নতুন বছরেও দ্যুতি ছড়াবেন যারা

নিদ্রা দে নেহা-প্রান্তর দস্তিদার, দেবশ্রী অন্তরা ও আসিফ ইসলাম

বিদায় ২০২৪, স্বাগত ২০২৫ সাল। গত বছর ছিল শোবিজ অঙ্গনের জন্য ঘটনাবহুল। সেই সঙ্গে রীতিমতো হতাশ করার বছরও। সিনেমা হোক আর নাটক কিংবা গান, সাফল্য ছিল হাতেগোনা।

তবে এই খরার মাঝেই অভিনয়, নির্মাণ ও সংগীতে গত বছর নজর কেড়েছেন কিছু প্রতিভাবান শিল্পী। নির্দ্বিধায় বলা যায়, এ বছরেও সৌরভ ছড়াবেন তাঁরা। জানুন এমন কয়েকজনের কথা।

নিদ্রা দে নেহা-প্রান্তর দস্তিদার

দুজনকে একই ব্রাকেটে বন্দি করার কারণ, বাস্তবজীবনে তাঁরা সম্পর্কের বাঁধনে বাঁধা পড়েছেন।

অর্থাৎ স্বামী-স্ত্রী। দুই বছর আগে গৌতম কৈরীর ওয়েব ছবি ‘আন্তঃনগর’-এ দুজনের অভিনয়ে অভিষেক। সেই ‘আন্তঃনগর’-এর জংশনে দুজন মন হারিয়ে ফেললেন। শুটিংয়ের তিন মাসের মাথায় তাঁরা বসেন বিয়ের পিঁড়িতে।

গত বছর দুজন চুটিয়ে কাজ করেছেন শোবিজে।

প্রথমে আসি প্রান্তরের কাছে। অভিনয়ে আসার আগে তিনি ছিলেন ক্যামেরার পেছনের মানুষ। একটি বিজ্ঞাপনী সংস্থার জুনিয়র প্রডিউসার ছিলেন। ‘আন্তঃনগর’ দিয়ে যে যাত্রা শুরু করেছেন সেটা তাঁকে এই অঙ্গনে সাফল্যের পথটা দেখিয়ে দিল।

করেছেন ভিকি জাহেদের ‘তিথিডোর’। করেছেন ‘নতুন প্রেমের গল্প’, ‘তোমায় আমায় মিলে’সহ বেশ কিছু নাটক। বঙ্গ অরিজিনালস ‘ইন আ সিচুয়েশনশিপ’-এও ছিলেন। গত বছরের শেষ ভাগে দেখালেন বড় চমকটা। মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর ছবি ‘৮৪০’তে করেছেন ছোট্ট; কিন্তু দারুণ একটি চরিত্র।

লাইফ সাপোর্টে চিত্রনায়িকা অঞ্জনা

নিদ্রা শুরু করেছেন ‘মিস ইউনিভার্স ২০২০’-এর প্রতিযোগী হয়ে। এরপর মডেলিং নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন। ‘আন্তঃনগর’ তাঁকে অভিনয়ে আনল। গত বছর মুক্তি পেয়েছে কুসুম সিকদারের ‘শরতের জবা’। এ ছবিতে গুরুত্বপূর্ণ একটি চরিত্র করেছেন। ওয়েবে করেছেন ‘আধুনিক বাংলা হোটেল’। মুক্তির অপেক্ষায় আছে তাঁর দুই ছবি—পিকলু চৌধুরীর ‘দাওয়াল’ ও ফাখরুল আরেফীন খানের ‘নীল জোছনা’।

কারিনা কায়সার

বাবা বিখ্যাত ফুটবলার কায়সার হামিদ। মেয়েও কম যান না, কনটেন্ট ক্রিয়েটর হিসেবে আগেই জনপ্রিয়তা পেয়েছেন। দুই বছর আগে এলেন শোবিজে, চিত্রনাট্যকার হয়ে। রেজাউর রহমানের সিরিজ ‘ইন্টার্নশিপ’-এর চিত্রনাট্যকার হলেও পরিচালকের ছবি ‘৩৬ ২৪ ৩৬’-এ হলেন অভিনেত্রী। এবং প্রথম দানেই বাজিমাত! কমিক টাইমিংয়ে তাঁর জুড়ি মেলা ভার। শুধু তা-ই নয়, আবেগী দৃশ্যেও মন কেড়েছেন দর্শকের। এ বছর তিনি আরো ভালো ভালো কনটেন্টে অভিনয় করবেন—এটাই কাম্য।

মনের মতো পাত্র পেলে নতুন বছরেই বিয়ে বাঁধনের!

নির্মাণ : আসিফ, মিশুক, শঙ্খ

আসিফ ইসলাম
আসিফ ইসলাম

আসিফ ইসলাম

২০১৮ সালে ‘পাঠশালা’ বানিয়েছিলেন ফয়সাল রদ্দির সঙ্গে যৌথভাবে। আসিফ ইসলামের প্রথম একক নির্মাণ ‘নির্বাণ’, ৪৬তম মস্কো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে ছবিটি স্পেশাল জুরি পুরস্কার পায়। ছবিটি এই বছর বাংলাদেশে মুক্তি পাবে। এরই মধ্যে নিজের পরের ছবি ‘যাত্রী’র ঘোষণা দিয়েছেন।

চোখ রাখুন তাঁদের ওপর
মিশুক মনি

মিশুক মনি

আগে টুকটাক বিজ্ঞাপনচিত্র ও একটি নাটক বানিয়েছেন। গত বছর প্রথম ছবি ‘দেয়ালের দেশ’-এ দারুণ সিনেমস্তিষ্কের জানান দিয়েছেন মিশুক। ফিল্মমেকিংয়ে পড়েছেন কানাডায়। সেটারই ছাপ রেখেছেন ‘দেয়ালের দেশ’-এ। পরের ছবি ‘কালবেলা’তেও ধারাবাহিকতা বজায় রাখবেন, এটাই আশা তাঁর কাছে।

শঙ্খ দাশগুপ্ত
শঙ্খ দাশগুপ্ত

শঙ্খ দাশগুপ্ত

ছিলেন সাংবাদিক, এলেন শোবিজে। বিজ্ঞাপনচিত্রের দুনিয়ায় কাজ করেছেন দীর্ঘদিন। নির্মাণে প্রথমে নজর কাড়লেন ওয়েব সিরিজ ‘বলি’ ও ‘গুটি’তে। গত বছরের একেবারে শেষে এলেন বড় পর্দায়, ‘প্রিয় মালতী’ মেহজাবীনকে সঙ্গী করে। প্রথম ছবিতেই নিজের মুনশিয়ানা দেখিয়েছেন শঙ্খ। এ বছরও তাঁর সেই শিল্পযাত্রা অব্যাহত থাকবে—সেটা আশা করাই যায়।

সংগীত : দেবশ্রী অন্তরা ও আলিফ

দেবশ্রী অন্তরা
দেবশ্রী অন্তরা

গানের সঙ্গে সখ্য ছোটবেলা থেকেই। রেকর্ডিং স্টুডিওতে প্রবেশ বাপ্পা মজুমদারের সঙ্গে। তবে সে গান আলোর মুখ দেখেনি। বিজ্ঞাপনচিত্রের জিঙ্গেলে কণ্ঠ দেন হরহামেশা। গেয়েছেন হাবিব ওয়াহিদের মতো গায়কের সঙ্গে। তবে মাত করেছেন গত বছরের অন্যতম জনপ্রিয় গান ‘তুমি কোন শহরের মাইয়া গো’-এ। প্রীতম হাসানের সঙ্গে গানটিতে অন্তরার অংশ শুধু চার লাইন। তাতেই বাজিমাত। গানের বাইরে টিভিতে সংবাদ পাঠ করেন অন্তরা। যদিও ‘তুফান’ ছবির গানটির পর সেভাবে কোনো গানে পাওয়া যায়নি তাঁকে। তবে নতুন বছরে সুরের ভুবনে আরো বড় ও ব্যস্ত পরিসরে অন্তরাকে পাওয়া যেতেই পারে।

গুরু প্রিন্স মাহমুদের সঙ্গে শিষ্য আলিফ আহমেদ
গুরু প্রিন্স মাহমুদের সঙ্গে শিষ্য আলিফ আহমেদ

সেভাবে গান শেখা হয়নি আলিফের। বাবার কণ্ঠে সুর আছে, সেখান থেকেই প্রথম উৎসাহ। কিন্তু যেভাবে তাঁর অভিষেক হলো, তা অনেকের জন্যই স্বপ্নের। কিংবদন্তি প্রিন্স মাহমুদের কথা, সুর ও সংগীতে আলিফ গেয়েছেন ‘বরবাদ’। সে গান ব্যবহূত হলো শাকিব খান অভিনীত ‘রাজকুমার’-এ। গানটি সাড়াও পেয়েছে বেশ। বিশেষ করে আলিফের কণ্ঠ আকৃষ্ট করেছে শ্রোতাদের। অনেকেই তাঁর গলায় খুঁজে পেয়েছেন পাকিস্তানি গায়ক আতিফ আসলামের ছায়া। যথাযথ পরিচর্যায় আলিফের কাছ থেকে দারুণ কিছু বের করে আনা সম্ভব। আর সেই সম্ভাবনার বছর হতে পারে এই ২০২৫।

LEAVE A REPLY