তরুণদের সামর্থ্য আগ্রহী করেছে সিমন্সকে

ফিল সিমন্স।

সংবাদ সম্মেলন কক্ষে ঢুকতেই যেন চক্ষু চড়কগাছ ফিল সিমন্সের! বাংলাদেশ দলের প্রধান কোচ হিসেবে এই ওয়েস্ট ইন্ডিয়ানের প্রধান সম্মেলন ছিল গতকাল। তাতে সংবাদকর্মীদের ভিড় দেখে বিসিবির মিডিয়া ম্যানেজার রাবীদ ইমামকে দিয়ে ফোনে একটা ছবি তুলিয়ে রাখলেন। এরপর জানালেন বাংলাদেশ দল নিয়ে নিজের ভাবনা…

 প্রশ্ন : বাংলাদেশ ক্রিকেটের নাটকীয় এক সময়ে আপনি কোচ হয়ে এলেন। কেমন লাগছে? 

ফিল সিমন্স : সবচেয়ে ভালো ব্যাপার হচ্ছে, আমরা গুরুত্বপূর্ণ একটি টেস্ট ম্যাচের প্রস্তুতি নিচ্ছি।

যদি আমরা সামনের কয়েকটি টেস্ট জিততে পারি, তাহলে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের দৌড়ে থাকতে পারব। আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার হচ্ছে ক্রিকেট এবং সোমবার থেকে শুরু হতে যাওয়া টেস্টের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া। গত দুইটা দিন খুবই ভালো ছিল। ক্রিকেটের বাইরের ব্যাপারগুলো থেকে আমরা মনোযোগ সরিয়ে রাখতে চাচ্ছি এবং সোমবারের জন্য প্রস্তুত হচ্ছি।

প্রশ্ন : এর আগে আপনি কয়েকটি আন্তর্জাতিক দলের সঙ্গে কাজ করেছেন। সেই অভিজ্ঞতা কিভাবে কাজে লাগাতে চান?

সিমন্স : সব অভিজ্ঞতাই আমাকে ছেলেদের সোমবারের জন্য তৈরি করতে সাহায্য করবে। আফগানিস্তান আমাকে ভাষা জটিলতার চ্যালেঞ্জ সামলে কাজ করা শিখিয়েছে। আয়ারল্যান্ডে কাজ করে বুঝেছি কিভাবে তরুণদের গড়ে তুলতে হয়।

সব কিছুই এখানে কাজে দেবে।

প্রশ্ন : বাংলাদেশের কোচ হয়ে আসার পেছনের গল্পটা কেমন ছিল?

সিমন্স : আমি আগ্রহী হয়েছি তরুণ খেলোয়াড়ের সামর্থ্য দেখে। ওরা পাকিস্তানে নিজেদের দারুণভাবে প্রমাণ করেছে। ভারতে টি-টোয়েন্টিতে ওরা ভালো খেলেনি। কিন্তু দেখতে হবে ওরা টি-টোয়েন্টির সেরা দলের বিপক্ষে খেলেছে।

আপনার তাই সেখান থেকে অনেক কিছু শেখার আছে। এই সব কিছুই আমার কাজের মধ্যে যুক্ত, যেটা আমি উপভোগ করি। প্রথমত, আমি তরুণদের গড়ে তুলতে চাই। পাশাপাশি এখানে টেস্ট ও ওয়ানডে সংস্করণে কাজ করার সুযোগও আছে। সব মিলিয়ে আমার এখানে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া কঠিন ছিল না।

প্রশ্ন : সাকিব আল হাসানসহ আরো অনেক ঘটনাপ্রবাহ থেকে দূরে থাকা ক্রিকেটারদের জন্য সহজ ব্যাপার নয়। এ ক্ষেত্রে তাঁদের প্রতি আপনার কী বার্তা থাকবে?

সিমন্স : ক্রিকেটে মনোযোগ ধরে রাখাই আগামী কয়েক দিন আমাদের সবচেয়ে বড় কাজ হবে। সোমবারের জন্য কিভাবে প্রস্তুত আমরা শুধু এটাই নিয়ন্ত্রণ করতে পারি।

প্রশ্ন : ক্রিকেটে বাংলাদেশ এখনো উন্নতির দিকে। এ ধরনের দেশের কোচ হিসেবে কাজ করা কতটা কঠিন?

সিমন্স : কতটা কঠিন সেটা তো দুই দিনের ভেতর বলা সম্ভব না (হাসি)। তরুণ ক্রিকেটাররা নিজেদের সামর্থ্যের প্রমাণ এই সেদিনও দিয়েছে। পাকিস্তান থেকে জিতে আসা সহজ ব্যাপার নয়। তরুণ ক্রিকেটারদের নিয়ে এগিয়ে যাওয়া কঠিন কাজ। তবে তাদের সঙ্গে কথা বলে আমি যেটা বুঝেছি, তারা কিছু অর্জন করতে চায়।

প্রশ্ন : বিদেশি কোচদের জন্য বাংলাদেশ দলের কোচের পদ সব সময় নড়বড়ে। অনিশ্চিত এই দায়িত্ব আপনি কিভাবে দেখছেন?

সিমন্স : সব আন্তর্জাতিক কোচের চাকরিই চাপের। বাংলাদেশে এক রকম, পাকিস্তানে অন্য রকম। আমার দায়িত্ব হচ্ছে, ক্রিকেটারদের খেলতে দেওয়া, তাদের উপভোগের মঞ্চ তৈরি করে দেওয়া এবং ম্যাচ জেতা। আসনটা চাপের নয়। গত দুই দিন বেশ উপভোগ্যই ছিল।

প্রশ্ন : আপাতত ছয় মাসেরও কম সময়ের জন্য আপনার সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। এই সময়ের ভেতর বাংলাদেশ দলকে নিয়ে আপনার কী লক্ষ্য থাকবে?

সিমন্স : আমার লক্ষ্য থাকবে ভালোভাবে দলকে প্রস্তুত করা এবং ম্যাচ জেতার চেষ্টা করা। আমি এভাবেই কাজ করি। যার শুরুটা হচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম টেস্ট দিয়ে।

প্রশ্ন : বোর্ডের পক্ষ থেকে আপনি প্রথম কখন কোচ হওয়ার প্রস্তাব পান?

সিমন্স : আজকে (গতকাল) তো শনিবার? তাহলে মনে হয় এক সপ্তাহ আগে।

প্রশ্ন : অধিনায়কের সঙ্গে কী নিয়ে কথা হয়েছে?

সিমন্স : দলের অন্য ক্রিকেটারদের নিয়ে অধিনায়কের ভাবনা ও দলকে সে কিভাবে পরিচালিত করতে চায় তা শুনেছি। সময়ের সঙ্গে আমরা একজন আরেকজনকে আরো বেশি জানতে পারব এবং তখন অন্য বিষয়গুলো নিয়েও আলোচনা হবে।

প্রশ্ন : আপনার কোচিংয়ের দর্শন কী?

সিমন্স : আমার দর্শন হচ্ছে, কঠোর পরিশ্রম করা, তাহলে ফল আসবে। গত দুই দিন আমি ছেলেদের মধ্যে এটা দেখেছি।

LEAVE A REPLY