পঞ্চাশোর্ধ্ব ব্যক্তিরা এখনো করোনার ঝুঁকিতে

ফাইল ছবি

দেশে প্রথম করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছিল ২০২০ সালের ৮ মার্চ। প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ভাইরাসটিতে এখনো প্রতি সপ্তাহে গড়ে একজনের মৃত্যু হচ্ছে। দৈনিক শনাক্ত হচ্ছে গড়ে ৪০ জনের বেশি।

যাঁরা ৫০ বছরের বেশি বয়সী ও দীর্ঘমেয়াদি বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত, তাঁরা এখনো করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন বলে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, করোনায় মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ৭৯.৫৬ শতাংশের বয়স পঞ্চাশোর্ধ্ব। শূন্য থেকে ১০ বছর বয়সের ০.৩১ শতাংশ, ১১ থেকে ২০ বছরের ০.৬৯ শতাংশ, ২১ থেকে ৩০ বছরের ২.৩৮ শতাংশ ও ৩১ থেকে ৪০ বছরে ৫.৮৯ শতাংশ মারা গেছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভাইরাসটি অনবরত পরিবর্তন হচ্ছে।

এতে ভাইরাসের তীব্রতা কমে এসেছে। এ কারণে সারা পৃথিবীতে এখন করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে এখনো সংক্রমণ হচ্ছে। যাঁরা দীর্ঘমেয়াদি রোগে ভুগছেন, তাঁদের নিয়মিত বিভিন্ন ওষুধ খেতে হয়।

বিশেষ করে যাঁরা ডায়াবেটিস, কিডনি, হৃদরোগ, উচ্চরক্তচাপে ভুগছেন তাঁরা এখনো করোনার ঝুঁকিতে।

সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. বে-নজির আহমেদ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘করোনা আমাদের শিখিয়ে গেছে মানসম্পন্ন সেবা না দিলে রোগীর মৃত্যু হয়। কিন্তু সেটিরও উন্নতি দেখা যাচ্ছে না। যে কারণে এখনো অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। এ ধরনের মহামারিতে সক্ষমতা বৃদ্ধির প্রয়োজন হয়, সেটিও খুব বেশি হয়নি।

অর্থাৎ স্বাস্থ্যব্যবস্থা করোনার আগে যা ছিল, করোনার পরও দৃশ্যমান কোনো উন্নতি হয়নি।

গত এক দিনে শনাক্ত ৩৪

দেশে গতকাল রবিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৩৪ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ সময় কারো মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি। নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ৭.০৫১ শতাংশ। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এ তথ্য দিয়েছে।

অধিদপ্তরের তথ্য মতে, এ পর্যন্ত করোনা শনাক্ত হয়েছে ২০ লাখ ৪৯ হাজার ১৫৫ জনের দেহে। তাদের মধ্যে সুস্থ হয়েছে ২০ লাখ ১৬ হাজার ২৯২ জন। আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে মারা গেছে ২৯ হাজার ৪৯২ জন। নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে মোট শনাক্তের হার ১৩.৮ শতাংশ। আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যুর হার ১.৪৪ শতাংশ।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমানে যারা শনাক্ত হচ্ছে তাদের বেশির ভাগই নতুন উপধরন জেএন.১-এ সংক্রমিত। ২০২০ সালে দেশে করোনা শনাক্ত হয় পাঁচ লাখ ১৩ হাজার ৫১০ জন। মৃত্যু হয় সাত হাজার ৫৫৯ জনের। ২০২১ সালে শনাক্ত হয় ১০ লাখ ৭২ হাজার ২৯ জন। মৃত্যু হয় ২০ হাজার ৫১৩ জনের। ওই বছরে সর্বোচ্চ ১৬ হাজার ২৩০ জন শনাক্ত হয় ২৮ জুলাই। ২০২২ সালে শনাক্ত হয় চার লাখ ৫১ হাজার ৫৮৬ জন। মৃত্যু হয় এক হাজার ৩৬৮ জনের। ২০২৩ সালে শনাক্ত হয় ৯ হাজার ১৮৯ জন। মৃত্যু হয় ৩৭ জনের।

LEAVE A REPLY