আমি রাজনীতির মানুষ নই : নুসরাত ফারিয়া

নুসরাত ফারিয়া

ঢাকাই সিনেমার নায়িকা নুসরাত ফারিয়া। দেশের পাশাপাশি কাজ করেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গেও। অভিনয় ও গান দুটিই সমান তালে চলে তার। তবে অনেক দিন ধরে নতুন কোনো ছবিতে অভিনয়ের খবরে নেই ঢালিউডের এই নায়িকার।

১০ জুলাই শো করতে কানাডা গিয়েছিলেন নুসরাত ফারিয়া। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর আর কোনো খবরে ছিলেন না তিনি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অভিনেত্রীর উপস্থিতি টের পাওয়া গেলেও গণমাধ্যমের মুখোমুখি হননি। গতকাল হঠাৎ ধরা দিলেন মুঠোফোনে।

তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন সুদীপ কুমার দীপ।

আপনাকে তো পাওয়াই যাচ্ছে না। দেশে ফিরলেন কবে?

আমি তো শিডিউল অনুযায়ীই দেশে ফিরেছি। ১০ জুলাই কানাডা যাওয়ার আগেই জানিয়েছিলাম দেড় মাস থাকব।

সেখানে টরন্টোতে দুটি এবং মন্ট্রিয়লে একটি শো করব। সেটাই করেছি, শোগুলো করে ১৭ আগস্ট দেশে ফিরেছি। হয়তো মিডিয়া জানে না আমি দেশে, তবে আমার কাছের মানুষজন ঠিকই জানে আমার খবর।

মিডিয়া থেকে দূরে ছিলেন কেন?

কাজের বাইরে আমি সব সময় নিজের পরিবারকে সময় দিই। গত কয়েক মাস তো কোনো শুটিং নেই, নতুন কাজেরও খবর নেই।

এর মধ্যে আমার বাবা আবার অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তাঁকে নিয়ে হাসপাতালে আসা-যাওয়ার মধ্যে থাকতে হয়েছিল। এখন তিনি আগের চেয়ে সুস্থ। আমিও কিছুটা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছি। এই যে ফোন করলেন, সুযোগ পেয়েছি বলেই কথা বলতে পারছি।

দেশের পটপরিবর্তনের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপনাকে নিয়ে ট্রল হয়েছে অনেক। দেখেছেন নিশ্চয়ই?

চোখে তো পড়েছে, খারাপও লেগেছে। তবে কাকে কী বলব! আমার ক্যারিয়ার ১২ বছরের। ক্যারিয়ার শুরুর পর থেকেই আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতায় দেখেছি। তারা যখন যে ধরনের কাজে ডেকেছে সাড়া দিয়েছি। আসলে আমি তো এখানে টাইম পাসের জন্য আসিনি। এটা রুটি-রুজির জায়গা। কাজের প্রস্তাব এলে করব, এটাই তো নিয়ম। এখন কেউ যদি আমাকে আওয়ামী সমর্থক ভেবে দূরে ঠেলে দেন, কী করতে পারি? আমরা শিল্পী, আমাদের কাজ মানুষকে বিনোদন দেওয়া। সেটাই করে গেছি। কখনো কারো অন্ধ সমর্থক ছিলাম না। যদি সেটা করতাম, মনে সামান্যতম সংকীর্ণতা থাকত, দেশেই আসতাম না। এখন যদি নতুন সরকার তাদের কাজে আমাকে ডাকে, অবশ্যই সাড়া দেব। ওই যে বললাম, শিল্পীদের কাজ দলাদলি করা নয়, নিজের অভিনয়শৈলী দিয়ে দর্শক মনে জায়গা করে নেওয়া।

এই পটপরিবর্তনকে কিভাবে দেখছেন?

আমি রাজনীতির মানুষ নই। বিচক্ষণতার সঙ্গে তাই বলতেও পারব না। দেশের ছাত্র-জনতা চেয়েছিল বলেই তো পরিবর্তনটা এসেছে। একজন নাগরিক হিসেবে চাইব, যেটা হয়েছে সেটা যেন মঙ্গলের জন্য হয়। আমার বিশ্বাস, মানুষের মৌলিক চাহিদাগুলোর পাশাপাশি বিনোদনও যেন হারানো গৌরব ফিরে পায়, সেদিকে খেয়াল রাখবে বর্তমান সরকার।

প্রায় তিন মাস হলো আপনি শুটিং ফ্লোরে নেই। লাইট-ক্যামেরা-অ্যাকশন মিস করছেন না?

অবশ্যই মিস করছি। ক্যারিয়ার শুরুর পর এত দীর্ঘ সময় শুটিং ফ্লোরের বাইরে থাকিনি। দেশে যখনই কিছু হয় সবার আগে প্রতিক্রিয়াটা পড়ে বিনোদন অঙ্গনের ওপর। আমাদের মতো অভিনেতা-অভিনেত্রীদের কথা বাদই দিলাম; যারা লাইট, ক্যামেরা, প্রডাকশনে কাজ করে কিংবা যারা দিন চুক্তিতে কাজ করে তাদের কথা ভাবুন। তারা কেউ ভালো আছে বলে মনে হয় না। বর্তমান সরকারের এদিকটায় নজর দেওয়া উচিত। সাধারণ শিল্পী-কলাকুশলীদের জন্য ভাতার ব্যবস্থা করলে অন্তত পরিবার নিয়ে তারা বেঁচে থাকতে পারবে।

কানাডা থেকে ফিরে নিজের গানের শুটিং শুরু করতে চেয়েছিলেন…?

চাইলেই তো ছোটখাটো মিউজিক ভিডিও যখন-তখন নির্মাণ করা যায়। তবে আমার আগের মিউজিক ভিডিওগুলোর ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে চাই। সে জন্যই অপেক্ষা। আমার মিউজিক ভিডিওর কলাকুশলীদের অনেকে ভারতের। কলকাতায় এখনো আরজি কর কাণ্ডের সুরাহা হয়নি। ফলে ভিসা পেতে জটিলতা হচ্ছে। আমারও অপেক্ষা করা ছাড়া উপায় নেই।

দুই দিন আগে নির্মাতা রায়হান রাফীর সঙ্গে আপনাকে দেখা গেছে। তাঁর কোনো প্রজেক্টে যুক্ত হচ্ছেন নাকি?

আরে না! একসঙ্গে দেখা গেলেই কি কাজ করতে হবে? আমরা ভালো বন্ধু। অবসর পেলে গান-আড্ডায় মাতি। একে অন্যের কাজ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা করি। এর বাইরে আর কিছু নয়।

LEAVE A REPLY