রাজশাহী, ঢাকা ও খুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে গতকাল বুধবার মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে গেছে। আগামী তিন দিন এই তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আজ বৃহস্পতিবার দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়বে এবং পরবর্তী দুই দিন তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকবে। তবে বাতাসে জলীয় বাষ্প বেড়ে গরমের অনুভূতি বাড়তে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর পূর্বাভাসে এই তথ্য জানিয়েছে।
আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদ জানান, তাপপ্রবাহের পাশাপাশি আজ বৃহস্পতিবার কিশোরগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলাসহ ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় বৃষ্টি বা শিলাবৃষ্টি হতে পারে। পরদিন দুই বিভাগ এবং তৃতীয় দিন সিলেট বিভাগে এই বৃষ্টিপাত হতে পারে। পরবর্তী দিনগুলোতে বৃষ্টির প্রবণতা কমে আসবে।
একই সঙ্গে সারা দেশের তাপমাত্রা কমতে পারে।
গতকাল সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে রাজশাহী, পাবনার ঈশ্বরদী ও খুলনার চুয়াডাঙ্গায় ৩৮.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এদিকে তীব্র তাপপ্রবাহে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অন্তত ২৫টি জেলায় চলতি মৌসুমে ধান উৎপাদন ব্যাহত হতে পারে বলে জানিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়ের ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট। তবে এমন পরিস্থিতি মোকাবেলায় ইনস্টিটিউট কিছু পরামর্শ দিয়েছে।
ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের সতর্কবার্তায় বলা হয়, আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী ৯ এপ্রিল পর্যন্ত দেশের বেশির ভাগ এলাকায়, বিশেষ করে ঢাকা, রাজশাহী ও খুলনা জেলার বেশির ভাগ জায়গায় মাঝারি থেকে তীব্র তাপপ্রবাহ বিরাজ করতে পারে। এতে রাজশাহী, মানিকগঞ্জ, মাদারীপুর, ফরিদপুর, কুষ্টিয়া, জয়পুরহাট, নওগাঁ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, মাগুরা, ঝিনাইদহ, নড়াইল, যশোর, সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট ও গোপালগঞ্জ জেলার ধান উৎপাদন ঝুঁকিতে পড়বে।
ধান গবেষকরা জানান, তাপপ্রবাহ থেকে ফসল রক্ষার জন্য জমিতে সব সময় ৫ থেকে ৭ সেন্টিমিটার পানি ধরে রাখতে হবে। শীষে ব্লাস্ট রোগ দেখা দিতে পারে। প্রতিরোধ করতে আগে থেকেই ট্রুপার ৮ গ্রাম বা নেটিভো ৬ গ্রাম ১০ লিটার পানির সঙ্গে মিশিয়ে ৫ শতাংশ জমিতে পাঁচ দিন ব্যবধানে দুইবার স্প্রে করতে হবে।
এ ছাড়া ধানে বিএলবি ও বিএলএস রোগ ব্যাপকভাবে দেখা যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে ৬০ গ্রাম থিওভিট, ৬০ গ্রাম পটাশ এবং ২০ গ্রাম জিংক ১০ লিটার পানিতে সমভাবে মিশিয়ে ৫ শতাংশ জমিতে স্প্রে করতে হবে।