নির্মাতাদের পছন্দের তালিকায় অবিবাহিতরা : দিয়া মির্জা

দিয়া মির্জা

তার প্রথম সিনেমা বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়েছিল। যদিও অভিনয়গুণে দর্শক মনে পরবর্তীকালে আলাদা জায়গা করে নেন প্রাক্তন মিস ইন্ডিয়া। বলছিলাম দিয়া মির্জার কথা। বলিউডে এই অভিনেত্রীর ভাগ্যের চাকা যে দুরন্ত গতিতে ঘুরে গিয়েছিল, এমনটা নয়।

বরং ক্যারিয়ারের শুরুতে একের পর এক সিনেমা ফ্লপ হওয়ায় আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েন তিনি। তবে মাটি কামড়ে পড়ে থেকে ধীরে ধীরে একটা সময়ে বলিউডে নিজের জায়গা পাকা করে নেন এই সুন্দরী। কতটা কঠিন ছিল সেই লড়াই? এবার নিজেই সেই রহস্য ফাঁস করলেন দিয়া মির্জা।

ইন্ডাস্ট্রিতে পা রাখার পর তার একের পর এক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে আসার গল্পটা কোনো রূপকথার চেয়ে কম নয়।

যা আরো একবার ‘টাইমস অব ইন্ডিয়া’-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নিজের মুখে স্বীকার করেছেন হায়দরাবাদী এই সুন্দরী।

5
দিয়া মির্জা

২০০১ সালে হিন্দি সিনেমায় অভিষেক হয় দিয়ার। গৌতম মেনন পরিচালিত ‘রেহেনা হ্যায় তেরে দিল মে’-তে পর্দায় প্রথমবার দেখা গিয়েছিল তাকে। বলিউডের ফ্লপের তালিকায় এই সিনেমাটির নাম থাকলেও দিয়ার অভিনয়ে মুগ্ধ হন সিনেপ্রেমী থেকে শুরু করে সমালোচকরাও।

কিন্তু পরবর্তী বছরগুলিতে তার সিনেমা বাণিজ্যিক সাফল্য দিতে না পারায় রীতিমতো মুষড়ে পড়েন নিজামের শহর থেকে আসা এই নায়িকা। সেই পরিস্থিতি যে কতটা যন্ত্রণার ছিল, তা বলতে গিয়ে সাক্ষাৎকারে আবেগ চেপে রাখতে পারেননি দিয়া।

অভিনেত্রী বলেন, ‘আমি মারাত্মক কষ্ট পেয়েছিলাম। অজানা ভয় আমার মনের মধ্যে চেপে বসেছিল। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত সব খবরই তখন বেদ বাক্য বলে মনে হতো।

ভেবেছিলাম, ইন্ডাস্ট্রি হয়তো আমাকে ছুড়ে ফেলে দেবে।’

দিয়া আরো জানিয়েছেন, বয়স ও ওজন নিয়েও চিন্তায় ছিলেন তিনি। বলেন, ‘ক্যারিয়ারের শুরুর দিনগুলিতে অনেকেই বলতেন, নারীদের একটা নির্দিষ্ট জীবন থাকে। তার বাইরে তাদের যাওয়া উচিত নয়। আপনার বয়স ২০ বছর হতে হবে। নইলে কোনো সুপারস্টারের বিপরীতে আপনাকে অভিনয়ের সুযোগ দেওয়া যাবে না।’

শুধু তা-ই নয়, নায়িকাদের ওজন নিয়েও ইন্ডাস্ট্রির ছিল প্রচণ্ড ছুঁতমার্গ। দিয়া জানান, ২০০০ সাল নাগাদ নায়িকাদের একটা নির্দিষ্ট ওজনের কথা বলা হতো। আর ইন্ডাস্ট্রির নির্মাতাদের পছন্দের তালিকায় ছিলেন অবিবাহিতরা।

তবে এখন যে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ পাল্টেছে, তা জানাতে ভোলেননি এই প্রাক্তন মিস ইন্ডিয়া। বলেন, ‘এখন সবাই বুঝেছেন, এটা একটা কাজ। যা কখনো কোনো অভিনেত্রীর পুরো পরিচয় নয়। এটা করতে আমরা ভালোবাসি। আর তাই এই পেশার সঙ্গে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে আছি। যা কখনোই আমাদের সত্তাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। বিয়ে, সন্তানের মতো বিষয়গুলি একান্ত ব্যক্তিগত। সেখানে কারোর প্রভাব খাটানোর অধিকার নেই।’

২০০০ সালে ‘ফেমিনা মিস ইন্ডিয়া এশিয়া প্যাসিফিক’ খেতাব জিতেছিলেন দিয়া মির্জা। এরপর তিনি ‘মিস এশিয়া প্যাসিফিক ইন্টারন্যাশনাল’-এর মুকুটও পান। ২০০১ সালে তিনি ‘রেহেনা হ্যায় তেরে দিল মে’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে বলিউডে আত্মপ্রকাশ করেন। এরপর ‘দাস’, ‘দাম’, ‘তুমসা নাহি দেখা’, ‘লাগে রাহো মুন্নাভাই’, ‘সঞ্জু’-এর মতো সিনেমায় দেখা গেছে তাকে। বর্তমোনে পর্দায় উপস্থিতি কম থাকলেও নিয়মিত অভিনয় করে যাচ্ছেন তিনি।

LEAVE A REPLY