এবার সিনেমা দিয়েই ফিরতে চান টয়া

মুমতাহিনা চৌধুরী টয়া

অনেক দিন ধরে অভিনয়ে পাওয়া যাচ্ছে না মুমতাহিনা চৌধুরী টয়াকে। তবে ১ জুলাই থেকে তাঁকে দেখা যাচ্ছে মাছরাঙা টেলিভিশনের ধারাবাহিক ‘এমন যদি হতো’তে। নাটকটির সূত্র ধরে তাঁর খোঁজ নিয়েছেন কামরুল ইসলাম।

প্রসঙ্গ ‘এমন যদি হতো’
২০২২ সালে থাইল্যান্ডে শুটিং হয়েছে ধারাবাহিক নাটকটির।

দুই বছর পর অবশেষে প্রচার শুরু হলো। টয়ার মুখেই শোনা যাক নাটকটি সম্পর্কে, “এটার মজার ব্যাপার হলো, বাংলা সাহিত্যে যেসব চরিত্র জনপ্রিয়তা পেয়েছে, কালজয়ী হয়েছে, সেগুলোর উপস্থিতি আছে। পাতায়াতে বসে এক লেখক ইলুশনের মাধ্যমে তাদের দেখে। অর্থাৎ লেখকের কল্পনায় ওই চরিত্রগুলো এক হয়।

এখানে আমি মাসুদ রানা সিরিজের সোহানা চরিত্রে অভিনয় করেছি। এ ছাড়া ‘পদ্মা নদীর মাঝি’র কুবের-কপিলা, দেবদাস-পার্বতী, হিমু, আলাদিনের দৈত্যসহ অনেক আইকনিক চরিত্র আছে এই ধারাবাহিকে।”

সোহানার প্রতি বিশেষ ভালো লাগা
কাজী আনোয়ার হোসেনের অমর সৃষ্টি ‘মাসুদ রানা’। এই গোয়েন্দা চরিত্রের চার শতাধিক গল্প আছে, যা এখনো বাংলাজুড়ে তুমুল জনপ্রিয়।

এই সিরিজ গল্পের অন্যতম চরিত্র সোহানা। তাকে নিয়ে টয়া কী ভাবেন? উত্তরে অভিনেত্রী বলেন, ‘মাসুদ রানাকে তো সবাই পছন্দ করে। ব্যক্তিগতভাবে সোহানা চরিত্রটি আমার পছন্দের। যখন এই ধারাবাহিকের গল্প লেখা হয়, আমাকে ভেবেই সোহানা চরিত্রটা যুক্ত করা হয়েছে বলে জানান নির্মাতা। ভীষণ মজা লেগেছে কাজটি করে।

বিদেশ মানেই আরাম নয়
শুটিংয়ের প্রয়োজনে নির্মাতা-শিল্পীরা মাঝেমধ্যেই ভিনদেশে যান। পর্দায় উঠে আসে মনোরম চিত্র। তবে বিহাইন্ড দ্য সিনের গল্পটা অত আরামদায়ক নয় বলে জানালেন টয়া। তাঁর ভাষ্য, ‘সবাই মনে করে, বিদেশে শুটিং করলে অনেক মজা হয়। কিন্তু না, ওখানে আমাদের সুযোগ-সুবিধা কম থাকে। দেশে যে আরামে শুটিং করি, বিদেশে তা থাকে না। সেখানে মেকআপ, কস্টিউমসহ নিজেদের অনেক কিছু করতে হয়। হেল্পিং হ্যান্ড থাকে না। তাই কাজের সময় মজা-ফুর্তি করার সুযোগ হয় না। হ্যাঁ, কাজ শেষ হয়ে গেলে হয়তো দু-চার দিন অতিরিক্ত থাকি, ঘোরাঘুরি করি।’

তবে ‘এমন যদি হতো’ নাটকের শুটিং কিঞ্চিৎ মজার ছিল সাজ-পোশাকের জন্য। টয়া বলেন, ‘মজার ব্যাপার যদি বলতে হয়, তাহলে সবার কস্টিউমের কথা বলব। যেমন চাষী ভাই সেজেছেন আলাদিনের দৈত্য, নীল রঙে সেজে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। সেখানে সাধারণ পর্যটক যারা ছিল, তারাও অবাক হয়ে তাকিয়ে ছিল। আমাদের সবাইকে অদ্ভুত সাজ-পোশাকে দেখে তাদের মধ্যে কৌতূহল হচ্ছিল।’ 

কোথায় হারালেন টয়া
চঞ্চলমনা টয়া অভিনয়েও নিয়মিত ছিলেন। অথচ এক বছরের বেশি সময় ধরে কোনো শুটিংয়ে নেই তিনি। কেন? উত্তরে বলেন, ‘আমি সিনেমা করতে চাই। তাই নাটক থেকে বিরতি নিয়েছি। এ ছাড়া নিজের জন্যও বিরতিটা দরকার ছিল। অনেক দিন ধরে কাজ করার পর একটু অবসর নিতে হয় নিজেকে বোঝার জন্য। অবশ্য একদম বসে নেই আমি। ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে কাজ করছি। বিভিন্ন পণ্যের প্রচারণার কাজ করছি। তবে হ্যাঁ, আমার মূল জায়গা নাটক, সেখান থেকে বিরতি নিয়েছি। মনে হয়েছে, আমি ভিন্ন কিছু পাচ্ছি না। আশা করছি, এ বছরের শেষ দিকে ফিরব।’

চলচ্চিত্রের খবর
টয়া অভিনীত একমাত্র ছবি রাহশান নূরের ‘বেঙ্গলি বিউটি’, মুক্তি পেয়েছে ২০১৮ সালে। এরপর বড় পর্দায় তাঁকে আর পাওয়া যায়নি। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ওই ছবি আমার জন্য প্র্যাকটিস ম্যাচের মতো ছিল। ছবিটা বাংলাদেশে সেভাবে মুক্তিও পায়নি। দর্শকের কাছে ছবিটা পৌঁছেনি। তবে যাঁরা দেখেছেন, সবাই প্রশংসা করেছেন।’ এখনো নতুন ছবিতে যুক্ত হননি বলেও জানান টয়া।

নিজের সঙ্গে বোঝাপড়া
বিরতির সময়টাতে নিজের সঙ্গে বোঝাপড়ার সময়টা কেমন কাটছে? টয়ার উত্তর, ‘কখনো খুব ভালো লাগে, কখনো খুব খারাপ লাগে, আবার কখনো কিছুই অনুভব করি না। ভালো লাগে কারণ, নিজেকে অনেক সময় দিচ্ছি। ছবি দেখছি, বই পড়ছি, ঘুরে বেড়াচ্ছি। আবার যখন অন্যদের কাজ দেখি, তখন নিজের ভেতরের আকাঙ্ক্ষাটা বাড়ে। দর্শকের ভালোবাসা পাওয়ার অভাব বোধ করি।’

LEAVE A REPLY