ছবি : সংগৃহীত
ইসরায়েলের ওপর ইরানের হামলার শঙ্কায় দেশটিতে কর্মরত নিজ দেশের নাগরিকদের প্রতি ভ্রমণ সতর্কতা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস জানায়, সতর্কতার অংশ হিসেবে দূতাবাস কর্মীদের জেরুজালেমের বাইরে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। এর আগে সিরিয়ায় ইরানি কনস্যুলেটে হামলায় ১৩ জন নিহত হন। ওই হামলায় বেশ কয়েকজন সামরিক কর্মকর্তা প্রাণ হারান।
তাদের মধ্যে কুদস ফোর্সের একজন সিনিয়র কমান্ডার ছিলেন। ইরান এ ঘটনার প্রতিশোধ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লর্ড ক্যামেরন ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ফোন করে বিষয়টিকে আর বেশি দূর গড়াতে না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তবে ইসরায়েল কনস্যুলেটে হামলার দায় স্বীকার করেনি।
কিন্তু ধারণা করা হচ্ছে ইসরায়েল এর নেপথ্যে ছিল। গাজার যুদ্ধ যাতে পুরো অঞ্চলে ছড়িয়ে না পড়ে সে জন্য জোর কূটনৈতিক তৎপরতা চালানো হচ্ছে। এর মধ্যেই এমন হামলার ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয় সময় গতকাল বুধবার (১১ এপ্রিল) মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সতর্ক করে বলেন, ইরানের দিক থেকে তীব্র আক্রমণের হুমকি আছে।
হামলা থেকে রক্ষায় ইসরায়েলকে সাহায্যের প্রতিশ্রুতিও দেন তিনি। মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয় কমান্ডার এরিক কুরিল্লার নেতৃত্বে। তিনি ইতিমধ্যে নিরাপত্তা হুমকি নিয়ে কথা বলতে ইসরায়েল সফর করছেন। পেন্টাগন বলছে, সফরটি পূর্বনির্ধারিতই ছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক পরিস্থিতির কারণে তা এগিয়ে আনা হয়েছে।
এদিকে ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দুল্লাহিয়ানের সঙ্গে ফোনালাপের পর লর্ড ক্যামেরন বলেন, ‘স্পষ্ট করেই বলছি… ইরানের উচিত হবে না মধ্যপ্রাচ্যকে বড় সংঘাতের মধ্যে টেনে নিয়ে যাওয়া।’ তিনি আরো বলেন, ‘কোথাও একটা ভুল হয়ে গেলে তা আরো বড় সংঘাতে মোড় নিতে পারে, এটাই বেশি ভাবাচ্ছে আমাকে।’
ইরানের পাল্টা জবাব কী ধরনের হবে সেটা যেমন পরিষ্কার নয়, তেমনি হামলা সরাসরি ইরানের দিক থেকেই আসবে নাকি ইরান সমর্থিত কোনো বিরোধী গোষ্ঠীর মাধ্যমে হবে, তাও স্পষ্ট নয়। তবে ইরানের কর্মকর্তাদের একজন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছিলেন, ‘ইসরায়েলে দূতাবাসগুলো আর নিরাপদ নয়।’ এ থেকে ধারণা করা যেতে পারে, কোনো কনস্যুলেট ভবনেই হামলার আশঙ্কা রয়েছে। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলাপে বলেছেন, ‘ইসরায়েলি ভূখণ্ডে সরাসরি ইরান আক্রমণ চালালে জবাবে ইরানের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র দপ্তরও ইসরায়েলের জন্য ভ্রমণ সতর্কতা জারি করেছে। তারা বলেছে, দেশটির সরকার ইসরায়েলি ভূখণ্ডে ইরানি হামলার আশঙ্কা করছে। এমন হামলা হলে, সংঘাতকে বড় পরিসরে ছড়িয়ে যেতে পারে। এদিকে এমন পরিস্থিতিতে জার্মান বিমান পরিবহন সংস্থা লুফথানসা ইরানের রাজধানী তেহরানে তাদের ফ্লাইট স্থগিতের মেয়াদ শনিবার পর্যন্ত বাড়িয়েছে।
সূত্র : বিবিসি
