মিথ্যা প্রচার শেষ পর্যন্ত পরাজিত হবে’—কবীর সুমন

কবীর সুমন। ছবি : সংগৃহীত

দুই বাংলাতেই জনপ্রিয় গায়ক কবীর সুমন। কিছুদিন আগেও বাংলাদেশ ঘুরে গেছেন। শ্রোতাদের শুনিয়ে গেছেন গান। এদিকে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক খানিকটা বৈরী।

ভারতের গণমাধ্যম নানা ধরনের গুজব প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করছে। কিছুদিন আগেও বাংলাদেশে সংখ্যালঘু ‘নির্যাতন’ হচ্ছে বলে সংবাদ প্রকাশ করা হয়। ফলে পশ্চিমবঙ্গসহ ভারতের বিভিন্ন জায়গায় প্রতিবাদ করা হচ্ছে। এর মাঝেই সোমবার হঠাৎই আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা, ভাঙচুর ও পতাকা নামিয়ে ছিঁড়ে ফেলার ঘটনা ঘটে।

এতে আরো উত্তেজনা তৈরি হয় দুই দেশের মধ্যে।

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু ইস্যুতে ভারতের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের গীতিকার এবং সংগীতশিল্পী কবীর সুমন। কিছুদিন আগে পতাকা অবমাননা নিয়ে ফেলানী হত্যার প্রসঙ্গ টেনে কবীর সুমন প্রশ্ন তুলেছেন, ‘সীমান্তের কাঁটাতার-বেড়া থেকে ফেলানী যখন ঝুলছিলেন, কিসের কার অবমাননা হচ্ছিল তখন?’

শনিবার (৭ ডিসেম্বর) নিজের ফেসবুক পোস্টে কবীর সুমন লেখেন, ‘আমি হিন্দু পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছি। কিন্তু আমি মানুষ হতে চাই।

মুসলমানরা আমার ও আমার পরিবারের ওপরে অত্যাচার করেনি জেঠু। আমার প্রণাম নেবেন। কথাগুলো একটু আগে আমায় লিখে জানিয়েছেন আমার স্নেহভাজন এক নবীন বাংলাদেশি বন্ধু।’

তিনি লেখেন, ‘তার নাম আমি প্রকাশ করছি না। মাঝে মাঝে তিনি কলকাতায় এসে আমার সঙ্গে দেখা করে যান।

তার পরিচয় জানলে আমার দেশে তার কপালে কী জুটবে কে জানে।’

বাংলাদেশের মুসলমান আর হিন্দুদের সম্পর্কে মিথ্যে কথা প্রচার হচ্ছে উল্লেখ করে কবীর সুমন বলেন, ‘মিথ্যা প্রচার শেষ পর্যন্ত পরাজিত হবে। ভারত থেকে যারা বাংলাদেশের মুসলমান আর হিন্দুদের সম্পর্কে মিথ্যে কথা প্রচার করে চলেছে তারা জেনে রাখুক মিথ্যে প্রচারে শেষ পর্যন্ত কোনো কাজই হয় না, পশ্চিমবঙ্গের সন্দেশখালী এবং আরজি কর নিয়ে অকথ্য অনর্গল মিথ্যে প্রচার যেমন প্রচারকদের কোনো সুবিধেই ডেকে আনেনি।’ কবীর সুমন লেখা শেষ করেন এভাবে, ‘জয় ভালোবাসা! কবীর’।

প্রসঙ্গত, কবীর সুমন একজন ভারতীয় বাঙালি গায়ক, গীতিকার, অভিনেতা, বেতার সাংবাদিক, গদ্যকার ও সাবেক সংসদ সদস্য। তার পূর্বনাম সুমন চট্টোপাধ্যায়। ২০০০ সালে ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত হয়ে তিনি তার পুরনো নাম পরিত্যাগ করেন। কবীর সুমন একজন বিশিষ্ট আধুনিক ও রবীন্দ্রসংগীত গায়ক। ১৯৯২ সালে তার ‘তোমাকে চাই অ্যালবাম’-এর মাধ্যমে তিনি বাংলা গানে এক নতুন ধারার প্রবর্তন করেন।

তার স্বরচিত গানের অ্যালবামের সংখ্যা বিশের ওপরে। সংগীত রচনা, সুরারোপ, সংগীতায়োজন ও কণ্ঠদানের পাশাপাশি গদ্য রচনা ও অভিনয় ক্ষেত্রেও তিনি স্বকীয় প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন। তিনি একাধিক প্রবন্ধ, উপন্যাস ও ছোটোগল্পের রচয়িতা এবং হারবার্ট ও চতুরঙ্গ প্রভৃতি মননশীল ছবিতে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রের রূপদানকারী।

LEAVE A REPLY