ক্ষুধা মেটাতে বন্যপ্রাণী মেরে খাবে আফ্রিকার দুই দেশ

আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চলে খরার কারণে চরমে পৌঁছে গেছে খাদ্যসংকট। খাদ্যের অভাবে খালি পেটে দিন কাটাতে হচ্ছে অসংখ্য মানুষের। ফলে ক্ষুধা থেকে বাঁচতে এবং মানুষের বেঁচে থাকার লড়াই নিশ্চিত করতে শতশত বন্যপ্রাণী জবাইয়ের ঘোষণা দিয়েছে আফ্রিকার দুই দেশ।

শনিবার সিএনএনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে আসে। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, দক্ষিণ আফ্রিকার দুই দেশ নামিবিয়া এবং জিম্বাবুয়ে জনগণের ক্ষুধা মেটাতে বন্য প্রাণীদের হত্যার নির্দেশ দিয়েছে।

চলতি বছরের আগস্টে নামিবিয়া জানায়, তারা ৭২৪টি প্রাণী জবাই করতে যাচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে ৮৩টি হাতি, ৩০টি জলহস্তি ও ৩০০ জেব্রা। এরপরের মাসে জিম্বাবুয়ে দুইশ হাতি জবাইয়ের অনুমোদন দেয়।

দুই দেশের সরকারই জানিয়েছে, এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে একশ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভায়াবহ খরার প্রভাব কমানো যাবে। এতে একদিকে যেমন ভূমি ও পানির ওপর চাপ কমবে তেমনি লোকালয়ে বন্যপ্রাণীর হামলাও কমবে। তবে দেশ দুটির এমন সিদ্ধান্তের কারণে বিতর্ক শুরু হয়েছে। পরিবেশবাদীরা এই সিদ্ধান্তকে নিষ্ঠুর বলে আখ্যা দিয়েছে।

মূলত তীব্র খরার কারণে আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চলে মারাত্মকভাবে খাদ্যের অভাব দেখা দিয়েছে। নষ্ট হচ্ছে খাদ্যশস্য, মারা যাচ্ছে পশু। সেখানের প্রায় ৭০ মিলিয়ন মানুষের জন্য খাদ্য দরকার। চলতি বছরের এপ্রিলে জাতীয় দুর্যোগ ঘোষণা করে জিম্বাবুয়ে। এরপর মে মাসে একই ধরনের ঘোষণা দেয় নামিবিয়া। খরার কারণে দেশ দুটির প্রায় অর্ধেক মানুষ খাদ্য অনিরাপত্তার মুখোমুখি। বেশিরভাগ প্রাণিগুলোকে সাইলেন্সারের সাহায্যে রাতে গুলি করা হবে- এমনটাই জানিয়েছে নামিবিয়ান চেম্বার অব এনভায়রনমেন্টের একজন পরিবেশ বিজ্ঞানী ক্রিস ব্রাউন।

তবে এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে পরিবেশবিদরা। প্রাকৃতিক সম্পদ শাসন কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ফারাই মাগুউ এমন কার্যকলাপের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, যখন লাখ লাখ মানুষের খাদ্যের প্রয়োজন হয় তখন এটি একটি ‘ভুয়া সমাধান’।

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা অনেকেই প্রথমবার শুনছি যে হাতির মাংস খাওয়া যায় এবং দরিদ্র পরিবারগুলো এই মাংস খাওয়ার আশা করা নিতান্তই অপমানজনক।’

এছাড়াও সাউথ আফ্রিকার সামাজিক ন্যায়বিচার সংস্থা ইএমএস ফাউন্ডেশনের একজন সিনিয়র গবেষক মেগান কার বলেছেন, ক্ষুধা নিবারণের জন্য এই পন্থাটি সবচেয়ে স্বল্পমেয়াদি উপায় ছাড়া আর কিছুই করবে না। এরপর সরকারের সমালোচনা করে তিনি আরও বলেন, এমন ঘোষণা ‘বিপথগামী এবং নিষ্ঠুর’।

LEAVE A REPLY