মধ্যমণি ফোডেন

লিওনেল মেসি, আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা, রবার্ত লেভানদোস্কির মতো বিশ্বসেরা ফুটবলারদের কোচিং করানোর সুখ্যাতি আছে পেপ গার্দিওলার। ম্যানচেস্টার সিটিতে যোগ দেওয়ার পর স্প্যানিশ এই কোচকে অবাক করে দিলেন এক তরুণ। মেসি-ইনিয়েস্তার মতো প্রতিভাবানদের কোচ যাঁকে দেখেই বিস্মিত হয়েছিলেন, তিনি ফিল ফোডেন। ২০১৯ সালে এই ইংলিশ ফুটবলারকে দেখে গার্দিওলা বলেছিলেন, ‘আমার দেখা সবচেয়ে প্রতিভাবান ফুটবলার।

ওর শুধু একটাই সমস্যা, শুরুর একাদশে সুযোগ পাচ্ছে না।’

খ্যাতিমান কোচের প্রশংসাপত্র বাস্তবে রূপ দিতে কয়েক বছর লেগে গেছে ফোডেনের। গত মৌসুমেও সিটির একাদশে অনিয়মিত ছিলেন এই মিডফিল্ডার। এবার ৩৭ ম্যাচের ৩৩টিতেই শুরু থেকে খেলেছেন ফোডেন।

বিনিময়ে সিটিকে দিয়েছেন একের পর এক সেরা নৈপুণ্য। ম্যানসিটির টানা চতুর্থ লিগ শিরোপা জয়ে ফোডেন সামনে থেকে পারফর্ম করেছেন। নিজে গোল করেছেন এবং সতীর্থকে দিয়ে করিয়ে ইংলিশ ফুটবলের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কারও জিতে নিয়েছেন এই মিডফিল্ডার। মাত্র ২৩ বছর বয়সেই ফোডেনের নামের সঙ্গে যোগ হয়েছে ছয়টি লিগ শিরোপার মুকুট।

মধ্যমাঠে বল নিয়ন্ত্রণের সঙ্গে গোলের সুযোগ তৈরি করার পাশাপাশি গোল করাতেও দক্ষ ফোডেন। সদ্য শেষ হওয়া লিগে ৩৫ ম্যাচে ১৯ গোলের সঙ্গে তাঁর নামের পাশে আছে আটটি অ্যাসিস্ট। ক্লাবের জার্সিতে মৌসুমের সব আসর মিলিয়ে ২৭ গোলের সঙ্গে ফোডেনের ১১ অ্যাসিস্টও আছে। শুধু মধ্যমাঠ নয়, কখনো দুই উইংয়ে আবার কখনো স্ট্রাইকার পজিশনেও খেলতে হয়েছে তাঁকে। গত মার্চে তাই গার্দিওলা বলেছিলেন, ‘ফোডেন অন্তত পাঁচটি পজিশনে খেলতে পারে।

এবারের মৌসুমের অনেকটা সময় মাঠের বাইরে ছিলেন কেভিন ডি ব্রুইন। তবু মধ্যমাঠে শূন্যতায় ভুগতে হয়নি সিটিকে। চোটের কারণে প্রায় দুই মাস খেলার বাইরে ছিলেন আর্লিং হালান্ডও। আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড হুলিয়ান আলভারেসকে সঙ্গে নিয়ে সিটিকে উতরে দিয়েছেন তিনি। সাবেক আর্সেনাল স্ট্রাইকার ইয়ান রাইট যেমন বলছেন, ‘সে দুর্দান্ত। অবিশ্বাস্য। ছন্দে থাকলে সে সবাইকে ছাড়িয়ে যায়।’ আরেক সাবেক ইংলিশ তারকা অ্যালান শিয়েরার অবাক তাঁর পারফরম্যান্সে, ‘কিছু কিছু সময় নাম্বার টেন পজিশনে সে অবিশ্বাস্য। আমাকে অবাক করে। মাত্র ২৩ বছর বয়সে ছয়টি লিগ শিরোপা? অবিশ্বাস্য!’

ম্যানচেস্টার সিটির একাডেমিতেই বেড়ে ওঠা ফোডেনের। ২০০৯ সাল থেকে আছেন সিটিতে। ক্লাবটির বয়সভিত্তিক দলে খেলে প্রস্তুত করেছেন নিজেকে। এর মাঝে ইতিহাদ স্টেডিয়ামের বলবয় হিসেবেও কাজ করতে হয়েছে তাঁকে। ২০১৬ সালে সিটির মূল দলে ডাক পান এই মিডফিল্ডার। এরপর নিয়মিত সুযোগ না পেলেও যখনই মাঠে নেমেছেন নিজেকে প্রমাণের চেষ্টা করেছেন। কিন্তু কেভিন ডি ব্রুইন, জ্যাক গ্রিয়েলিশ, রদ্রি কিংবা আর্লিং হালান্ডের ভিড়ে কদাচিৎ শোনা গেছে তাঁর কথা। কিন্তু সব কিছু ছাপিয়ে ফোডেন হয়ে উঠলেন মধ্যমণি। শুধু ম্যানচেস্টার সিটিরই নয়, ইংলিশ ফুটবলেরও। গার্দিওলাকে অবাক করে দেওয়া সেই তরুণ এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে।

LEAVE A REPLY