লোকসভায় রাহুল গান্ধীর সঙ্গে তার দাদির খুনির ছেলেও

রাহুল গান্ধী। ছবি : এএফপি

ভারতের লোকসভা নির্বাচনে পাঞ্জাবের ফরিদকোট আসন থেকে জয়ী হয়েছেন সরবজিৎ সিং খালসা। বিয়ন্ত সিংয়ের ছেলে তিনি। আর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীকে খুন করেছিল এই বিয়ন্ত সিং। তার সঙ্গে লোকসভায় বসবেন ইন্দিরা গান্ধীর নাতি রাহুল গান্ধী।

এ ছাড়া আরেক খালিস্তানপন্থী নেতা অমৃতপাল সিংও এবারের লোকসভা নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন। জেলবন্দি থেকে নির্বাচন করেছিলেন তিনি। তার বিরুদ্ধে জাতীয় নিরাপত্তা আইনে অভিযোগ রয়েছে। ভোটে জেতার পর জামিনের ব্যবস্থা শুরু করেছেন তার আইনজীবীরা।

এর আগেও মুখোমুখি হয়েছিল সিং আর গান্ধী পরিবার। বিয়ন্ত সিংয়ের ও ইন্দিরা গান্ধীর পরিবারের মুখোমুখি হওয়া অবশ্য এই প্রথম নয়।

বিয়ন্ত সিংয়ের স্ত্রী বিমল কউর খালসা ১৯৮৯ সালে পাঞ্জাবের রোপার থেকে লোকসভা নির্বাচনে জয়ী হয়েছিলেন। সেই নির্বাচনে জিতে সংসদে ছিলেন ইন্দিরা গান্ধীর পুত্র রাজীব গান্ধীও।

বিমল কউর খালসার রহস্যজনকভাবে মৃত্যু হয় ১৯৯১ সালে। বিয়ন্ত সিংয়ের বাবা সুচা সিংও ভারতের পার্লামেন্টের সদস্য হয়েছিলেন ভোটে জিতে।

নির্বাচনী রাজনীতিতে খালিস্তানপন্থীদের উত্থানের বিষয়টি মূল ধারার রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য অস্বস্তির কারণ হয়ে উঠেছে বলে মনে করছেন স্থানীয় সাংবাদিকরা ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

চণ্ডীগড়ের থিংকট্যাংক ইনস্টিটিউট ফর ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড কমিউনিকেশনের অধিকর্তা প্রমোদ কুমার মনে করেন, পাঞ্জাবের সমস্যা নিয়ে রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীদের উদাসীনতাই খালিস্তানপন্থীদের জনপ্রিয়তা বাড়ার একটা কারণ।

রাজনৈতিক সমস্যাগুলোর অন্যতম হচ্ছে ২০১৫ শিখদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ ‘গুরু গ্রন্থ সাহেব’ অপবিত্র করার বিচার এখনো শেষ হয়নি।

ওই ঘটনায় গণবিক্ষোভ হয়েছিল। পুলিশ সেখানে গুলি চালালে দুজন বিক্ষোভকারী নিহত হন। আগেও বেশ কয়েকবার শিখদের ধর্মগ্রন্থ অপবিত্র করার ঘটনা হয়েছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, পুলিশের গুলিতে মৃত্যুর ফলে পাঞ্জাবের শিখ ধর্মাবলম্বীরা এতটাই ক্ষিপ্ত ছিলেন যে দুই বছর পরে ২০১৭ সালের বিধানসভা নির্বাচনে শিরোমণি আকালি দল ও বিজেপির জোট সরকারের পতন হয়।

প্রমোদ কুমার বলেন, ‘ধর্মগ্রন্থ অপবিত্র করার ঘটনায় ন্যায়বিচার না পাওয়া সাধারণ মানুষের একটা বড় অংশকে ক্ষিপ্ত করে তুলেছে। এর ফলেই অমৃতপাল সিং ও সরবজিৎ সিং খালসাদের মানুষ ভোট দিয়ে জিতিয়েছেন।’

সূত্র : বিবিসি

LEAVE A REPLY