গাজায় হেপাটাইটিসে আক্রান্ত ৭০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় হেপাটাইটিসে আক্রান্ত হয়েছে ৭০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি। বারবার বাস্তুচ্যুত হওয়ায় এ রোগে আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গাজার সরকারি সংবাদমাধ্যমের কার্যালয় জানিয়েছে, গত ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরুর পর থেকে গাজা উপত্যকার বিভিন্ন অংশে বাস্তুচ্যুত হওয়ার কারণে কমপক্ষে ৭১ হাজার ৩৩৮ জন হেপাটাইটিসে আক্রান্ত হয়েছে। শনিবার আল জাজিরার প্রতিবেদনে উঠে আসে এ তথ্য। 

ইসরাইলের হামলার ভয়ে বাড়িঘর ছেড়ে পালাচ্ছে গাজার অধিকাংশ মানুস। ফলে অবরুদ্ধ অঞ্চলটিতে বাড়ছে অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুতির সংখ্যা। এ পরিস্থিতির কারণে এখন পর্যন্ত ১৭ লাখের বেশি মানুষ বিভিন্ন সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হয়েছে। এছাড়া ইসরাইলি সেনাবাহিনী প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহে বাধা দেওয়ায় গাজায় দীর্ঘস্থায়ী রোগে আক্রান্ত প্রায় সাড়ে তিন লাখ মানুষ বড় ধরনের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। 

অন্যদিকে আবারও গাজায় শুরু হয়েছে ইসরাইলি তাণ্ডব। খান ইউনিস শরণার্থী শিবিরের তাঁবুতে ইসরাইলি হামলায় শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত বা আহত হয়েছেন। শনিবার এই হামলা চালিয়েছে ইসরাইলি সেনারা। হামাস পরিচালিত মিডিয়া অফিসের বরাতে এএফপির প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, আল মাওয়াসি ক্যাম্পে ইসরাইলের হামলায় ৭১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ২৮৯ জন। 

তবে ইসরাইলি সামরিক বাহিনী বলছে, এই প্রতিবেদনটি খতিয়ে দেখছে তারা। 

হামাস পরিচালিত গাজা থেকে জারি করা একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘খান ইউনিসে বাস্তুচ্যুতদের তাঁবুতে বোমা হামলা করে একটি বড় হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে ইসরাইলি দখলদার বাহিনী। ভয়ংকর এই গণহত্যায় সিভিল ইমার্জেন্সি সার্ভিসের সদস্যসহ ১০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত ও আহত হয়েছে।’ 

অন্যদিকে গাজা নগরীর পূর্বাঞ্চলের শুজাইয়া বা গাজার দক্ষিণের নগরী রাফার কাছের তেল আল-সুলতানে শেষ কয়েকদিনে এতটা ভয়ংকর লড়াই হয়েছে যে, সিভিল ডিফেন্সের অ্যাম্বুলেন্স পর্যন্ত বের হতে পারেনি। 

স্থানীয় সিভিল ডিফেন্স কর্মকর্তা মুহাম্মদ আল মুঘায়ের বলেন, ‘ইসরাইলি বাহিনী যেসব অঞ্চলের দখল নিয়েছে, তার কাছাকাছি কোথাও প্রবেশ করা খুবই বিপজ্জনক, তারপরও মানুষের জীবন রক্ষা করতে আমরা ওইসব এলাকায় প্রবেশের চেষ্টা করি।’ 

মুঘায়ের ও তার সহকর্মীরা যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকা থেকে হতাহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করেন। লোকজন হারানো স্বজনের খোঁজে তাদের ক্রমাগত প্রশ্ন করতে থাকেন। কিন্তু লাশের পরিচয় শনাক্ত করা খুব কঠিন বলে জানান তিনি। বলেন, ‘কিছু লাশ এত পচে যায় যে সেগুলোর পরিচয় শনাক্ত করা অসম্ভব।’ 

অনেক সময় পশুও লাশ নষ্ট করে ফেলে। জামা-কাপড় ছিঁড়ে ফেলে। এ কারণে পোশাক দেখে লাশ শনাক্তের সুযোগও থাকে না বলে জানান তিনি।

LEAVE A REPLY