‘আমি যে নিপুণকে পছন্দ করতাম, তাকে এখন অচেনা লাগছে’

মিশা সওদাগর। ছবি: সংগৃহীত

এক সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী ও শিল্পী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক নিপুন আক্তার বলেছেন, ‘মিশা-ডিপজল দুজনই মূর্খ। তাদের সঙ্গে কথা বলার কোনো ধরনের ইচ্ছাই আমার নেই। তা ছাড়া মিশা ভাই তো ভীষণ মিথ্যুক একজন মানুষ। তাদের সঙ্গে এখন এই বিষয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে কথা হবে।

এটাই সবচেয়ে ভালো উপায়।’

এমন কথায় খানিকটা ক্ষেপেছেন শিল্পী সমিতির বর্তমান সভাপতি ও অভিনেতা মিশা সওদাগর। একটি গণমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, আমাদের শব্দচয়নে সংযত হলে সম্মানিত বোধ করি। আমি ঢাকাইয়া, ভিলেনের চরিত্রে অভিনয় করি—তিনবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছি।

তিন যুগ ধরে অভিনয় করছি। আমি কমিটেড না হলে অভিনয়জীবন তো কোনোভাবে তিন যুগের হতো না। চলচ্চিত্রের আমরা একে অপরকে যে কথাই বলি না কেন, অবশ্যই সংযত হয়ে বলা উচিত। নিপুণের সঙ্গে শুটিংয়ের বাইরে কিন্তু কোনো দিন বসে আমি এক কাপ চা-ও খাইনি।

দেশ-বিদেশে তিনটি অনুষ্ঠান করেছি, তা-ও কমিটমেন্ট ঠিক রেখে।’

তিনি নিপুনের কাছে প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘আমাকে নিপুণ কথাটা কোন ভিত্তিতে বলল, পুরো ইন্ডাস্ট্রির কাছে প্রশ্ন রইল। ৩ যুগ ধরে কাজ করছি, ১০টার মতো স্ক্রিপ্ট এখনো হাতে আছে। তাহলে চলচ্চিত্রের মানুষেরা এত লম্বা সময় ধরে আমার সঙ্গে কাজ কীভাবে করল! এমন কথা নিপুণের বলার আগে আমার ব্যক্তিত্ব নিয়েও তার ভাবা উচিত ছিল, আমি কাদের কাদের সঙ্গে এত লম্বা সময় ধরে কাজ করেছি। আমি যদি মিথ্যুকই হতাম, তাহলে এত লম্বা সময় ধরে কোনো প্রযোজক, পরিচালক আমাকে নিয়ে কি কাজ করতেন? নিপুণ কিন্তু আমার অনেক জুনিয়র, বয়সেও ছোট, ছোট বোনের মতো হবে—আমার ব্যক্তিত্বকে নিয়ে এভাবে বলাটা গোটা চলচ্চিত্র পরিবারকে ছোট করা হলো।

এদিকে শিল্পী সমিতির বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ডিপজলও কদিন আগে নিপুনকে উদ্দেশ্যে করে বলেছেন ‘কেস খেলবা আসো। যেটা খেলার মন চায় সেটাই খেলো।’ বিষয়টি কিভাবে দেখছেন মিশা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘প্রত্যেকের একটা কথা বলার ধরন আছে। সবচেয়ে ভালো হয়, প্রশ্নটা ডিপজল ভাইকেই করা উচিত। চলাফেরা, বাচনভঙ্গি, শব্দচয়ন, শারীরিক, মানসিক ও শাব্দিক সত্তা মিলিয়ে একজন মানুষের ব্যক্তিত্ব। ডিপজল ভাই তো কোনো খারাপ শব্দ বলেন নাই। ডিপজল ভাইয়ের কথা বলার স্টাইল আলাদা, আমারটাও আলাদা। কথা বলার পদ্ধতিটা আমরা লালন করি, তা একদিনে সম্ভব না। আর এ ধরনের কথা ডিপজল ভাইয়ের একদম স্বাভাবিক কথা ‘

এদিকে নিপুনের রিট করার কারণ হিসেবে মিশা মনে করেন পেছনে কেউ কলকাঠি নাড়ছে। না হলে ভোটের পরদিন মালা পরিয়ে দেয়ার পরও আবার রিট করার কোনো কারণ নেই।

এদিকে নিপুণকে নিয়ে মিশা বলেন, ‘নিপুণকে আমি পছন্দ করি কিন্তু। ওকে পছন্দ না করার বিন্দুমাত্র কোনো কারণ নাই। তবে আমি যে নিপুণকে পছন্দ করতাম, তাকে এখন অচেনা লাগছে। সে ডিপজল ভাইকে নিয়ে যে শব্দ ব্যবহার করল, এটা দুঃখজনক।’

প্রসঙ্গত, ১৯ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন। যেখানে জয় লাভ করে মিশা-ডিপজল পরিষদ। ডিপজলের কাছে ১৬ ভোটে হেরে ফলাফলও মেনে নিয়েছিলেন নিপুণ! এমনকি ফলাফল ঘোষণার সময় নব নির্বাচিতদের ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে নিয়েছিলেন! কিন্তু এই ফলাফল বাতিল চেয়ে এখন আদালতের দ্বারস্ত হয়েছেন নিপুণ। নির্বাচনে অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ এনে এই ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠনের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে রিটে। পাশাপাশি নির্বাচনের ফল বাতিল চেয়ে নতুন করে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার নির্দেশনাও চাওয়া হয়েছে।

LEAVE A REPLY