আবারো অস্থির হয়ে উঠেছে ডিমের বাজার। রাজধানীর খুচরা বাজারে এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি ডজনে ডিমের দাম বেড়েছে ১৫ থেকে ২০ টাকা। এতে বিপাকে পড়েছে ভোক্তারা। কারণ ডিমই হলো তুলনামূলক কম দামে প্রোটিন পাওয়ার সবচেয়ে ভালো উৎস।
দেশের চলমান পরিস্থিতির কারণে সরবরাহ ব্যাহত হওয়ায় রাজধানীর বাজারে ডিমের দাম বেড়ে গেছে। সরবরাহ কমায় একই সঙ্গে মুরগি, মাছ ও সবজির দামও বেড়েছে। ফলে বাজার করতে গিয়ে পণ্যের দাম শুনে ক্রেতারা আতঙ্কিত হচ্ছে।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর মহাখালী কাঁচাবাজার, রামপুরা ও বাড্ডার বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এক সপ্তাহের ব্যবধানে খুচরা বাজারে ফার্মের মুরগির ডিমের দাম বেড়ে প্রতি ডজন ১৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল; যদিও গত সপ্তাহে ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
দাম বেড়ে ব্রয়লার মুরগি কেজি ২০০ থেকে ২১০ টাকায় এবং সোনালি মুরগি কেজি মানভেদে ৩১০ থেকে ৩৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল। তবে কয়েকটি বাজারে সোনালি মুরগি ৩৫০ টাকা পর্যন্তও বিক্রি হচ্ছিল।
তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ আমানত উল্লাহ গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে টানা দুই দিন ঢাকায় ডিমের গাড়ি প্রবেশ করতে পারেনি। এতে বাজারে ডিমের ঘাটতি তৈরি হয়ে দাম বেড়েছে।
আশা করছি, আজ (গতকাল) রাতে রাজধানীতে ডিমের গাড়ি প্রবেশ করবে। ফলে বুধবার বাজারে ডিমের দামও স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে।’ গতকাল সবজির বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সরবরাহ সংকটের কারণে কয়েক দিন ধরেই রাজধানীর বাজারে সব ধরনের সবজি বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। এখনো সেই চড়া দামেই খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে সবজি।
গতকাল ভালো মানের গোল বেগুন প্রতি কেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকা, লম্বা বেগুন কেজি ৬০ টাকা, করলা ১০০ টাকা, কাঁচা মরিচ ২৮০ টাকা, কাঁকরোল কেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকা, কচুর মুখি ৮০ টাকা, টমেটো মানভেদে ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা, দেশি গাজর ১২০ টাকা, আমদানীকৃত গাজর ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা, পটোল ৬০ টাকা, ঝিঙা ৮০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০ টাকা, পেঁপে ৫০ টাকা, চালকুমড়া প্রতি পিস ৬০ থেকে ৭০ টাকা এবং লাউ প্রতি পিস আকারভেদে ৭০ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল।
সবজির পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতারা বলেন, দেশের অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে গত কয়েক দিন রাজধানীতে পণ্যবাহী গাড়ি ঠিকমতো আসতে পারেনি। ঝুঁকি নিয়ে যেসব ট্রাক রাজধানীতে আসছে, সেগুলোকে দ্বিগুণ ভাড়া দিতে হচ্ছে। ফলে এই বাড়তি ব্যয় পণ্যের দামে গিয়ে পড়ছে।
গতকাল মাছ বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সরবরাহ কম থাকায় বাজারগুলোতে মাছের বেশির ভাগ দোকান বন্ধ ছিল। যেসব বিক্রেতা মাছ বিক্রি করছিলেন, তাঁদের কাছেও পর্যাপ্ত মাছ ছিল না। বাজারে ক্রেতার উপস্থিতি তুলনামূলকভাবে কম থাকলেও সরবরাহ সংকট দেখিয়ে বিক্রেতারা বাড়তি দামে মাছ বিক্রি করছিলেন। দুই থেকে আড়াই কেজি ওজনের রুই মাছ প্রতি কেজি ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল।