‘আফগানিস্তানে সামরিক অভিযান চালিয়ে যাবে পাকিস্তান’

পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মোহাম্মদ আসিফ ২০১৭ সালের ৭ সেপ্টেম্বর ইসলামাবাদে গণমাধ্যমকে ব্রিফ করছেন। ফাইল ছবি : এএফপি

সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় নতুন সামরিক অভিযানের অংশ হিসেবে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে হামলা চালিয়ে যাবে পাকিস্তান। দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ এ মন্তব্য করেছেন বলে বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানা গেছে।

খাজা আসিফ বলেন, পাকিস্তান যাদের ওপর নিরাপত্তা বাহিনী ও বেসামরিকদের লক্ষ্যবস্তু করার অভিযোগ করেছিল তাদের লক্ষ্য করেই বিমান হামলাগুলো করা হয়েছে।

এর আগে পাকিস্তানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ বছরের মার্চে প্রতিবেশী দেশটিতে এমন হামলার কথা স্বীকার করেছিলেন।

তবে আফগানিস্তানের তালেবান সরকার এই হামলাকে তাদের সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন বলে জানিয়েছে।

‘এটা ঠিক, আমরা আফগানিস্তানে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছি এবং তা চালিয়ে যাব। আমরা তাদের কেক ও পেস্ট্রি দিয়ে আপ্যায়ন করব না। যদি আক্রমণ করা হয়, আমরাও পাল্টা আক্রমণ করব।

’ বিবিসি উর্দুকে আসিফ এমনটাই বলেছেন।

তিনি হামলার বৈধতা নিয়ে শঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে আসিফ বলেন, পাকিস্তান আসন্ন হামলার বিষয়ে তালেবানকে জানায় না। “এই হামলা বিস্ময়ের উপাদানকে দূর করবে। আমরা কেন তাদের বলব, ‘প্রস্তুত হও, আমরা আসছি’?”

তবে তালেবান সরকার পাকিস্তানকে সতর্ক করে বলেছে, বিবৃতিটি ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’।

আন্তঃসীমান্ত হামলার ‘পরিণাম’ ভয়াবহ হবে।

২০২১ সালে তালেবান দেশটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর থেকে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা বেড়ে চলেছে। পাকিস্তানের তালেবান বা টিটিপির একটি দলের আফগানিস্তানে আশ্রয়স্থল রয়েছে বলে অভিযোগ করেছে পাকিস্তান।

খাজা আসিফ বলেন, ‘আমরা অনুরোধ করেছি যে আফগান মাটি ব্যবহার করে যাতে তারা পাকিস্তানে হামলা চালাতে না পারে। কিন্তু তারা টিটিপির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে অনিচ্ছুক।’

পাকিস্তান সম্প্রতি ক্রমবর্ধমান সহিংসতা ও সন্ত্রাসী হামলা দমনে ‘স্থিতিশীলতার জন্য সমাধান’ নামে একটি নতুন সামরিক অভিযান ঘোষণা করেছে। এটি প্রধানত পাকিস্তানের অভ্যন্তরে কাজ করা গোষ্ঠীগুলির উপর লক্ষ্য রাখবে।

সরকারের সমালোচক ও অভ্যন্তরের কিছু সূত্র জানিয়েছে, বেইজিংয়ের চাপের পরে নতুন অপারেশন শুরু করা হয়েছিল। তারা পাকিস্তানে অবস্থান করা ২৯ হাজার চীনা নাগরিকের নিরাপত্তার বিষয়ে উদ্বিগ্ন। যাদের মধ্যে আড়াই হাজার জন চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর প্রকল্প ‘বেইজিংস বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ’ এ কাজ করছে।

এর আগে মার্চ মাসে উত্তর-পশ্চিম পাকিস্তানে একটি জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে কাজ করা চীনা প্রকৌশলীদের ওপর একটি আত্মঘাতী বোমা হামলা চালানো হয়। এতে পাঁচ চীনা প্রকৌশলী নিহত হন। তখন পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী অভিযোগ করেছিল যে হামলাটি প্রতিবেশী আফগানিস্তানে পরিকল্পনা করা হয়েছে। এছাড়া হামলাকারীও একজন আফগান নাগরিক ছিলেন।

তবে সামরিক অভিযানগুলো চীনের চাপে হওয়ার কথা অস্বীকার করেন এ প্রতিরক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, এ অভিযানগুলো পাকিস্তানে চীনা প্রকল্প ও নাগরিকদের সুরক্ষার হুমকি মোকাবেলা করবে।

LEAVE A REPLY