চলচ্চিত্রকার আমজাদ হোসেনের জন্মদিন আজ

আমজাদ হোসেন

বরেণ্য চলচ্চিত্রকার আমজাদ হোসেন। তিনি একাধারে চলচ্চিত্র পরিচালক, প্রযোজক, গল্পকার, অভিনেতা, গীতিকার ও সাহিত্যিক। বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী বরেণ্য এই পরিচালকের আজ জন্মদিন। কালজয়ী অনেক ছায়াছবির নির্মাতা আমজাদ হোসেন।

এর মধ্যে রয়েছে- ‘নয়নমণি’, ‘ভাত দে’, ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’, ‘সুন্দরী’, ‘দুই পয়সার আলতা’, ‘জন্ম থেকে জ্বলছি’ ইত্যাদি। ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’ ও ‘ভাত দে’ ছবির জন্য আমজাদ হোসেনকে শ্রেষ্ঠ পরিচালক হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে সম্মানিত করা হয়।

শিল্পকলায় অবদানের জন্য আমজাদ হোসেনকে ১৯৯৩ সালে ভূষিত করা হয় একুশে পদকে। এ ছাড়া সাহিত্য রচনার জন্য আমজাদ হোসেন ১৯৯৩ ও ১৯৯৪ সালে দুইবার অগ্রণী শিশু সাহিত্য পুরস্কার ও ২০০৪ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার অর্জন করেন।

ব্যতিক্রমধর্মী এই চলচ্চিত্র নির্মাতা তার কর্মজীবনে ১২টি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার এবং ৬টি বাচসাস পুরস্কার অর্জন করেছেন। তিনি প্রথম ব্যক্তি হিসেবে একসঙ্গে ছয়টি ভিন্ন বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেছেন এবং একই সঙ্গে পাঁচটি বিভাগে (‘গোলাপী এখন ট্রেনে’ চলচ্চিত্রের জন্য) জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন।

১৯৬১ সালে ‘তোমার আমার’ ছবিতে আমজাদ হোসেনের অভিনয়জীবন শুরু। একই বছর মুস্তাফিজ পরিচালিত ‘হারানো দিন’ ছবিতে অভিনয় করেন।

তার লেখা নাটক ‘ধারাপাত’ অবলম্বনে চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন পরিচালক সালাহ্উদ্দিন। এতে তিনি প্রধান একটি চরিত্রে অভিনয়ও করেন। পরবর্তীকালে তিনি জহির রায়হানের সঙ্গে যোগ দেন এবং তার সহকারী হিসেবে কয়েকটি ছবিতে কাজ করেন। এর মধ্যে রয়েছে ‘বেহুলা’ (১৯৬৬)। পরে তিনি চিত্রনাট্য রচনা ও পরিচালনায় মনোনিবেশ করেন।

আমজাদ হোসেন পরিচালিত প্রথম ছবি ‘আগুন নিয়ে খেলা’ (১৯৬৭)। পরে তিনি ‘নয়নমণি’ (১৯৭৬), ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’ (১৯৭৮), ‘ভাত দে’ (১৯৮৪) নির্মাণ করে উচ্ছ্বসিত প্রশংসা অর্জন করেন। তার লেখা কাহিনি নিয়ে ১৯৭০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি জহির রায়হান পরিচালিত সাড়া জাগানো ‘জীবন থেকে নেয়া’।

১৯৮০-এর দশকে কসাই (১৯৮০), ‘জন্ম থেকে জ্বলছি’ (১৯৮২), ‘দুই পয়সার আলতা’ (১৯৮২), ‘ভাত দে’ (১৯৮৪), ‘কসাই’ (১৯৮২)সহ কয়েকটি জনপ্রিয় চলচ্চিত্র উপহার দেন। চলচ্চিত্র ছাড়াও টিভি নাটক ‘জব্বর আলী’ নির্মাণ ও এতে অভিনয় করে ছোট পর্দার দর্শকদের কাছেও আকাশছোঁয়া জনপ্রিয়তা লাভ করেন বরেণ্য এই ব্যক্তিত্ব। আমজাদ হোসেনের চার ছেলের মধ্যে বড় ছেলে সাজ্জাদ হোসেন দোদুল ও সোহেল আরমান অভিনয়, লেখালেখি ও নির্মাণে নিজ নিজ মেধাশক্তির স্বাক্ষর রেখেছেন।

আমজাদ হোসেনের জন্ম ১৯৪২ সালের ১৪ আগস্ট জামালপুরে। ২০১৮ সালের ১৪ ডিসেম্বর থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাঙ্ককের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন তিনি।

LEAVE A REPLY