রুমায় সোনালী ব্যাংক লুট ম্যানেজার অপহরণ

রুমা উপজেলায় সোনালী ব্যাংক লুট করেছে পাহাড়ের বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সংগঠন কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)। এছাড়া পুলিশ ও আনসার বাহিনীর ১৪টি অস্ত্র, মোবাইল ফোন নিয়ে গেছে। রাস্তা থেকে ব্যাংক ম্যানেজার নেজাম উদ্দিনকে অপহরণ করা হয়েছে। এদিকে অস্ত্রধারীদের হামলায় ইউএনও অফিস ও ব্যাংকের বেশ কয়েকজন সদস্য আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী, পুলিশসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন জানান, রুমায় ব্যাংক লুট ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অস্ত্র লুটের ঘটনা ঘটেছে। ব্যাংক ম্যানেজারকে ধরে নিয়ে যাওয়ার খবরও পেয়েছি। তিনি বলেন, নেটওয়ার্কের সমস্যায় বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে সেনাবাহিনীসহ যৌথ বাহিনীর সদস্যরা উদ্ধার অভিযানে নেমেছে। উপজেলাজুড়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে রুমা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ মাহবুবুল হক বলেন, রাত ৯টার দিকে কুকি চিনের একটি দল হঠাৎ উপজেলা পরিষদ ঘেরাও করে। এরপর তারা ১০ জন কর্মরত পুলিশ সদস্যের কাছ থেকে ১০টি অস্ত্র এবং পরিষদে কর্মরত আনসারের কাছ থেকে চারটি অস্ত্র ও ৩৫ রাউন্ড গুলি নিয়ে যায়। পরবর্তী সময়ে উপজেলা প্রশাসনের ভেতরে থাকা সোনালী ব্যাংকে প্রবেশ করে ম্যানেজারকে অপহরণ করে। এছাড়া যাওয়ার সময় মসজিদে নামাজরত মুসল্লিদের মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ নিয়ে যায়।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও স্থানীয়রা জানায়, রুমা উপজেলা পরিষদসংলগ্ন রুমা সোনালী ব্যাংকের শাখা ঘেরাও করে লুট করে কেএনএফ সশস্ত্র সংগঠন। এ সময় ব্যাংকের ভোল্টের তালা ভেঙে প্রায় দেড় কোটি টাকা লুট করা হয়। বাধা দেওয়ায় পুলিশ, আনসার বাহিনীর সদস্যদের মারধর করে ১৪টি অস্ত্র ছিনিয়ে নেয়। যাওয়ার সময় তারাবি নামাজ শেষে ফেরার পথে সোনালী ব্যাংকের রুমা শাখার ম্যানেজার নেজাম উদ্দিনকে অপহরণ করে সন্ত্রাসীরা। 

অপহৃত ব্যাংক ম্যানেজার, লুণ্ঠিত অস্ত্র ও টাকা উদ্ধারে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা অভিযানে নেমেছে। রুমা উপজেলাজুড়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। এ ঘটনার পর ইউএনও অফিসে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্টরা তাৎক্ষণিক জরুরি বৈঠক করেছে। ঘটনাস্থলসহ আশপাশের এলাকাগুলোয় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে রুমা উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) দিদারুল আলম জানান, সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা তাণ্ডব চালিয়ে সোনালী ব্যাংকের প্রায় দেড় কোটি টাকা লুট করেছে। এছাড়া ব্যাংক ও ইউএনও অফিসের স্টাফদের মারধর করে তাদের মোবাইল ফোন, নগদ টাকা ছিনতাই এবং পুলিশ ও আনসারের ১৪টি অস্ত্র লুট করেছে। যাওয়ার সময় পথ থেকে ব্যাংক ম্যানেজারকে অপহরণ করে। মারধরে বেশ কয়েকজন সামান্য আহত হয়েছে। ব্যাংক থেকে দেড় কোটি টাকা লুট করা হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন সরকারি কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধি বলেন, বিদ্যুৎ না থাকার সুযোগটি কাজে লাগিয়ে তাণ্ডব চালিয়েছে সশস্ত্র সন্ত্রাসী বাহিনী। প্রায় ১০০ জনের মতো সশস্ত্র সন্ত্রাসী রুমা উপজেলা পরিষদসহ আশপাশের এলাকা ঘেরাও করে লুটপাট চালিয়েছে। রুমা উপজেলাজুড়ে এখন থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। তাণ্ডব ও লুটপাটের সঙ্গে পাহাড়ের সশস্ত্র সংগঠন কেএনএফ জড়িত।

রুমার ইউপি চেয়ারম্যান উহ্লামং মারমা বলেন, ডাকাত দল সোনালী ব্যাংক লুট করেছে বলে শুনেছি। পুলিশ ও আনসারের অস্ত্রও লুট করা হয়েছে। রুমায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

LEAVE A REPLY