ইউক্রেন-বেলারুশ সীমান্তজুড়ে সেনা মোতায়েন, নতুন যুদ্ধের আশঙ্কা

রাশিয়া-ইউক্রেন আগ্রাসনের মধ্যেই বেলারুশ সীমান্তে লক্ষাধিক সেনা মোতায়েন করেছে ইউক্রেন। এ পদক্ষেপের পালটা জবাব দিতে সীমান্তজুড়ে বিপুল সংখ্যক সেনা মোতায়েন করেছে বেলারুশও। আর এতেই বেড়েছে নতুন যুদ্ধের আশঙ্কা। 

রোববার বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কো বলেছেন, ইউক্রেন তার সীমান্তে লক্ষাধিক সেনা মোতায়েন করায় পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। 

রাশিয়ার একটি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কো বলেছেন, সীমান্তে এক লাখ ২০ হাজারেরও বেশি সেনা মোতায়েন করেছে ইউক্রেন। এর জবাবে বেলারুশ তাদের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ সেনা সীমান্তজুড়ে মোতায়েন করেছে। 

লুকাশেঙ্কো আরও বলেছেন, তাদের (ইউক্রেনের) আক্রমণাত্মক নীতির কথা মাথায় রেখে আমরা আমাদের সামরিক বাহিনীকে পুরো সীমান্তজুড়ে মোতায়েন করেছি। যুদ্ধ হলে প্রতিরক্ষা হিসেবে কাজ করবে। তবে ঠিক কত সেনা মোতায়েন করা হয়েছে তা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেননি লুকাশেঙ্কো। 

২০২২ সালের ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের তথ্য অনুযায়ী, বেলারুশের পেশাদার সেনাবাহিনীর সংখ্যা প্রায় ৪৮ হাজার এবং প্রায় ১২ হাজার সীমান্ত রক্ষী রয়েছে। বেলারুশের সেনা মোতায়েনের বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেনি ইউক্রেন। তবে শনিবার কিয়েভ জানিয়েছে, বেলারুশের সেনাবাহিনী সীমান্তে কোনো উল্লেখযোগ্য উপস্থিতি বাড়ায়নি। 

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠ মিত্র লুকাশেঙ্কো এমন সময় এ বক্তব্য দিলেন যখন ইউক্রেনীয় সেনারা রুশ ভূখণ্ডে অভিযান চালাচ্ছে। ইউক্রেনীয় এ আক্রমণ রাশিয়ার সামরিক নেতৃত্বের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দিয়েছে। 
বেলারুশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ভিক্টর খ্রেনিন শুক্রবার বলেছেন, ইউক্রেন থেকে সশস্ত্র উসকানির আশঙ্কা রয়েছে এবং দুই দেশের সীমান্তের পরিস্থিতি এখনো উত্তেজনাপূর্ণ রয়েছে। 

লুকাশেঙ্কো জানিয়েছেন, বেলারুশ-ইউক্রেন সীমান্তে বিপুলসংখ্যক মাইন পুঁতে রাখা হয়েছে। ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী যদি সীমান্ত অতিক্রমের চেষ্টা করে তবে তাদের বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়তে হবে। 

এছাড়া রাশিয়ায় ইউক্রেনের সাম্প্রতিক হামলা সম্পর্কে লুকাশেঙ্কো বলেছেন, পুতিন এবং রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনী কুরস্ক অঞ্চলে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীকে নিশ্চিহ্ন করে দেবে। 

বেলারুশিয়ান প্রেসিডেন্ট জোর দিয়ে বলেছেন, ইউক্রেনের উত্তেজনা রাশিয়াকে পারমাণবিক প্রতিক্রিয়াসহ যেকোনো পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করছে। যা বিপজ্জনক তা হলো- ইউক্রেনের এ ধরনের বৃদ্ধি রাশিয়াকে অস্বাভাবিক পদক্ষেপের দিকে ঠেলে দেওয়ার একটি প্রচেষ্টা। যাকে আমরা পারমাণবিক প্রতিক্রিয়া বলতে পারি। আমি নিশ্চিতভাবে জানি, রাশিয়া বা আমরা কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্রাগার ব্যবহার করলে ইউক্রেন নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। সূত্র: রয়টার্স ও আলজাজিরা

LEAVE A REPLY