কোচ ফিরতেই বিশ্বকাপের তোড়জোড় শুরু

পরিবারের এক সদস্যের অসুস্থতার কারণে শ্রীলঙ্কা সিরিজ অসমাপ্ত রেখেই সিডনিতে ছুটতে হয়েছিল চন্দিকা হাতুরাসিংহেকে। সুবাদে লম্বা ছুটি কাটিয়ে আগের দিন রাতে ঢাকায় ফিরেছেন বাংলাদেশ দলের হেড কোচ। গতকাল মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে হাজিরা দেওয়ারও কথা ছিল। দর্শক হিসেবে দেখার কথা ছিল ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেটের সুপার লিগে আবাহনী-প্রাইম ব্যাংকের ম্যাচও।

তবে শেষ পর্যন্ত স্টেডিয়ামে না এলেও তাঁর তৎপরতা শুরু হয়ে গেছে এদিন থেকেই। লিগের ম্যাচ দেখার পর গাজী আশরাফ হোসেনের নেতৃত্বাধীন নির্বাচক কমিটির সবাই ছুটলেন হেড কোচের তৎপরতার সঙ্গী হতেও।

হাতুরাসিংহে ঢাকায় ফেরার পর এই দিনেই যে একাধিক বৈঠকের সূচি পূর্বনির্ধারিত ছিল। এর একটি জাতীয় দলের কোচিং স্টাফের সব সদস্য এবং অধিনায়কের সঙ্গে।

আরেকটি হেড কোচ-নির্বাচক প্যানেল-অধিনায়কের ত্রিমুখী। যদিও তিন সংস্করণে বাংলাদেশের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত শেষ পর্যন্ত সশরীরে নির্বাচক ও কোচের সঙ্গে সভায় যোগ দিতে পারেননি। তার পরও তিনি যুক্ত হয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন নির্বাচক হান্নান সরকার, ‘(লিগ) ম্যাচের পর ক্লান্তির কারণে শান্ত (নাজমুল) এই সভায় যোগ দিতে পারেনি। তবে ওর সঙ্গে আমাদের ফোনে কথা হয়েছে।

এই সভাটি মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামের বিসিবি কার্যালয়ে হয়নি। বৈঠক করতে সবাই ছোটেন গুলশানের একটি অভিজাত হোটেলে, যেখানে জাতীয় দলের বিদেশি কোচদের রাখা হয়। এই সভার মধ্য দিয়েই যেন বাংলাদেশ দলের জন্য টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের তোড়জোড়ও শুরু হয়ে গেল। সামনে যদিও আগে জিম্বাবুয়ে সিরিজ। তবে ৩ মে থেকে চট্টগ্রামে সেই সিরিজ শুরুর দুই দিন আগেই আরেকটি জরুরি কাজও করতে হবে বিসিবিকে।

১ জুন থেকে যুক্তরাষ্ট্র এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজে শুরু হতে যাওয়া কুড়ি-বিশের বিশ্ব আসরের জন্য ১৫ জনের চূড়ান্ত দল জমা দিতে হবে আইসিসিতে। সেই দল জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ১ মে। তাই একই সঙ্গে জিম্বাবুয়ে সিরিজ ও বিশ্বকাপের দল নিয়ে পরিকল্পনায় বসতে হয়েছে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের। তবে ১৫ জনের বিশ্বকাপ দল জমা দেওয়ার পরও তাতে পরিবর্তন আনার সুযোগ থাকবে। একই নিয়ম ছিল ভারতে অনুষ্ঠিত ওয়ানডে বিশ্বকাপের সময়ও। একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যেকোনো পরিবর্তন আনতে হলে কোনো ব্যাখ্যা দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ক্ষেত্রে সেই পরিবর্তন আনার জন্য বেঁধে দেওয়া সময়সীমা ১ জুন পর্যন্ত।

এ কারণেই জিম্বাবুয়ে সিরিজ এবং বিশ্বকাপের দল একই হওয়ার কোনো কারণ নেই। পরিবর্তন যখন-তখন আনার সুযোগ দল জমা দেওয়ার পরও এক মাস থাকবে বলে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পরীক্ষা-নিরীক্ষার ভাবনাও আছে নির্বাচকদের। হান্নান সে রকম ইঙ্গিতই দিলেন, ‘আমাদের সুবিধা হলো জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হোম সিরিজ খেলছি আমরা। এই সিরিজে আবার পাঁচটি ম্যাচ। তাই অনেককে দেখে নেওয়ারও সুযোগ পাচ্ছি আমরা। (১ মে স্কোয়াড জমা দেওয়ার পর) দলে যেহেতু পরিবর্তন আনার সুযোগ আছেই, তাই বিশ্বকাপ স্কোয়াড আমরা জিম্বাবুয়ে সিরিজের পরেই দেব।’

এর আগে জিম্বাবুয়ে সিরিজের জন্য ২৮ এপ্রিল থেকে চট্টগ্রামে অনুশীলন শিবির শুরু করবে বাংলাদেশ। একই দিনে বাংলাদেশে আসবে জিম্বাবুয়েও। সিরিজের প্রথম তিনটি ম্যাচ চট্টগ্রামে (৩, ৫ ও ৭ মে)। ১০ ও ১২ মে সিরিজের শেষ ম্যাচ দুটো মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে। বাংলাদেশের বিশ্বকাপ ৭ জুন শুরু হলেও নাজমুল হোসেনরা দেশ ছাড়বেন বেশ আগেই। কারণ ডালাসে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজও আছে তাঁদের। ম্যাচ তিনটি হবে ২১, ২৩ ও ২৫ মে।

LEAVE A REPLY