নায়করাজকে হারানোর সাত বছর

নায়করাজ রাজ্জাক

নায়ক তো অনেকে, নায়করাজ একজনই—রাজ্জাক। বাংলা চলচ্চিত্রের সমৃদ্ধ এক অধ্যায় তাঁর দখলে। নায়কোচিত চরিত্রে যেমন জয় করেছিলেন দর্শকের মন, তেমনি নন্দিত হয়েছেন জ্যেষ্ঠ চরিত্রে অভিনয় করেও। পাশাপাশি অভিভাবকের মতো আগলে রেখেছিলেন ঢালিউডবাসীকে।

আজ সেই অভিভাবক হারানোর দিন। ২০২১ সালের আজকের দিনে না-ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন তিনি।

নন্দিত এই অভিনেতা বাংলা চলচ্চিত্রে দীর্ঘ সাড়ে ছয় দশক ধরে অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে অভিনয় করে নায়করাজ উপাধি লাভ করেছিলেন। তার জন্ম হয়েছিল ১৯৪২ সালের ২৩ জানুয়ারি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার টালিগঞ্জে।

১৯৬৪ সালে তিনি পরিবারের সঙ্গে বাংলাদেশে চলে আসেন।

রাজ্জাক প্রথমে চলচ্চিত্রকার আবদুল জব্বার খানের সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ শুরু করেন। নায়ক হিসেবে তার চলচ্চিত্রে অভিষেক হয় জহির রায়হান পরিচালিত ‘বেহুলা’ ছবিতে। সেই থেকে শুরু।

একবারের জন্যও পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি প্রয়াত এ কিংবদন্তিকে। ক্যারিয়ারে তিন শতাধিক চলচ্চিত্রে অত্যন্ত প্রতাপের সঙ্গে তিনি অভিনয় করেছেন। এছাড়া প্রযোজনা ও পরিচালনা করেছেন ১৬টি চলচ্চিত্র।

শুধু এপার বাংলাতেই নয়, ওপার বাংলায়ও অভিনয়ের দ্যুতি ছড়িয়েছেন নায়করাজ রাজ্জাক। দেশীয় সিনেমায় যখন অশ্লীলতা ভর করে, তখন ঢালিউড থেকে টলিউডে পা রাখেন তিনি।

টানা পাঁচ বছর অভিনয় করেন কলকাতার ৩০টির বেশি সিনেমায়। ওপার বাংলায় জন্ম নিলেও এপার বাংলার রুপালি রঙেই তিনি হয়ে উঠেছিলেন নায়করাজ।

রাজ্জাক অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রগুলো হচ্ছে- বেহুলা, আগুন নিয়ে খেলা, এতুটুকু আশা, নীল আকাশের নিচে, জীবন থেকে নেয়া, নাচের পুতুল, অশ্রু দিয়ে লেখা, ওরা ১১ জন, অবুঝ মন, রংবাজ, আলোর মিছিল, গুন্ডা, অনন্ত প্রেম, অশিক্ষিত, ছুটির ঘন্টা, মহানগর, রাজলক্ষী শ্রীকান্ত, স্বরলিপি, বাদী থেকে বেগম, বাবা কেন চাকর ইত্যাদি।

দীর্ঘ ফিল্মি ক্যারিয়ারে শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে সাতটি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জিতেছেন নায়করাজ রাজ্জাক। ২০১৫ সালে পেয়েছেন রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা স্বাধীনতা পদক। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন থেকে তাকে আজীবন সম্মাননা দেওয়া হয়েছে রেকর্ড সাত বার। এছাড়া তার ঝুলিতে আছে নামিদামি অসংখ্য পুরস্কার।

LEAVE A REPLY