জাহাজে সাত খুন : ৪ দাবিতে পণ্যবাহী নৌযান চলাচল বন্ধ

সংগৃহীত ছবি

চাঁদপুরের মেঘনায় জাহাজে সাত খুনের প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন, বিচারসহ বিভিন্ন দাবিতে গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১২টার পর থেকে নৌযান শ্রমিকরা অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতিতে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি মো. শাহ আলম।

তিনি বলেন, ‘বাগেরহাটের মূলঘর পূর্ব ইউনিয়নের জগদীশ মণ্ডলের ছেলে আকাশ মণ্ডল সার বোঝাই পণ্যবাহী এমভি আল বাখেরা জাহাজের আটজন স্টাফকে ঠাণ্ডা মাথায় যেভাবে কুপিয়েছেন এবং বিশাল একটি জাহাজ একাই চালিয়েছেন বলা হচ্ছে, এতে মনে হয় এটা তার একার কাজ হতে পারে না। আমরা এই ঘটনার প্রকৃত রহস্য এবং এর সঙ্গে অন্য কারা ছিল সেটা সরকারের প্রশাসনের সঠিক তদন্ত দাবি করছি।

এ ছাড়া আমাদের সারা দেশে ১০ হাজার ছোট পণ্যবাহী নৌযান ও লক্ষাধিক শ্রমিকের নিরাপত্তা দাবি করছি। যাঁরা ওই জাহাজে হতাহতের শিকার হয়েছেন, সরকারের পক্ষ থেকে জনপ্রতি ২০ লাখ টাকা করে ক্ষতি পূরণও দাবি করছি।’ এই দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত এই কর্মবিরতিসহ পণ্যবাহী নৌযান ধর্মঘট অব্যাহত থাকবে বলেও জানান শাহ আলম।

এর আগে বৃহস্পতিবার ফেডারেশন এক বিবৃতিতে জানায়, মেঘনা নদীতে এম ভি আল-বাখেরা জাহাজে সন্ত্রাসী কায়দায় নির্মম হত্যাকাণ্ডে মাস্টারসহ সাত শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনার প্রকৃত কারণ উদঘাটন; হত্যাকারীদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তার; মৃত শ্রমিকদের প্রত্যেকের পরিবারের জন্য সরকারিভাবে ২০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ ঘোষণা এবং নৌপথে সন্ত্রাস-চাঁদাবাজি-ডাকাতি বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি।

এসব দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত পণ্যবাহী সব নৌযান চলাচল বন্ধ থাকবে, শ্রমিকরা কর্মবিরতি পালন করবেন।

এদিকে চাঁদপুরে গ্রেপ্তার হওয়া আকাশ মণ্ডল নৌ পুলিশের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়ার পর নানা তথ্য বের করার চেষ্টা অব্যাহত আছে বলে জানান চাঁদপুর নৌ পুলিশের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার ইমতিয়াজ আহমেদ।

তিনি বলেন, এক বছর আগে আকাশ মণ্ডল মুসলিম ধর্ম গ্রহণ করেন। আট মাস আগে তিনি ওই জাহজে সুকানির চাকরি নেন খুনের শিকার জাহাজ মাস্টার গোলাম কিবরিয়ার মাধ্যমে।

জাহাজের মালিক মাহবুব মোরশেদ বলেন, ‘আমরা ওই জাহাজে গোলাম কিবরিয়া ও ইঞ্জিনচালক সালাউদ্দিন মোল্লাকে চাকরি দিই। বাকিরা সবাই গোলাম কিবরিয়ার মাধ্যমে ওই জাহাজে চাকরি নেয়।’

এদিকে এ ঘটনার পর চাঁদপুর নৌ রুটে সব ধরনের নৌযান নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে বলে স্থানীয় সাধারণ চলাচলকারী লঞ্চযাত্রী ও নৌযান শ্রমিকরা দাবি করছে। এ বিষয়ে চাঁদপুর নৌ পুলিশ সুপার সৈয়দ মোশফিকুর রহমান বলেন, ‘সাতজনকে হত্যার ঘটনা ব্যক্তিগত আক্রোশের ছিল। নদীতে কোনো ধরনের নৌযান নিরাপত্তাহীনতায় নেই।

LEAVE A REPLY