কাজী হায়াৎ
৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছেড়ে দেশ ছাড়ার পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব গ্রহণ করেন ড. ইউনূস। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ঘিরে দেশের সব শ্রেণিপেশার মানুষ যেমন আশাবাদ ব্যক্ত করছেন, তেমনি দেশের সাম্প্রতিক সহিংস পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগও প্রকাশ করছেন অনেকে। তবে দেশের সংস্কার এখনো চলমান এবং তার মাধ্যমেই নতুন দেশ গঠনের বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করলেন দেশের প্রবীণ নির্মাতা কাজী হায়াৎ।
সম্প্রতি গণমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে দেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেছেন কাজী হায়াৎ।
তিনি বলেন, “দেশ যদি ভালো থাকে, তাহলে অবশ্যই আমরাও ভালো থাকব। আগে দেশটাকে ভালো করতে হবে। দেশটা এখনো পুরোটা স্বাভাবিক হয়নি। এখনো অনেক কাজ বাকি।
আমাদের যা হারিয়ে গেছে, যেসব প্রতিষ্ঠান নষ্ট হয়েছে, সেগুলো পুনর্নির্মাণ ও পুনর্গঠন হলে দেশের মানুষ ভালো থাকবে। আমরা গণপ্রজাতন্ত্রী দেশে থাকলেও দেশে এত দিন গণতন্ত্র ছিল না। জনগণের দেশ ছিল না এত দিন, তারা দাবি করতে পারত না যে এটা আমার দেশ। এখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নিয়েছে।
জনগণ দাবি করতে পারছে এটা আমার দেশ। এখন সরকার যদি দেশটা সুন্দরভাবে গঠন করে, দেশের মালিকানা জনগণের হাতে তুলে দিতে পারে, তবেই এ দেশ ভালো থাকবে। দেশের মানুষ ভালো থাকবে।
সার্টিফিকেশন বোর্ড ও কমিটি (পূর্বে সেন্সর) নিয়ে অনেকেই মিশ্রপ্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে। এ প্রসঙ্গে নির্মাতা বলেন, “আমি এসব বিতর্কে যেতে চাই না।
সবার নিজস্ব মতামত দেওয়ার অধিকার আছে। সবার কথা বলার অধিকার আছে। সবার মতামতকেই গুরুত্ব দেওয়া উচিত, সম্মান করা উচিত।”
সম্প্রতি রাজনীতিতে জড়িয়ে বিতর্কিত হচ্ছেন শিল্পীরা। হাসিনা সরকারের পতনের পর অনেক শিল্পী এখনো গায়েব। এ প্রসঙ্গে কাজী হায়াৎ বলেন, “শিল্পীরা রাজনীতিতে জড়িত থাকার বিষয়টি আমি খারাপভাবে দেখছি না। অনেক দেশেই শিল্পীরা রাজনীতি করছেন। আমার দেশ কেন পিছিয়ে থাকবে? তবে শিল্পীরা হচ্ছেন সমাজের বিবেক। তারা সব সময় সত্য বলবেন, ন্যায়ের পথে চলবেন। তারা যদি সত্য বলতে না পারেন, কোনো দলের হয়ে অন্যায়কে প্রশ্রয় দেন তাহলে এমন রাজনীতি আমি প্রত্যাশা করি না। বিগত দিনে যারা বিতর্কিত হয়েছেন তাদের নিয়ে আমার কিছু বলার নাই। তাদের যা ভালো মনে হয়েছে, তাই করেছেন।’
১৯৭৪ সালে পরিচালক মমতাজ আলীর সঙ্গে সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ শুরু করেন কাজী হায়াৎ। ১৯৭৯ সালে ‘দি ফাদার’ সিনেমা পরিচালনার মধ্য দিয়ে পূর্ণ পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। অর্ধশত সিনেমা পরিচালনা করেছেন তিনি। তাঁর বেশির ভাগ সিনেমায় রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সমসাময়িক জনদুর্ভোগের চিত্র দেখানো হয়। বর্তমানে চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন কাজী হায়াৎ। পদাধিকার বলে পুনর্গঠিত সার্টিফিকেশন (পূর্বে সেন্সর) বোর্ডের সদস্যও হয়েছেন।