সময়টা আসলে সিনেমার পক্ষে নেই : ইমন

ইমন

সোমবার মুক্তি পাবে রায়হান রাফীর ‘মায়া’। এই ওয়েব ছবিতে অভিনয় করেছেন মামনুন হাসান ইমন। এই ছবি, ওটিটি অভিষেক ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন সুদীপ কুমার দীপ।

‘।

এটা কি সত্যি ঘটনা অবলম্বনে তৈরি ছবি?

এই গল্প, আমার চরিত্রটাই এমন, সবারই মনে হবে সত্য ঘটনা অবলম্বনে। অনেকের পরিবারেই এই ধরনের ঘটনা ঘটে। রাফীর কাছে আমার শোনা হয়নি আসলে সত্যি ঘটনা অবলম্বনে তিনি ছবিটি তৈরি করেছেন কি না! তবে আমার শুটিং করার সময়ই মনে হয়েছে, বাস্তব কারো জীবনে ঘটে যাওয়া ঘটনাই হয়তো ‘মায়া’।

অনেক দিন পর সারিকা সাবরিনের সঙ্গে আপনাকে দেখা যাবে।

একসময় তো আপনারা নিয়মিত কাজ করতেন। দীর্ঘদিন পরে কাজের অভিজ্ঞতা কেমন?

ছবির গল্প শোনার সময় রাফীর কাছে জিজ্ঞেস করেছিলাম, নায়িকা কে? জানিয়েছিলেন, চমক আছে। সেই চমক যে আমাকে হতবাক করে দেবে তা বুঝতে পারিনি। পাঁচ বছর পর সারিকার সঙ্গে এই ছবির শুটিং স্পটে দেখা।

মাঝের পাঁচ বছরে আমার সঙ্গে তার কোনো রকম যোগাযোগ ছিল না। সে সংসার নিয়ে ব্যস্ত ছিল। ভেবেছিলাম, আর অভিনয়ে পাব না তাকে। মাঝেমধ্যে বাংলা ভিশনের ‘আমার আমি’ অনুষ্ঠানে তাকে দেখতাম আর ভাবতাম, এত মেধাবী অভিনেত্রী, অথচ হারিয়ে গেল! সত্যি বলতে, ওই সময় আমরা যারা মিডিয়ায় কাজ করতাম তারা খুব পরিশ্রমী ছিলাম। সারিকাও তেমনই ছিল।পাঁচ বছর পর শুটিং করতে গিয়ে দেখলাম সে এখনো তেমনই আছে, বদলায়নি। শুটিংয়ের সময় অতীতের কত স্মৃতি রোমন্থন করেছি আমরা। রাফীও মাঝেমধ্যে আমাদের সঙ্গে শামিল হয়েছেন।

আপনি বলেছেন, ‘মায়া’তে নতুন ইমনের জন্ম হয়েছে। অন্য নির্মাতারা আগে আপনাকে এভাবে হাজির করতে পারেনি কেন বলে মনে করেন?

আমাকে সবাই ‘গ্ল্যামার বয়’ হিসেবে দেখাতে চেয়েছেন। তবে রাফী সব সময় বলতেন, আমি রাহাতকে (আমার চরিত্র) চাই, ইমনকে নয়। প্রথম দিন চুল ছোট করে রাফীর সামনে গেলে তিনি বললেন, ‘একি! আপনাকে তো হ্যান্ডসাম লাগছে। আমি তো সেটা চাই না।’ পরদিন আবার নতুন স্টাইলে চুল কেটে গেলাম। বললেন, ‘আপনাকে তো মুম্বাইয়ের হিরোদের মতো লাগছে। আমি তো রাহাতকে চাই, মুম্বাইয়ের হিরো নয়!’ প্রথম প্রথম একটু খারাপ লেগেছিল। মনে হয়েছিল, আরে বাবা! আমি তো মালেক আফসারী থেকে শুরু করে ইস্পাহানি আরিফ জাহানের সঙ্গে কাজ করেছি। তাঁরা কেউ তো এমন করেননি। ভাবলাম, রাফী এই সময়ের জনপ্রিয় পরিচালক। থাক, একটু মেনেই নিই। তবে আমার সব অভিমান ধুলায় মিশে গিয়েছিল শুটিং স্পটে গিয়ে। সত্যি বলতে, কাজের প্রতি এত ডেডিকেশন আমি আর কোনো নির্মাতার মাঝে পাইনি। একটা শট নেওয়ার আগে অন্তত দশবার ভাবেন। একটা সংলাপ দু-তিনভাবে ধারণ করেন। তারপর সম্পাদনার সময় যেটা ভালো লাগে সেটা রাখেন। আমি স্বীকার করছি, রাফী এই সময়ের সেরা নির্মাতা। আমার যে লুক, যে অভিনয় তিনি বের করে নিয়েছেন, সেটা আর কেউ পারেননি।

এখন থেকে ওটিটিতে আপনাকে নিয়মিত পাওয়া যাবে?

ইচ্ছা তো আছে, তবে আমাদের দেশে ওটিটি প্ল্যাটফরমগুলো সিনেমার মানুষদের নিয়ে কাজ করতে চায় কম। আমার বেলায়ও সেটা হতে পারে। দেখুন, চলচ্চিত্র থেকে যারাই ওটিটিতে কাজ করেছে সবাই মাত করেছে। শবনম বুবলী, সিয়াম আহমেদের কাজগুলো কিন্তু দর্শক গ্রহণ করেছে। তার পরও এখন তাঁদের ওটিটিতে দেখা যাচ্ছে না। প্ল্যাটফরমগুলোর ভেদাভেদ কাটিয়ে উঠতে হবে। ছোট পর্দার পাশাপাশি বড় পর্দার তারকাদের নিয়ে কাজ করতে হবে নিয়মিত। তাহলে দর্শকের কাছে গ্রহণযোগ্যতাও বাড়বে।

দুই বছর ধরে আপনাকে নতুন ছবির খবরে পাওয়া যাচ্ছে না…

সময়টা আসলে সিনেমার পক্ষে নেই। আমি কেন? অন্যদের দিকেও তাকিয়ে দেখুন, গত দুই বছরে কার কাজ ছিল? আগামী মাস থেকে নতুন একটা ছবির শুটিং শুরু করব। হাতে আরো দুটো ছবির প্রস্তাব আছে। আশা করছি, এই বছর থেকেই আমার ব্যস্ততা আবার বেড়ে যাবে। ওহ! ‘কানামাছি’ ও ‘নলিয়া ছড়ির সোনার পাহাড়’ ছবি দুটি কিন্তু মুক্তির জন্য প্রস্তুত আছে।

‘পাসওয়ার্ড’ ছবির পর থেকে শাকিব খানের সঙ্গে আপনার দারুণ সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। রিম্যার্ক ও হারল্যানেও দুজন একসঙ্গে কাজ করছেন। আপনাদের মধ্যে কোনো চুক্তি আছে নাকি!

(হা হা হা) না। শাকিব খানকে আমি শ্রদ্ধা করি, তিনি আমাকে স্নেহ করেন—এটাই আমাদের চুক্তি। আসলে শাকিব ভাই যেমন রিম্যার্ক ও হারল্যানের প্রতিনিধি, আমিও তেমন। যার কারণে বিভিন্ন ইভেন্টে আমাদের একসঙ্গে দেখা হয়। তা ছাড়া ব্যক্তি শাকিবকে আমি খুব পছন্দ করি। দেশের শীর্ষ তারকা হয়েও তাঁর বিনয়কে আমি সম্মান করি। প্রতিটি উৎসবে, সুখে-দুঃখে তিনি খবর নেন। এটাই বড় পাওয়া।

LEAVE A REPLY