মুষলধারার বৃষ্টির দোহাই দিয়ে রাজধানীর বাজারগুলোয় সব ধরনের সবজি বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। বাজারে বেশির ভাগ সবজি কিনতে ক্রেতা সাধারণকে কেজিপ্রতি গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত টাকা। বেশ কিছু সবজির দাম কেজিপ্রতি শতকের ঘর ছাড়িয়েছে। ক্রেতা সাধারণের অভিযোগ, ব্যবসায়ীদের অজুহাতের কোনো শেষ নেই।
যেকোনো অসিলায় পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন তাঁরা। আগের তুলনায় সরকারের বাজার মনিটরিং কিছুটা কমে যাওয়ায় অতিরিক্ত মুনাফার সুযোগ নিচ্ছেন অসাধু ব্যবসায়ীরা।
তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, একদিকে ভারি বৃষ্টি ও বন্যা, অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলনের ফলে রাজধানীর বাইরে থেকে সবজির সরবরাহ কমে যাওয়ায় দাম বেড়েছে। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বাড্ডা, খিলগাঁও রেলগেট কাঁচাবাজার, হাতিরপুল ও জোয়ারসাহারা কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, সকাল থেকে ভারি বৃষ্টির কারণে বাজারগুলোয় স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় ক্রেতার উপস্থিতি কম।
তার পরও সবজির চড়া দাম হাঁকছেন বিক্রেতারা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ২০ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়ে বেশির ভাগ সবজি বিক্রি হচ্ছে। সবজি বিক্রেতারা গতকাল প্রতি কেজি টমেটো বিক্রি করেছেন ২০০ টাকায়, বেগুন মানভেদে ১০০ থেকে ১৪০ টাকা, করলা কেজি ১২০ থেকে ১৪০ টাকা, ঝিঙা কেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকা, কাঁচা মরিচ কেজি ২৮০ থেকে ৩০০ টাকায়, প্রতি কেজি আলু মানভেদে ৬০ থেকে ৭০ টাকা, বরবটি ১০০ থেকে ১২০ টাকা, পটোল ও ঢেঁড়স প্রতি কেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকা, পেঁপে প্রতি কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা, কচুমুখী প্রতি কেজি ১০০ টাকা, গাজর ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। লাউ আকারভেদে প্রতিটি ৭০ থেকে ১০০ টাকা, চালকুমড়া প্রতিটি ৬০ থেকে ৭০ টাকা, মিষ্টিকুমড়া প্রতি কেজি ৪০ থেকে ৪৫ টাকা এবং কচুর লতি প্রতি কেজি ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
খিলগাঁও রেলগেট কাঁচাবাজারে কথা হয় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত হাবিবুর রহমানের সঙ্গে। কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, ‘বাজারগুলোয় সরকারের নজরদারি না থাকার সুযোগ নিচ্ছেন অসাধু ব্যবসায়ীরা। নানা অজুহাত দেখিয়ে সিন্ডিকেট করে অসাধু ব্যবসায়ীরা ইচ্ছামতো পণ্যের দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছেন। এভাবে একটা দেশ চলতে পারে না। আমাদের মতো সীমিত আয়ের মানুষদের বাজারে এসে দীর্ঘশ্বাস ফেলা ছাড়া কিছু করার নেই।
’
রাজধানীর বাড্ডা কাঁচাবাজারের সবজি বিক্রেতা সেলিম মিয়া বলেন, ‘ভারি বৃষ্টি আর বন্যার কারণে বাজারে সবজির সংকট চলছে। যে কারণে বাজারে সব ধরনের সবজি বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে।’
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়ে দেশি পেঁয়াজ ১১০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ডজনে ১০ টাকা কমে ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়। কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়ে ব্রয়লার মুরগি ১৮০ থেকে ২০০ টাকায় এবং সোনালি ২৯০ থেকে ৩১০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। তবে অপরিবর্তিত আছে রসুনের দাম। দেশি ও আমদানি করা রসুন প্রতি কেজি ২০০ থেকে ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।