চর্বি জমলে সেটাকে ফ্যাটি লিভার বা ‘হেপাটিক স্টেটোসিস’ বলে। বর্তমানে সারা বিশ্বে নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার রোগীদের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। মূলত অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসকে নন-অ্যালকোহলিক লিভার ডিজিজের কারণ হিসেবে দায়ী করেন চিকিৎসকরা।
এ ছাড়া দীর্ঘদিন স্টেরয়েড সেবনের কারণেও এমনটি হতে পারে।
হঠাৎ করে ওজন কমা, পেট ফুলে যাওয়া, খাওয়ার সময় বমি বমি ভাব ও শরীরের অন্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ফুলে যাওয়ার মতো লক্ষণ দেখা দেয় এই রোগে। রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে লিভারে চর্বি জমতে থাকায় একপর্যায়ে লিভার সিরোসিস হতে পারে। চিকিৎসকের দেওয়া একের পর এক ওষুধ খেয়ে সমাধান না পেয়ে দুশ্চিন্তায় ভোগেন অনেকে।
তবে ভালো খবর হলো, জীবনযাপন ও খাদ্যাভ্যাসের কিছু পরিবর্তন করলেই ফ্যাটি লিভার থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। যেসব পরিবর্তন ফ্যাটি লিভারের সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে জেনে নিন…
সুষম খাদ্যাভ্যাস
খাদ্যতালিকায় ফাইবারসমৃদ্ধ খাবার রাখতে হবে। এতে বারবার ক্ষুধার প্রবণতা কমে এবং পেট অনেকক্ষণ পর্যন্ত ভরা থাকে। বিভিন্ন ধরনের সবুজ শাক-সবজি যেমন- পালং শাক, ব্রুকলি, শিম, বরবটি, গাজরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফইবার।
এই খাবারগুলোর পাশাপাশি দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় বিভিন্ন ধরনের মৌসুমি ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার। এ ছাড়া দুধ ও দুগ্ধজাতীয় খাবারের মধ্যে টক দই খাদ্যতালিকায় রাখতে হবে। এটি প্রোবায়োটিক হিসেবে কাজ করে এবং হজমে সহায়তা করে। সঙ্গে শর্করা ও চিনিযুক্ত খাবার পরিহার করতে হবে।
অ্যারোবিক ব্যায়াম
প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ মিনিটের মতো অ্যারোবিক ব্যায়াম লিভারের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।
এ ক্ষেত্রে প্রতিদিন হাঁটাহাঁটি, সাঁতার ও সাইক্লিং লিভারের চর্বি ঝরাতে বেশ কার্যকর। এ জন্য প্রতিদিন ব্যায়ামের একটি রুটিন করুন এবং সেই অনুযায়ী আগাতে থাকুন। অ্যারোবিক ব্যায়াম মেটাবলিজম বাড়িয়ে চর্বি ঝরাতে সাহায্য করে।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ
বেশির ভাগ ডায়াবেটিস রোগী ফ্যাটি লিভারের ঝুঁকিতে থাকেন। ফ্যাটি লিভার থেকে মুক্তি পেতে প্রতিনিয়ত রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখা প্রয়োজন। এ জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ
ফ্যাটি লিভারের অন্যতম কারণ হলো রক্তে অত্যধিক মাত্রায় কোলেস্টেল থাকা। অস্বাস্থ্যকর ও ভাজাপোড়া খাওয়ার অভ্যাস থেকে লিভারে কোলেস্টেরলের পরিমাণ বেড়ে লিভার সিরোসিসের মতো রোগ সৃষ্টি হতে পারে। এ জন্য সুষম খাদ্যাভ্যাস ও ব্যায়ামের মাধ্যমে শরীরের কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ফ্যাটি লিভার থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
ফ্যাটি লিভার থেকে মুক্তির জন্য জীবনযাপনের এসব পরিবর্তনই যথেষ্ট।
সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া