ভারতের মধ্যপ্রদেশের উজ্জয়িনী জেলায় প্রকাশ্যে রাস্তায় ফেলে এক নারীকে ধর্ষণ করা হয়েছে। বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) এ ঘটনা ঘটে। অনেকে এ ঘটনা প্রত্যক্ষ করলেও কেউই ওই নারীকে বাঁচাতে যায়নি। বরং ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে থাকা অনেকে এর ভিডিও করেছে।
এই ঘটনা এমন সময় ঘটলো, যখন ভারতের পশ্চিমবঙ্গে একজন তরুণী চিকিৎসককে হাসপাতালে ধর্ষণ করে হত্যার ঘটনায় সেখানে প্রবল বিক্ষোভ চলছে।
এ বিষয়ে উজ্জয়িনীর পুলিশ সুপার প্রদীপ শর্মা বলেন, ‘যে অঞ্চলে এই ঘটনাটি ঘটছে তা জমজমাট এলাকা। নির্যাতিতা ও অভিযুক্ত দুজনেই একে অন্যকে আগে থেকেই চিনতেন। অভিযুক্ত ব্যক্তি রাস্তায় একটি ঠেলা নিয়ে দোকান চালায়। আর ধর্ষণের শিকার হওয়া নারী পুরনো জিনিষপত্র কেনা-বেচা করেন। ঘটনার দিন দুজনেই কথা বলতে বলতে মদ খেয়েছিলেন। নেশা কাটার পরে ওই নারী জানিয়েছেন যে ওই ব্যক্তি বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তারপরেই তারা দুজনে মদ্যপান করেন। ওই সময়েই এই ঘটনা হয়।’
তিনি আরও বলেন, অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে ৩৭৬ ধারায় ধর্ষণের মামলা দায়ের করা হয়েছে। গ্রেপ্তারের পর আদালত তাকে জেল হাজতে পাঠানো নির্দেশ দিয়েছে।
প্রদীপ শর্মা বলেন, ঘটনার সময় এক পথচারী পুলিশকে খবর দেন। এরপর পুলিশ গিয়ে ওই নারীকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। পরে নেশা কাটলে ওই নারীর বয়ান রেকর্ড করে মামলা দায়ের করা হয়।
এ ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ভারতের রাজনীতিও। ঘটনার পর কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী তার এক্স পোস্টে বলেন, ‘মধ্যপ্রদেশের উজ্জয়িনীতে প্রকাশ্য ফুটপাথে এক নারীকে ধর্ষণের ঘটনা অত্যন্ত ভয়ঙ্কর। পুরো দেশ ভাবছে আমাদের সমাজ কোন দিকে যাচ্ছে? খবর পাওয়া যাচ্ছে, ওই নারীকে রক্ষা করার বদলে রাস্তা দিয়ে যাওয়া লোকজন ঘটনাটির ভিডিও করছিল! পবিত্র ভূমি উজ্জয়িনীর এমন ঘটনা মানবতাকে কলঙ্কিত করেছে।’
এ ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি জিতু পাটোয়ারি এক্স পোস্টে বলেন, ‘ধর্মনগরী উজ্জয়িনী আরও একবার কলঙ্কিত হল… ভাবলেই অবাক হতে হয়, মধ্যপ্রদেশে প্রকাশ্য রাস্তায় দিনের বেলা ধর্ষণের ঘটনা শুরু হয়েছে। এই যদি হয় মুখ্যমন্ত্রীর নিজের শহরের অবস্থা, তা হলে বাকি রাজ্যের পরিস্থিতি সহজেই বোঝা যায়। দলিত ও আদিবাসী নারীদের ওপরে অত্যাচার কীভাবে বাড়ছে, সেটাও বোঝা যাচ্ছে।’
আবার ক্ষমতাসীন দল বিজেপির মুখপাত্র আশিস আগরওয়াল জিতু পাটোয়ারির মন্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে এক্স-এ লিখেছেন, ‘পাটোয়ারি মধ্যপ্রদেশের বদনাম করার চেষ্টা করছেন।’
তিনি আরও লিখেন, ‘অভিযুক্ত পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, অভিযোগকারী নারী এবং অভিযুক্ত দুজনেই একে অপরের পরিচিত। তদন্ত শেষ হলে পুরো ঘটনা স্পষ্ট হবে এবং দোষীদের কঠোর শাস্তি দেয়া হবে।’ সূত্র: বিবিসি বাংলা