শ্রীলেখা মিত্র
পশ্চিমবঙ্গের গুণী অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র। তবে তিনি এই বাংলাতেও জনপ্রিয়। কিছুদিন আগে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষানবিশ চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় টলিউডের অনেক তারকার মতো তিনিও রাস্তায় নেমেছিলেন। সেই আন্দোলনের গতি কমে এলেও থেমে যায়নি।
এমনকি যারা সে সময়ে রাস্তায় নেমেছিলেন তাদের সঙ্গে মমতা সরকারের দূরত্ব তৈরি হয়েছে সেটা স্পষ্ট। এবার সেটা জোরালো করলেন শ্রীলেখা মিত্র। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকারে তিনি জানান একের পর কাজ চলে যাচ্ছে তার। সরকার তাকে কাজে নিতে না করেছে।
শ্রীলেখা মিত্র জানান, তার সিনেমা হাতছাড়া হচ্ছে প্রায়ই। রিয়ালিটি শো থেকে বাদ পড়ে যাচ্ছেন। বিজ্ঞাপনের জন্য নির্বাচিত হয়েও শেষে আর কাজ পাচ্ছেন না। অভিযোগের তালিকা লম্বা।
অভিনেত্রী বলেন, ‘এসব বিষয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতে কিছু জানিয়েছি আর কিছু জানাইওনি। জানিয়ে লাভ নেই, তাই। তবু আবারও আমি সরব। আরজি কর-কাণ্ড নিয়ে অনেকের অনেক বক্তব্য। প্রায় রোজই কেউ কিছু না কিছু বলছেন।
আমি একটু বেশিই জোরালো প্রতিবাদ করেছি। অবশেষে তার ফল পেলাম। দুই দুইটা বিজ্ঞাপনের কাজ হাতছাড়া হয়ে গেল। ক্লায়েন্ট যোগাযোগ করেছিলেন এজেন্সির সঙ্গে। এজেন্সির যিনি প্রতিনিধি তিনি আমাকে পছন্দ করেন। চেয়েছিলেন, কাজটা আমিই করি। কিন্তু তারও তো কোথাও বাধা রয়েছে।’
শ্রীলেখা বলেন, “বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত জানতে চাইলে এজেন্সির বলেছিল, ‘দিদি, আরজি কর-কাণ্ডে তোমার বক্তব্য তাদের বিরুদ্ধে গিয়েছে। তুমি সরকারের বিরোধিতা করেছ। তোমাকে দিয়ে কাজ না করানোর নির্দেশ এসেছে।’ এই বিষয়টা শুনে অভাব হয়েছিলাম প্রথমে কিছুটা। আমি এই দুটো কাজ থেকেই ভালো অঙ্কের পারিশ্রমিক পেতাম। এখন আমি আর এই ধরনের ঘটনায় বিচলিত হই না। কখনোই মধু মাখিয়ে কথা বলতে পারি না। বাকিরা যতটা না মনের গভীর থেকে মৃত চিকিৎসকের জন্য ন্যায়বিচার চেয়েছেন, আমার চাওয়া ছিল আরও গভীর। আমার বক্তব্য ছিল পুলিশমন্ত্রী, স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে। বাংলায় এই দুই পদেই মুখ্যমন্ত্রী আসীন। তাহলে কাকে বলব? মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধেই মুখ খুলতে হবে। সেটাই করেছি।”
চলমান পরিস্থিতি আর নিজের কাজ চালিয়ে নেওয়া প্রসঙ্গে শ্রীলেখা বলেন, “একইভাবে যতটা সম্ভব সৎ থেকে কাজ করা যায়, ততটাই সৎ আমি। একমাত্র দেয়ালে পিঠ ঠেকে না গেলে মিথ্যা কথা বলি না। বললেও এমন মিথ্যা বলি না যা অপরের ক্ষতি করবে। বরাবর নিজের কাজ নিজেই জোগাড় করে এসেছি। কোনো দিন তথাকথিত ‘সুগার ড্যাডি’ নেই। ভালোবাসার মানুষজনেরও বড়ই অভাব। সব মিলিয়ে নিজেই নিজের হর্তা-কর্তা-বিধাতা। ফলে, যা-ই ঘটুক ঠিক চালিয়ে নেব।”