অরুণাচল সীমান্তে হেলিপোর্ট নির্মাণ চীনের

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের অরুণাচল প্রদেশের সীমান্তের কাছে নতুন একটি হেলিপোর্ট নির্মাণ করছে চীন। বুধবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, এটি উভয় দেশের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা থেকে ২০ কিলোমিটার পূর্বে তৈরি করা হচ্ছে। 

ধারণা করা হচ্ছে, বিতর্কিত এই সীমান্ত অঞ্চলে চীনা সেনাবাহিনীকে জরুরি পরিস্থিতিতে দ্রুত পৌঁছানোর লক্ষ্যেই হেলিকপ্টার বন্দর নির্মাণ করছে বেইজিং। এমনটি হলে অরুণাচল নিয়ে ভারত সরকার নতুন করে চাপের মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দীর্ঘদিন থেকেই অরুণাচল প্রদেশকে দক্ষিণ তিব্বতের অংশ বলে দাবি করে আসছে চীন। ফলে বিতর্কিত সীমান্ত এলাকায় বেইজিংয়ের এই কার্যক্রম অরুণাচল নিয়ে ভারত সরকারকে নতুন করে চাপে ফেলতে পারে। অরুণাচল সীমান্তে চীনের হেলিপোর্ট নির্মাণের বিষয়টি স্যাটেলাইট থেকে তোলা ছবিতে ধরা পড়েছে। 

তিব্বতের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের অন্তর্গত গোংরিগাবু চু নদীর তীরে নিংচি এলাকায় হেলিপোর্টটি তৈরি হচ্ছে। ওই এলাকা চীনের ভূখণ্ডের মধ্যে পড়ে। কিন্তু যেভাবে ভারতের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে চীন তাতে দিল্লির উদ্বেগ বাড়ছে। 

স্যাটেলাইট থেকে তোলা ছবি ও ডেটা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ২০২৩ সালের ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ওই এলাকায় কোনো স্থাপনা ছিল না। হঠাৎ করেই সেখানে হেলিপোর্ট তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। ৩১ ডিসেম্বরের ছবিতে নির্মাণের জন্য জায়গা পরিষ্কার করতে দেখা গেছে। এরপর ১৬ সেপ্টেম্বর ম্যাক্সার টেকনোলজিসের স্যাটেলাইটের তোলা ছবিতে দেখা যায়, নির্মাণকাজ অনেক দূর এগিয়ে গেছে। 

নির্মাণাধীন হেলিপোর্টটিতে ৬০০ মিটার দীর্ঘ রানওয়ে রয়েছে। সেখান থেকেই ওঠানামা করবে হেলিকপ্টার, যা উঁচু পার্বত্য এলাকার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। বেশি ওজনের সরঞ্জামও ওঠানামা করতে পারবে সেখানে। হেলিপোর্টে কমপক্ষে তিনটি হ্যাঙ্গারও দেখা গেছে। একটি অ্যাপ্রন এলাকাসহ এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল পরিষেবা এবং একাধিক ভবনও রয়েছে। 

ভূস্থানীয় গোয়েন্দা বিশেষজ্ঞ ড্যামিয়েন সাইমন প্রথমবারের মতো এই চীনা হেলিপোর্ট নির্মাণের বিষয়টি সামনে নিয়ে আসেন। তিনি বলেছেন, হেলিপোর্টটি নির্মাণ হয়ে গেলে চীনা সেনাবাহিনী এই অঞ্চলে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ, নজরদারি ও উদ্ধার কার্যক্রম জোরদার করতে পারবে। 

অঞ্চলটিতে ঘন জঙ্গল ও এবড়োথেবড়ো পাহাড় থাকায় সামরিক রসদ আনা-নেওয়া কঠিন ছিল। তবে একবার এই হেলিপোর্ট হয়ে গেলে দূরবর্তী অঞ্চলে দ্রুত সেনা মোতায়েন, টহল দক্ষতা জোরদার এবং কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ ও দূরবর্তী অবস্থানে চীনের সামগ্রিক সামরিক পদচিহ্ন জোরদার করবে।

ভারতীয় সেনাবাহিনীর একটি সূত্র সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে জানিয়েছে, চীনের গতিবিধির ওপর তাদের নজর রয়েছে। চীনের হেলিপোর্ট তৈরির বিষয়টি সম্পর্কে তারা অবগত বলে জানিয়েছেন।

LEAVE A REPLY