মানিক-চুপ্পুর সহযোগিতায় শেখ হাসিনাকে শতকোটি টাকা লোপাটের অভিযোগ থেকে দায়মুক্তি

কেবল ক্ষমতার দাপটে নভোথিয়েটার নির্মাণ প্রকল্পে ১২০ কোটি টাকা লোপাটের অভিযোগ থেকে দায়মুক্তি পান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর এ কাজে যার যার জায়গা থেকে সব কিছু গুছিয়ে দেন দুদকের সাবেক কমিশনার সাহাবুদ্দিন চুপ্পু এবং সাবেক প্রধান বিচারপতি শামসুদ্দীন চৌধুরী মানিক। এমনকি ২০০১ সালে ক্ষমতা ছাড়ার মাত্র দুই দিন আগে কোরাম পূর্ণ না হওয়া একনেক সভায় দেওয়া হয় নভোথিয়েটার প্রকল্পের বৈধতা।

শনিবার (১৯ অক্টোবর) বেসরকারি টেলিভিশন নিউজ টুয়েন্টিফোরের এক অনুসন্ধানে এ তথ্য বেরিয়ে আসে।

জানা যায়, ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় থাকাকালে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও পরামর্শক নিয়োগের মাধ্যমে প্রায় ১২০ কোটি টাকা লোপাটের খবর পায় ওই সময়ের দুর্নীতি দমন ব্যুরো। এরপর ২০০১ সালে ক্ষমতা ছাড়ার ঠিক দুই দিন আগে ১৩ সদস্যের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের অনুপস্থিতিতে মাত্র ছয় সদস্যের উপস্থিতিতে নিয়ম লঙ্ঘন করে এই প্রকল্পের বৈধতা দেয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। ২০০২ সালে শেখ হাসিনাসহ ছয় মন্ত্রী ও সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় পৃথক তিনটি মামলা করা হয়। অন্য আমামিদের ছিলেন, শাহ এ এম এস কিবরিয়া, এ এস এইচ কে সাদেক, তোফায়েল আহমেদ, মতিয়া চৌধুরী ও মহীউদ্দীন খান আলমগীর।

তাদের তিনজনই এখন মৃত। 

পুরো মামলা তথ্য-প্রমাণসহ জমা দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করলে হাইকোর্টে রিট করেন শেখ হাসিন। এরপর দীর্ঘদিন তা থমকে থাকার পর ২০১০ সালে বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধরী মানিকের হাইকোর্ট বেঞ্চ অভিযোগপত্র দাখিলেন আদেশকে অবৈধ ঘোষণা করে। আদালত বলেছিলেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এ মামলা করা হয়েছে।

তা ছাড়া এতে মামলার গুণগত ভিত্তি নেই। 

দুদকের সাবেক মহাপরিচালক মঈদুল ইসলাম বলেন, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে যেসব মামলা ছিল, সেই মামলাগুলো আদালত মানে হাইকোর্ট খারিজ করে দিয়েছিলেন। এভাবে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সব মামলার নিষ্পত্তি হয়েছিল। 

এরপর ২০১৫ সালে দুদকের দায়িত্ব পালনকালে চেয়ারম্যান বদিউজ্জামান, কমিশনার সাহাবুদ্দিন চুপ্পু ও নাসির উদ্দিনের কমিশন মামলার সত্যতা না পাওয়ার অভিযোগে দায়মুক্তির শপথ নেয়। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে একই সংস্থার তদন্ত ফলাফল কেন দুই রকম হয়েছে, তা নিয়ে সমালোচনা হলেও এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে কোনো সদুত্তর মেলেনি।

দুদকের মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মনজুর মোর্শেদ বলেছেন, এটা বিচারের বিষয়। ফাইল নিয়ে সামনা-সামনি বসলে বোঝা যাবে। 

এ দিকে দুদকের সাবেক কমিশনার নাসির উদ্দিন বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। 
 

LEAVE A REPLY